Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » শুঁড়ওয়ালা বাবা || Shibram Chakraborty

শুঁড়ওয়ালা বাবা || Shibram Chakraborty

শুঁড়ওয়ালা বাবা

বইটই গুছিয়ে নিয়ে মন্টু বেরোবার উদ্যোগ করছে, এমন সময়ে দাদামশাই ডেকে বললেন—‘আজ আর স্কুল যেতে হবে না। তোর শুঁড়ওয়ালা বাবা আসচেন, দুপুরে এসে পৌঁছোবেন তার পেয়েচি। আজ আবার মেল ডে, আমার তো আপিস কামাই করা চলবে না। বাড়ি থাকবি তুই।’

স্কুলে যেতে হবে না জেনে মন্টুর ফুর্তি হল, কিন্তু সেবেশ ভাবনায় পড়ে গেল। শুঁড়ওয়ালা বাবা আবার কীরকম বাবা?

সেতো প্রায় বছর দশেক হতে চলল তার বাবা স্বর্গে গেছেন সেশুনেছে, তার কিছুদিন পরে মা-ও তাঁর অনুসরণ করলেন। তখন থেকে মন্টু মামারবাড়িতেই মানুষ। এতদিন সেকোনো প্রকার বাবার সম্বন্ধেই কিছুমাত্র উচ্চবাচ্য শোনেনি, তবে অকস্মাৎ এই শুঁড়ওয়ালা বাবার প্রাদুর্ভাব হল কোত্থেকে আবার?

বইটই রেখে দিয়ে মন্টু বৈঠকখানায় গিয়ে বসল এবং মনে মনে বাবার বিষয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণা করতে লাগল।

বাবা তাহলে দুরকম? এক শুঁড় আছে, আরেকরকম শুঁড় নেই। তবে সাধারণত বাবাদের শুঁড় থাকে না। যথা নীতু, নীলিম ও ঝনকুর বাবার নেইকো। যে ক-টি বন্ধুর বাবার সঙ্গে তার চাক্ষুস ঘটেছে তাঁদের কারুরই শুঁড় নেই।

মন্টুর মতে বাবাদের শুঁড় না থাকাই বাঞ্ছনীয়। বাবারা যেমন ছেলেদের গাধা হওয়া পছন্দ করেন না, বাবাদের হাতি হওয়াটাও তেমনি ছেলেদের রুচিতে বাধে। তবে মন্টুর দুর্ভাগ্য, বেচারার বাবাই নেই। আর সব বন্ধুর কেমন বাবা আছে, তারা বাবার কাছ থেকে কত কী প্রাইজ পায়, তমু তো সেদিন একটা সাইকেল পেয়ে গেছে, কিন্তু বেচারা মন্টু—।

যাক, সৌভাগ্য বলতে হবে যে এতদিন বাদে তবু মন্টুর একজন বাবা আসছেন। তবে দুঃখের মধ্যে ওই যা—শুঁড়। তার জন্যে আর কী করা যায়, নেই-মামার চেয়ে কানা মামা যেমন ভালো, তেমনি একেবারে বাবা না থাকার চেয়ে শুঁড়ওয়ালা বাবাই-বা মন্দ কী! তারপর কাল আবার মন্টুর জন্মদিন—হয়তো তিনি কেবল শুঁড় নাড়তে নাড়তেই আসচেন না, কত কী উপহারও ঝাড়তে আসচেন।

বেলা প্রায় সাড়ে বারোটা, এমন সময়ে এক ভদ্রলোক মন্টুদের বাড়ির সামনে রিকশা থেকে নামলেন এবং সোজা ভেতরে এসে জিজ্ঞেস করলেন—‘এইটে ঘনশ্যামবাবুর বাড়ি না?’

—‘হ্যাঁ।’

—‘তাঁকে বলো গে সত্যপ্রিয়বাবু এসেচেন। আমি সকালে তার করেচি, পেয়ে থাকবেন বোধ হয়।’

তবে ইনিই! মন্টুও প্রায় এই আন্দাজ করেছিল। খুব মোটা বটে, তবে হাতির কাছাকাছি একেবারে নন। তা ছাড়া, শুঁড় নেই। শুঁড় না থাকার জন্য মন্টু যে ক্ষুব্ধ হল তা নয়, বরং তাকে যেন একটু খুশিই দেখা গেল।

—‘দাদামশাই আপিস গেছেন। আপনি বসুন।’

—‘তুমিই বুঝি উৎপল? আমি তোমার গুরুজন। প্রণাম করো।’ মন্টু ঈষৎ হতভম্ভ হয়ে জিজ্ঞাসা করল—‘কাকে?’

—‘কেন, আমাকে? আশ্চর্য হবার কী আছে? গুরুজনদের ভক্তি করতে শিখবে, তাঁদের কথা শুনবে। এসব শেখনি?’

মন্টু হাত তুলে নমস্কার করল।

—‘ও কী? ও কী প্রণাম হল? দেখচি এখানে তোমার শিক্ষাদীক্ষা সুবিধা হয়নি। পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতে হয়। যাক, ক্রমশ সব শিখবে। এখান থেকে গেলেই—’

—‘আপনি কি আমাকে নিয়ে যাবেন এখান থেকে? কোথায়?’

—‘কেন? দেশে। তোমার বাবার বাড়িতে। আমাদের বাড়িতে তোমাকে নিয়ে যেতেই তো আমি এসেচি।’

—‘আপনি আমার বাবা যদি তবে আপনার শুঁড় কই?’

—‘শুঁড়?’

—‘হ্যাঁ। দাদামশাই যে বললেন, ‘‘মন্টু তুই বাড়ি থাকিস, তোর শুঁড়ওলা বাবা আজ আসবেন।’’ কিন্তু আপনার শুঁড় নেই তো! শুঁড় কোথায়?’

—‘হুঁ।’

‘হুঁ’ বলে ভদ্রলোক ভারি গম্ভীর হয়ে গেলেন, মন্টুর সঙ্গে তারপর আর কোনো কথাই তাঁর হল না। ঘাট হয়ে গেছে ভেবে মন্টু ম্লান মুখে চুপ করে রইল। সেবইয়ে পড়েছিল বটে যে কানাকে কানা বলিয়ো না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিয়ো না ইত্যাদি—পড়েছিল এবং মুখস্থ করেছিল, কিন্তু বইয়ের হুকুম কাজে না মানলে যে অঘটন ঘটবে তা সেভাবেনি। যার পা নেই তাকে খোঁড়া বললে সেযেমন মনঃক্ষুণ্ণ হয়, এঁকে শুঁড় নেই বলাতে বোধ হয় ইনি তেমনি বিচলিত হয়েছেন। অঙ্গহীনতার অনুযোগ না করাই মন্টুর উচিত ছিল।

ঘনশ্যামবাবু অফিস থেকে ফিরলে অন্যান্য কথাবার্তার পর সত্যপ্রিয়বাবু বললেন—‘দেখুন, উৎপলকে আমি নিয়ে যেতে চাই। দাদা-বউদি নেই, কিন্তু আমি তো আছি। আমিই এখন ওর অভিভাবক।’

—‘কেন, এখানে তো ও বেশ আছে। সেই অজ পাড়াগাঁয়ে—’

—‘তাহলে খুলেই বলি। এখানে ওর যথার্থ শিক্ষা হচ্ছে না।’

—‘যথার্থ শিক্ষা বলতে কী বোঝায়?’

—‘অনেক কিছু। তা নিয়ে আপনার সঙ্গে তর্ক করা আমার পক্ষে বাতুলতা। তবে এখানে থেকে যথার্থ অশিক্ষা যে ওর হচ্ছে তাতে ভুল নেই।’

—‘যথার্থ অশিক্ষা হচ্ছে? কীরকম শুনি।’

—‘আপনি বলেচেন আমি নাকি ওর শুঁড়ওয়ালা বাবা। উৎপল তাই বলছিল। এতদ্বারা ওকে মিথ্যাবাদিতা শেখানো হচ্চে। আমি তো ওর বাবা নই, তা ছাড়া আমার শুঁড়ও নেই!’

—‘এই কথা! তুমি ওর কাকা তো বটে! ‘ব’-এ শুঁড় দিলেই ‘ক’ হয় এও বোঝ না বাপু!’

কিন্তু কিছুতেই সত্যপ্রিয়কে বোঝানো গেল না; পরদিন সকালেই মন্টুকে নিয়ে তিনি রওনা হলেন। পথে যেতে যেতেই মন্টুর যথার্থ শিক্ষা শুরু হয়ে গেল।

—‘দ্যাখো উৎপল! আজ আমি তোমাকে মাত্র তিনটি উপদেশ দেব। যদি মানুষ হতে চাও তাহলে আমার এই তিনটি উপদেশ তোমার মূলমন্ত্র হবে আর জীবনে সর্বদা মেনে চলবে! প্রথম হচ্ছে, সত্যনিষ্ঠ হবে, সত্যের জন্য যে-ত্যাগ, যে-কষ্ট, যে-লাঞ্ছনাই স্বীকার করতে হোক-না কেন, কখনো পিছুবে না। দ্বিতীয় উপদেশ এই, সবসময়ে নিয়মানুবর্তী হবে। নিয়ম না মানলে শৃঙ্খলা থাকে না, তাতে করে সামাজিক ব্যবস্থায় গোলযোগ ঘটে। আমার তৃতীয় উপদেশ হচ্ছে এই—’

উপদেশগুলো মন্টুর কানে যাচ্ছিল কি না বলা যায় না। কানে গেলেও তার মানে নিশ্চয় তার মাথায় ঢোকেনি। একটু আগে একটি ছেলে তার পাশ দিয়ে যাবার সময় অকারণে, বোধ হয় অকারণ পুলকেই, মাথায় চাঁটি মেরে গেছল, কাকার নিয়মনিষ্ঠা প্রচারের মাঝখানে তার প্রতিশোধ নেবার সুযোগ সেখুঁজছিল। তৃতীয় উপদেশের সূত্রপাতেই, পথে চলতি ছেলেটি আবার যেমনি তার পাশে এসেছে অমনি সেতাকে ল্যাং মেরে ধরাশায়ী করে ফেলল।

মন্টু নিজের ক্ষুদ্রবুদ্ধি অনুসারে সম্ভবত নিয়মরক্ষাই করেছিল, কিন্তু সত্যপ্রিয় উলটো বুঝলেন—‘দ্যাখো, এইমাত্র তুমি পথে চলার নিয়মভঙ্গ করলে!’

—‘ও যে আমাকে চাঁটি মারল আগে!’

—‘আমি তো দেখেচি, কিন্তু ওকে ক্ষমা করাই তোমার উচিত ছিল না কি? আমার তৃতীয় উপদেশ হচ্ছে, কখনো কাউকে আঘাত করবে না। কেউ যদি তোমার বঁা-গালে চড় মারে তাকে ডান গাল ফিরিয়ে দেবে।’

স্টেশনে গিয়ে সত্যপ্রিয় দারুণ ভাবনায় পড়লেন। মন্টুকে জিজ্ঞাসা করলেন—‘তোমার কী টিকিট কিনব? হাফ না ফুল? একটু মুশকিল আছে দেখচি।

—‘আমি তো হাফ-টিকিটে যাই।’

—‘বারো বছর পুরে গেলে পুরো ভাড়া দিতে হয়। আজ তোমার ঠিক বারো বছর পূর্ণ হবে। তবে হিসেব করে দেখলে ঠিক বারো বছরে পড়তে এখনও তোমার চার ঘন্টা পঁয়ত্রিশ মিনিট তেরো সেকেণ্ড বাকি। তারপর থেকেই তোমার ফুল টিকিটের বয়স হবে।’

—‘তা কেন? আমাদের পাড়ার হাবলা দেখতে বেঁটে, কিন্তু তার বয়স সতেরো বছর। সেএখনও হাফ-টিকিটে যায়, তাকে কই ধরে না তো।’

—‘এতক্ষণ কী বোঝালাম তোমাকে? সর্বদা সত্যনিষ্ঠ হবে—বাক্যে, চিন্তায় এবং আচরণে। কাজেই এখনও যখন তোমার বারো বছর পূর্ণ হয়নি, এখন ফুল টিকিট কেনা যেতে পারে না। কিন্তু গাড়িতে যেতে যেতে পূর্ণ হবে, সেইটাই ভাবনার কথা! আচ্ছা তখনকার কথা তখন দেখা যাবে।’

গাড়িতে উঠে সত্যপ্রিয় একদৃষ্টে হাতঘড়ির দিকে চেয়ে রইলেন। মন্টু জানালার ফাঁকে বাইরের পৃথিবীর পরিচয় নিতে লাগল।

কিন্তু যেই-না চার ঘন্টা পঁয়ত্রিশ মিনিট তেরো সেকেণ্ড গত হওয়া, অমনি সত্যপ্রিয়বাবু তাঁর বিপুল দেহ নিয়ে গাড়ির অ্যালার্ম সিগন্যালের শেকল ধরে ঝুলে পড়লেন। ফল হল ঠিক মন্ত্রের মতো—ঝড়ের বেগে যে-গাড়ি ছুটছিল, গাছপালাদের ছোটাচ্ছিল, দু-ধারের দিগন্ত প্রসারিত মাঠের মধ্যিখানে অকস্মাৎ তা থেমে গেল। ট্রেনের গার্ড এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কে শেকল টেনেছে?’

সত্যপ্রিয় বুঝিয়ে বললেন, ‘দেখুন, এই ছেলেটির বারো বছর এইমাত্র পূর্ণ হল। এর পর তো একে আর হাফ টিকিটে নিয়ে যেতে পারি না; কোনো স্টেশনে থামলেই ভালো হত, কিন্তু মাঠের মাঝখানে যে বয়স পূর্ণ হবে তা কী করে জানব বলুন! অসত্যকে প্রশ্রয় দিতে আমি অক্ষম, তা ছাড়া রেল কোম্পানিকে আমি ঠকাতে চাইনে। ওর হাফ-টিকিট আছে। এখান থেকে পুরুলিয়া পর্যন্ত আরেকটা হাফ-টিকিট আপনি দিন কিংবা হাফ-টিকিটের ভাড়া নিয়ে রসিদ দিন।’

—‘এই জন্য গাড়ি থামিয়েছেন? আচ্ছা পরের স্টেশনে দেখা যাবে।’

—‘তা দেখতে পারেন, কিন্তু ভাড়া এখান থেকে ধরতে হবে, পরের স্টেশন থেকে নিলে চলবে না।’

পরের স্টেশনে গাড়ি থামতেই গার্ড সত্যপ্রিয়কে জানালেন যে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েচে! তিনি আকাশ থেকে পড়ে বললেন—‘কেন, গ্রেপ্তার কীসের জন্য?’

—‘দেখচেন-না। অকারণে শেকল টানলে পঞ্চাশ টাকা জরিমানা! স্পষ্টই লেখা রয়েছে। দরজার মাথায় ওই!’

—‘অকারণে তো টানিনি।’

—‘সেকথা আদালতে বলবেন।’

সত্যপ্রিয় কিছুতেই গাড়ি থেকে নামবেন না, সত্যের মর্যাদা রাখবার জন্য যা করা দরকার, যা প্রত্যেক সত্যনিষ্ঠ ভদ্রলোকই করবে, তাই তিনি করেচেন। তিনি তো কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করেননি, কারণ—গুরুতর কারণ ছিল বলেই শেকল টেনেছেন। কাজেই তিনি গ্রেপ্তার হতে নারাজ, এটা বেশ ওজস্বিনী ভাষায় সবাইকে জানিয়ে দিলেন।

তিনি নামতে প্রস্তুত নন, অথচ তিনি না নামলে ট্রেনও ছাড়তে পারে না। অনর্থক ডিটেন হতে হবে ভেবে সত্যপ্রিয়র সহযাত্রীরা গার্ডের সাহায্যে অগ্রসর হল। মাঠের মাঝখানে গাড়ি থামানোর জন্য তারা তখন থেকেই বিরক্ত হয়ে আছে। সকলে মিলে তাঁকে ধরে জোর করে নামাতে গেল। টানাটানিতে সত্যপ্রিয়র দামি সিল্কের অমন পাঞ্জাবিটা গেল ছিঁড়ে; সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মেজাজও গেল রুখে, তিনি ধাঁ করে একজন সহযাত্রীর নাকে ঘুসি মেরে বসলেন। তখন সকলে মিলে চাঁদা করে তাঁকে ইতস্তত মারতে শুরু করে দিলে। কদাচ কাহাকেও আঘাত করিয়ো না—জীবনের এই মূলমন্ত্র তিনি ভুলে গেলেন। তবে, বঁা-গালে মার খাবার পর ডান গাল তিনি বাড়িয়ে দিচ্ছিলেন বটে, কিন্তু সেটা বোধ হয় বাধ্য হয়ে এবং অনিচ্ছাসত্ত্বে, কেননা আক্রমণ থেকে এক গাল বঁাচাতে গিয়ে অন্য গাল বিপন্ন হচ্ছিল। অসুবিধা এই যে দুটো গাল একসঙ্গে ফেরানো যায় না।

একা সত্যপ্রিয় কী করবেন? খানিকক্ষণ খন্ডযুদ্ধের পরেই দেখা গেল যে একা তিনি সাত জনকে মারবার চেষ্টা করে কাউকেই বিশেষ মারতে পারেননি, কিন্তু সাত জনের মার তাঁকে হজম করতে হয়েছে। সকলে মিলে তাঁকে চ্যাংদোলা করে স্টেশনের একটা গুদামঘরে নিয়ে ফেলে তার বাহির থেকে দরজা লাগিয়ে দিল—সেই যতক্ষণ-না থানার থেকে পুলিশ এসে তাঁর হেপাজত নেয়। মন্টুও কাকার সঙ্গে স্বেচ্ছায় সেই ঘরে আটক রইল!

তারপর ট্রেন ছাড়ল। স্টেশন জুড়ে ব্যস্ত উত্তেজনা, বিরাট শোরগোল, সেই সব গাড়ির সঙ্গে সঙ্গে চলে গেল। ছোট্ট স্টেশনটা সত্যপ্রিয়র মতো নির্জীব নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে রইল। সেই বদ্ধ ঘরের মধ্যে সত্যপ্রিয় ঘোঁৎ ঘোঁৎ করতে লাগলেন। তাঁকে তখন আর চেনাই যায় না। সমস্ত মুখখানা ফুলে মস্ত হয়েচে, চোখ ছোটো হয়ে গেছে, প্রকান্ড মুখে তাদের খুঁজেই পাওয়া যায় না—হ্যাঁ, এতক্ষণে হাতির মাথার সঙ্গে তুলনা করা চলে। অচিরেই হয়তো শুঁড়ও বেরোতে পারে এমন সম্ভাবনা আছে বলে মন্টুর সন্দেহ হতে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *