এরই মধ্যে আমার বান্ধবদের ক’জনকে তুমি
কায়াহীন, ছায়াহীন করেছ হেলায়,
যেন অন্ধকারাচ্ছন্ন খেলায়। এখন বারান্দায়
বসে আছি একা, বড় একা
ছড়িয়ে আবছা দৃষ্টি কিয়দ্দূরে। স্মৃতির প্যাঁচালো অলিগলি
ভেসে ওঠে- এর চোখ, ওর ঠোঁট, কারও হাত, কারও নাক,
কারও বা মাথার চুল, কিছু ছায়া-ছায়া কথা
মনে পড়ে। কেউ কি রেখেছে আস্তে হাত
আমার নিঝুম কাঁধে? কে আমাকে ব্যাকুল ডাকছে
ব্যালকনি থেকে? কার হাতে কম্পমান
কবিতার পাণ্ডুলিপি পাণ্ডুর জ্যোৎস্নায়? ফাঁকা পথে
কে একলা যাচ্ছে গেয়ে লালনের গান?
তুমি কি বাজাও ডুগডুগি অন্তরালে? সেই ধ্বনি
যে যাবে কেবল সে-ই শোনে। নাকি কোনও
কথাহীন কাহিনীর মায়ায় ভুলিয়ে
নিয়ে যাও দিকচিহ্নহীন পথে প্রত্যাবর্তনের অসম্ভবে?
একদিন আমাকেও তুমি নাস্তির আন্ধারে মুড়ে
নির্বিকার নিয়ে যাবে, কখন জানি না। কিছু হাহাকার আর
ভেজা চোখ পেছনে থাকবে পড়ে। তবে
এখনই করো না চুপিসারে আয়োজন
আমাকে হরণ করবার। আরও কিছুকাল এই
চেনা পৃথিবীতে থেকে নিজের গহনে ডুবে ডুবে
অরূপ রতন খুঁজে খুঁজে আর এই
গাছপালা, এই নদী, ফুল-পাখি, সবচেয়ে বেশি
প্রিয়জনদের মুখ বুকের ভেতর এঁকে নিতে চাই, আরও কিছু
কবিতা লেখায় মগ্ন থাকার সময় চাই হে কঠোর, নাছোড় তস্কর।