এমন তো হয়, কোনও কোনও সময়
নিজেকে দেখি এক টানেলে নিঃসঙ্গ হেঁটে চলেছি
ক্রমাগত। অন্ধকার আমার সারা শরীরে
দাঁত বসাচ্ছে ডালকুত্তার মতো। চিৎকার করতে চাইছি
মেঘফাটানো স্বরে, অথচ কে যেন গলা চেপে
ধরেছে। আমার নিজের পায়ের জুতোর সন্ত্রস্ত আওয়াজ ছাড়া
অন্য কোনও শব্দ পশে না কানে। আমার
সামনে অথবা পেছনে কেউ নেই; আমি
বাস্তবিক এগোচ্ছি নাকি পিছিয়ে যাচ্ছি,
বোঝা দায়। এভাবে কি পৌঁছে যাব কোনও বধ্যভূমিতে?
গোধূলিবেলায় নিজেকে কেমন বেকুব
দাঁড়ানো পাই ফায়ারিং স্কোয়াডে; অনেকগুলো রাইফেল
তাককরা আমার দিকে; ভাবলেশহীন আমি
দেখি অদূরে অনেক পিঁপড়ে এগিয়ে যাচ্ছে
একটি মৃত পাখির অনাড়ম্বর সৎকারের উদ্দেশে।
চকিতে বন্দুকের ঝাঁক
রজনীগন্ধার ঝাড় হ’য়ে দুলতে থাকে
চোখের সামনে এবং আমাকে সাদর বরণ ক’রে নেয়
কাঠবিড়ালি, ময়ূর, মাছরাঙা, বৃক্ষশ্রেণী,
পলাশ, নীলপদ্ম, ঘুঘু, ডাহুক আর বুলবুল।
এখন আমি অনেক শিশু, যুবক-যুবতী, প্রৌঢ় আর
প্রাণবন্ত বৃদ্ধের সংসর্গে আছি। বিস্মিত দেখি
আমাদের ঘিরে নাচছে অনেক নক্ষত্র; মানুষের
এই মেলার কখনও আমি নক্ষত্র, কখনও
সরোদ-বাজতে থাকি উত্তর দক্ষিণে এবং
পূর্ব-পশ্চমে। কে আমাকে আটকে রাখতে পারবে?