Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » অচেনা কুহেলিকা || Nivedita De

অচেনা কুহেলিকা || Nivedita De

অচেনা কুহেলিকা

রাতের আকাশে ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ জমে আছে। বাতাস একবারে নিথর। এমন একটা আবহাওয়া যেন নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। রুপোলী বিদ্যুতের আঘাতে আকাশ যেন থেকে থেকে ঝলসে উঠছে। একটু পরেই বৃষ্টি শুরু হবে মনে হয়। কাল তো অমাবস্যা,মহালয়া! দেবী পক্ষের সূচনা! পাহাড়ি শহর দার্জিলিং থেকে এর কোন আভাস পাওয়া যায় না। তবুও মহালয়া শোনা হবে না ভেবে মনটা কেমন উদাস হয়ে গেল দিয়ার।

রাতের খাবার শেষ করে ম্যলের রাস্তা ধরে হোটেল টুরিস্ট লজে ফিরছে দিয়া ও তার পরিবার।
শরীরের যেন কোন বল নেই,পা দুটো কি অসম্ভব ভারী লাগছে, আর চলতেই চাইছে না।আকাশের মতো দিয়ারও মন ভার,শরীর অবসন্ন। পরিবার অনেকটাই এগিয়ে প্রায় ম্যালের শেষ প্রান্তে, আর দিয়া গ্লেনারিজ থেকে কিছুটা এগিয়ে এসে ম্যালের ঠিক শুরুতে। ম্যলের নিয়ন আলো চাপ চাপ কুয়াশায় ম্লান হয়ে এক অদ্ভুত রহস্যময় পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। পাহাড়ি কুকুর গুলো কারণে অকারণে থেকে থেকে ডেকে উঠছে।
দিয়ার মেয়ে আর মেয়ের বাবা গল্পতে মশগুল, কোন হুঁশ নেই, অগত্যা সে একলাই হাঁটছে।
হঠাৎ ম্যালের পাশের একটা বাঁক থেকে দেখে কেউ একজন এগিয়ে আসছে দ্রুত গতিতে,একঝলক দেখেই দিয়া বুঝলো পাহাড়ি মানুষ। কিন্তু চোখের দৃষ্টি কেমন যেন তার তীক্ষ্ণ মনে হলো। ঠিক তখনই একটা গান ভেসে আসছে…।

“দিল হুম হুম করে ঘাবড়ায়ে
ঘন ধম ধম করে গরজায়ে….
ইক বুন্দ কভী পানি কি
মেরি আঁখিয়ো সে বরসায়ে”….

দিয়া চমকে গেল খুব জোর…রাত তখন ১০ টার কাটা ছুঁয়ে গেছে। পাহাড়ে রাত ১০ টা মানে গভীর রাত!চারিদিকে শুনশান, কেউ কোথাও নেই। গান টা কোথা থেকে ভেসে আসছে! তবে কি ওই লোকটার হাতে….দিয়া সেই মুহুর্তে পিছনে ফিরলো
দেখে কেউ কোথাও নেই!….এতো অল্প সময়ে কোথায় গেল মানুষ টা? হঠাৎ কেমন যেন ঘামতে লাগলো সে, নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছে মনে হলো…..চিৎকার করে বলছে… একটু দাঁ ড়া ড়া ও ও তো মা রা.. আ মি আ স ছি
….বলছে আর ছুটছে…সেদিন কোথা থেকে এত শক্তি পেল দিয়া নিজেও জানে না, সে একছুট্টে ওদের কাছে পৌঁছে গেছে।

ছোট থেকেই দিয়ার ভুতের ভয় তেমন কখনোই ছিল না। তার যত ভয় মানুষের থেকে। ছোটবেলায় খুব গল্প শুনতে ভালোবাসতো।
তার ঠাকুমা গল্পের ছলে বলতেন.. পাপ পূন্য নিজের কাছে…’তুমি যদি কারোর কখনো ক্ষতি না কর, কাউকে মনে আঘাত বা কষ্ট দিয়ে কথা না বলো ভুতের বাপের সাধ্য কি তোমার ক্ষতি করে!’
আসলে ভুতেরা কখনো কিছু করে না.. ওই ভুতরুপি মানুষই মানুষের ক্ষতি করে।”ছোট থেকেই সেই কথাগুলো দিয়ার মনে গেঁথে গিয়েছিল। তবুও সেদিন কেন এমন ভয় পেল, উত্তর খুঁজে পাই নি। রুদালি সিনেমার গান টা কতোবার সে গুনগুন করে গেয়েছে। তারপর অনেকবার ম্যালের ওই রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেছে, দিনে, সন্ধ্যায়, রাতে, আর কিছু কখনো মনে হয় নি। আসলে কিছু কিছু ঘটনার কোন ব্যখ্যা হয় না, কোন উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় না।
শুধু মনের স্মৃতিতে একটা সময়ের দাগ রেখে যায়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *