মুক্তোর খোঁজে
পসরা সাজিয়ে নিয়ে নৌকা বোঝাই করে কেউ যদি এসে উত্তাল সাগরের বুকে পৌঁছায় কি এসে যায় সাগরের। যে পৌঁছায় সে নিজেই বোঝে গভীরতা কত। শব্দমালার নাবিক পরে নেয় ডুবুরি বেশ। ডুব দেয় ঝিনুকের খোঁজে। ঝিনুক থাকে সাগরের অতলে।সময়ের স্রোতে ভেসে চলেছে জীবন।
জানে না কখন মরা গাঙে বাণ এসেছে হঠাৎ।নৌকা টলমল করে। দরকার দক্ষ নাবিকের। জীবন নাইয়া তেমন বেপরোয়া হতে পারে না। নৌকা বোঝাই জীবনের সঞ্চিত পসরা ডুবলে কি হবে উপায়? তাই শক্ত করেই ধরা চাই হাল। না হলে কোন অজানার উদ্দেশ্যে ভেসে যাবে তরী । কোথায় যে থামবে কেউ জানে না। ভাঙা আর গড়ার ছন্দমিলে বন্দী এই জীবন।
জীবন বর্নিল স্বপ্ন দেখে। আলোর আশায় গড়ে নিজস্ব ভুবন। সে স্বপ্ন দেখে এক মায়াবী মুখ। মনে হয় সে কখনও খুব দূরে আবার খুবই কাছাকাছি। বুকের মধ্যে ফুলের মতন চুপটি করে বসে থাকে। থাকে কিছু প্রিয় ও অপ্রিয় মানুষ হৃদয় জুড়ে। ভাটায় টান আসে।জোয়ার আসে নিঃশব্দে। দু’চোখ ভরা আনেক আশা। অজানা মনটার প্রতি অনেক প্রত্যাশা। নিজের চেয়েও যেন টান বেশি তাতে।
তারপরে কী মায়াবী মুখের লীলা।মায়াবী মুখের হাসিতেই সে জব্দ। এ যেন এক অসুখ। কি যে অসুখ বোঝে না সে।সে অসুখ সারাতেও চায় না। বরং শব্দমালায় সাজিয়ে ময়ূরপঙ্ক্ষী চড়ে তার হৃদয় সাগরে পাড়ি দিতে চায়।সে জানে সেখানে অনেক কিছু আছে। ডুবুরি বেশ ধরে ডুবতে চায় গভীর অতলে। সে সব মণি মুক্তা তুলে আনবে। এ যেন তার পাগলামী। দিন যায় রাত যায় মায়াবী মুখের স্বপ্নে বিভোর থাকে। সে ভাবে, এমন উপলব্ধি তার আগে কখনো হয়নি। তাই সে ভীষন সংশয়ে তলিয়ে যেতে থাকে। আর কোন উপায় নেই। সে শব্দ খেলায় প্রেমের ফাঁদে পড়েছে। শরীর না মন কী চাই তার? সে বিভ্রান্ত হয়ে পড়ে এই ভাবনায়। বহু নাবিক জাহাজ নিয়ে সেই সাগরে ভিড়েছিল। কিন্তু তারা নাকি তল না পেয়ে তলিয়ে গেছে। তাই সে নিঃশব্দে আরও গভীরে ডুবে যায়। যেখানে পড়ে আছে অসংখ্য রঙবেরঙের ঝিনুক। নানা আকারের নানান রঙের ঝিনুক সে মায়াবীকে তুলে এনে দেখাবে। মায়াবী তো নিজেই জানে না তার গভীরতা। একটা একটা করে খুব যত্নে, সে মায়াবীর হৃদয় ঝিনুক থেকে মুক্তো বের করে আনবে। নাবিক হৃদয় এই দৃশ্যে বিমুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকবে। সে কাকে দেখবে? মায়াবী না সেখানেও মুক্তো? সেখানেই আসে সমস্যা।