বিবাহ বাসরে বিরোচন বসেছেন গ্যাঁট হয়ে, কন্যাটি অদৃশ্য
প্যাঁ পো করে সানাই বাজছে, ফুলের গন্ধে চতুর্দিক ম ম
লগ্নের আগেই খেতে বসে গেছে এক ব্যাচ, এর মধ্যে
সালঙ্কারা, চন্দনচর্চিতা মেয়েটি কোথায় গেল?
এত আলোর মধ্যেও যেন সব কিছু অন্ধকার
না, গয়না সে সব খুলে গেছে, চন্দন মুছে ফেলেছে কিনা
কেউ জানে না
কার সঙ্গে গেল, কিংবা একাই সে ঝাঁপ দিল সমুদ্রে?
ফিসফাস বন্ধ করে এখন আর একটি মেয়েকে ধরে নিয়ে এলেই তো হয়
এ দেশে কি আইবুড়ো দুর্ভাগিনীর অভাব?
বিরোচন অপমানে গর্জে উঠে এখনি শুরু করতে পারেন তাণ্ডব নৃত্য,
তিনি জোড়াসাঁকো থানার হেড কনস্টেবল
কত মেয়ের ভাগ্য ফিরে যেত, যে কোনো মেয়ে হতে পারত
বিনা পণে, বিনা ফ্রিজ, আলমারিতে পাটরানি
দুধ-ননি আর সোনা দানা কিছুরই অভাব হত না
শনিবার রাত এগারোটায় সে রকম পাওয়া গেল না একজনও
তবে কি ফিরে যাবে বিরোচন গলার মালা ছিঁড়ে ফেলে?
নন্দী ভূঙ্গি সমেত বরযাত্রীরা বার করল অস্ত্র, শুরু হল ধুন্ধুমার
এটা খবরের কাগুজে কাহিনী নয়, গত শতকের উপন্যাসও নয়
আমাদের কন্যাটি চিঠি লিখে গেছে, নিজের বাবাকে নয়,
বিরোচনকে
এই বাসর মিথ্যে, বিরোচনের সঙ্গে তার দেখা হবে কখলের এক গুহায়
সেখানে তার নাম হবে অপর্ণা
সে গুঞ্জা ফুলের মালা গেঁথে রাখবে, বাতাসে ভাসবে ঝর্নার ঝঙ্কার
শুধু একটাই শর্ত, বিরোচনকে তার হাত পায়ের সব
পাপ ধুয়ে আসতে হবে
যেন সে পঞ্চশরের অন্তত একটি শরের যোগ্য হতে পারে।