Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হু গল্প বটে || Samarpita Raha

হু গল্প বটে || Samarpita Raha

“গল্পটা হয়তো সবার চেনা,জানা।গল্প নয় গো… এ এক বাবা ও মায়ের চোখের জলের –করুণ কাহিনী।”
————————-–——————————-


হু গল্প বটে
অমিতবাবু আর রেবা বৌদি পাঁচ বছরের বিবাহিত জীবন। প্রচুর চেষ্টা করে তাদের সন্তান আর হয়না,রেবা বৌদির চোখের জল ফেলতেন । আত্মীয়েরা কোনো শুভ কর্মে বাঁজা আখ্যা দিয়ে সব কাজে দূরে সড়িয়ে রাখতেন । এই সময় ভগবান মুখ তুলে চেয়েছিলেন , অমিতবাবু ব্যাঙ্কের বড়বাবু হয়ে দিল্লিতে জয়েন করেন,কোয়াটারে বউ কে নিয়ে যান।
তারপর সন্তান অপুকে নিয়ে সুখের সাগরে ভেসে যান,অপু চাটার্ড অ্যাকাউন্টান্ট পাশ করে বিভিন্ন ফার্মে কাজ করতে থাকে। যা প্রতিটি সুখী সংসারের কাহিনী… বাবা,মা ছেলে মহানন্দে থাকে। তারপর ছেলে প্রেমে পড়ল,মেয়েটির শর্ত সে বিয়ের পর তার বাবা মার কাছেই থাকবে কারণ , তার বাবা মাকে কে দেখবে , মেয়েটি এটাও বলল তুমিও তোমার মা ,বাবার কাছে থাকবে কেননা তুমিও বাবা মায়ের এক মাত্র সন্তান।ছেলেটি বলল এক সপ্তাহ তাহলে তুমি আমাদের বাড়ি থেকো, আর পরের সপ্তাহ তোমার বাড়িতে আমি গিয়ে থাকব,
উভয় বাড়ির লোকেরা শর্তে রাজী হয়ে গেলে ওদের বিবাহ হয়।
আরে শর্তে কি বিয়ে হয়,একদিন অমলবাবু র খুব শরীর খারাপ ,,ছেলে অফিস থেকে শর্ত অনুযায়ী শ্বশুরবাড়ি না গিয়ে সোজা নিজের বাড়ি আসে। শর্ত ভাঙাতে অবুঝ বৌ বরের উপর ক্ষুব্ধ, বাবার অসুখের জন্য ছেলে শ্বশুরবাড়ি আর যায় না।তাই ছেলে আর অবুঝবৌমার মধ্যে ঝগড়াঝাটি দিনদিন বাড়তেই লাগল,এরমধ‍্যে অমলবাবু একদিন হঠাৎ হার্টফেল করে মারা গেলেন। এবার মা কে নিয়ে সমস্যা,ছেলে ও যেন মায়ের ব্যবহারে রুষ্ট মনে হত।
উনি নিজেই একদিন ছেলেকে বললেন বাবু শুনেছি বৃদ্ধাশ্রমে সবাই বন্ধু পায়, তোর বাবার তো প্রচুর টাকা আছে আমি বৃদ্ধাশ্রমে যেতে চাই। তোরাও ভাল থাকবি আর আমিও ভাল থাকার চেষ্টা করব, বৌমাও বলল ঠিক আছে মা যখন চাইছেন,চলো দিয়ে আসি। বৌমার বাবার এক চেনা বৃদ্ধাশ্রমে মাকে নিয়ে ঘটা করে সবাই গেলেন,ছেলেটি যখন সব নিয়মকানন সাড়ছে,কাউন্টারের ভদ্রলোক বলেন আরে রেবা তুমি। দুজনা বেশ গল্প ও করছিলেন তা বৌমা ও ছেলে লক্ষ্য করে, ছেলে হয়ত ভাবছিল যাক মায়ের পরিচিত কেউ আছেন, তারপর মা যখন করিডরের ভিতর দিয়ে টা টা করে ভিতরে চলে যাচ্ছিলেন…হঠাৎ ছেলে কাউন্টারের লোকটিকে বলেন আপনি রেবা বলে ডাকলেন ,আপনি উনাকে আগে চিনতেন।হ্যাঁ তো খুব ভাল করে চিনি বাবা,ও তো আমার মামাতো বোন। ছেলে তো শুনে খুব খুশী ,মার এখানে দাদা আছেন।

তারপর যা শুনল ,ছেলে বৌমার পায়ের মাটি সরে গেল..কথায় কথায় জানতে পারল ,রেবার তো বাচ্চা হচ্ছিল না, তাই লোকের কুকথা শোনার হাত থেকে রক্ষা পাবার জন্য তোমায় দওক নিয়েছিলেন বাবা। দিল্লী যাবার পর দওক নিয়েছিলেন তোমায়,তুমি অমলের বন্ধুর ছেলে,তোমার জন্ম মূহুর্তেই আসল মা মারা জান। তোমার বাবা তুমি যখন একমাস হলে,ছোটবেলার প্রিয় বন্ধু অমলকে,তোমায় দেন। তোমার বাবাও দুরারোগ্য কান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।মৃত্যুর আগে রেবাই তোমার বাবার সেবা করেছিল।
এই তো জগতের নিয়ম বাবা _
পর কখনো আপন হয় না,তোমরা ভাল থেকো।
না না মামা তুমি ভুল বুঝছ মা নিজের ইচ্ছায় এখানে এসেছেন, তা তুমি তো আপত্তিও তো করো নি।
ছেলে ,বৌমা চিৎকার করে কাঁদতে কাঁদতে বলে ..মা তুমি ফিরে এসো ..মা মা ও. মা তুমি ফিরে এস। রেবার কানে আগে সবসময় বাজত ,অাত্মিয়দের সেই বাজা শব্দটি, আজ নূতন করে যেন মা ডাকটি শুনতে পাচ্ছিল। নারীর টান যেন অনুভব করছিল, সে যেন এক আলাদা অনুভূতি।তাই ভবিষ্যৎ নাতি ,নাতনীর দেখার লোভে ছুট্টে এসে ছেলে ও বৌমাকে জড়িয়ে ধরে বলেন আমি তোদের সাথেই থাকতে চায়।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress