শিল্পে গড়া আঙুল, তাই হাতছানিতে মায়া
কেন ডাকলে চন্দনের বনে হঠাৎ নিরালা সন্ধ্যায়
অনেক দূর চলে এসেছি, অনেক পথ ধাঁধা
বয়েস এমন পাকদণ্ডি যখন তখন হোঁচট
কেন ডাকলে চন্দনের বনে হঠাৎ নিরালা সন্ধ্যায়
ভুলেই গেছি কোথায় সেই যৌবনের হালকা-পাখা দিন
তোমার বুঝি এখনো সেই খেলার সাধ, নীরা?
পাথরে গড়া মূর্তি নও, স্নিগ্ধ জ্যোতি, ছিলে অমূল তরু
আমি তখন ঘূর্ণি ঝড়ে অশান্তির রুদ্র টংকার
তবু আলিঙ্গন চেয়েছি, পাথর নয়, শিল্প নয়, নীরা
বাতাস-পোয় পায়ের পাতা তুমি শুধুই নারীর মধ্যে নারী
রমণী নয়, খুকি, তোমার গ্রীবায় ছিল সারাৎসার লীলা
স্পন্দ্যমান স্তনদুটিতে শুনেছি কান পেতে তোমার উন্মোচনের ধ্বনি
আমার হাত, খুনির নয়, কবির নয়, ঘামে সিক্ত হাত
এখন মাঝে মাঝেই আমার ব্যাকুলতার চোখে দেখার ভুল
রমণী নয়, পাথর, যেন বেদীর ওপর প্রতিষ্ঠিত তুমি
ইচ্ছে করে পাথর হতে চাও কি তুমি, হৃদয়ে নয়, পায়ে
পায়ের আঙুল, জঙ্ঘা-ঊরু, শরীরী নয়, তোমার নয়, নীরা
যেন খোদাই শিল্প, যেন তোমার রূপ অনশ্বর হোক
কেউ চেয়েছে, কেউ তোমাকে জাদুঘরে, প্রদর্শনী শালায়
গৌরবের বন্দিঘরে রাখতে চায়, স্তুতি প্রশংসার নির্বাসনে তু
মিও তাই মেনে নিয়েছে, নরম পা পাথর হতে রাজি?
কেন ডাকলে চন্দনের বনে হঠাৎ নিরালা সন্ধ্যায়
কোনোদিন কি ফিরবো আর, ফেরার পথে কাঁটা
যদি বা ফিরি, পুরনো সাজ পোশাক নিয়ে, ইঙ্গিতের টানে
কার জন্য? পাথুরে পা, আধেকলীনা শিল্প কিংবা নারী
আমার নীরা, অথবা ভাস্কর্য হতে হতে ঈষৎ থামা
না, আমি তোমাকে চাই, মূর্তি নয়, তোমাকে চাই, নীরা
স্বরূপ নিয়ে আয় রে সখী, শরীরে থাক ছটফটানি আলো!