বাদলা দিনের পরানকথা
প্রকৃতি মুখ ঢেকেছে জলচুড়ি ওড়না য় ॥ আবছা মায়াবী ভোর যেন অভিমানে কাঁদছে॥ এক ঝলকঠান্ডা হাওয়া শরীরে শিহরণ লাগিয়ে দিলো॥ জানালার গ্রীলে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছি॥ বৃষ্টি ফোঁটা মাখছি…… কে যেন ডাক দিলো …..”দেখা হবে বর্ষা ভেজা বনে …”অমনি পাগল মন আগল ভাঙ্গল …..চললো ওই ডাক কে অনুসরণ করে…..॥
বৃষ্টি রঙ্গে ভোরের প্রকৃতি মাতাল ! শ্বেত শিমূলের ডালে ডালে ডানা ভেজা মৌটুসী…দোয়েল…বুলবুলির বক বকানি ……. দূর থেকে ভেসে এলো মাছরাঙার তীব্র শিস……সবাই সচকিত!! ভেজা ডানা য় নীল খয়েরী তুফান তুলে এসে বসলো শ্বেতশিমূলের ডালে….ও যে ভগ্ন দূত গো…. ঝিলপাড়ে র বরষা বনে র….সবাই উদগ্রীব….কী খবর এনেছে ও ? ? ?
মাছরাঙা বলে চলে….”সবুজপাতার ঝালরে সেজেছে রাখা জঙ্গল । শাল বিথির পুরুষালী সবুজের সৌন্দর্যে বনভূমি গরবিনী।কুসুমের লাল কচি পাতা লজ্জা দেয় পলাশ শিমুল কে।দখিনা বায় ডাক দিয়ে যায় শালের বনে॥ শাল মহুলের যুগলবন্দী শুরু হবে ক দিন পর থেকে॥ ভূতভৈরবী..আকন্দ …ঘেটু… মনে র আনন্দে সেজে চলেছে॥লালকমলা…সাদা গোলাপী হলুদ…ঝোপ যেন রঙের মীনা কারি তে মোহিত!আকন্দ ঝোপে ভ্রমর…মৌমাছির মজলিশ….মৃদু বুনো গন্ধে একদন্ড থমকে দাঁড়া তে হয়॥ বাসক মঞ্জুরী র সাদা ফুল মধু বুকে নিয়ে অপেক্ষা করছে….. মৌটুসী আর ভ্রমর একসাথে আসে…সোহাগ করতে!
দিগন্ত ছোঁয়া মাঠের মাঝে মাঝে গাঁদা ফুলের হলুদ গালিচা আর পান্না সবুজ গালিচায় কবুতর ঝাঁকের আকাশ বাজি চলে॥ বকের ঝাঁক দিগন্ত রেখা পেরিয়ে উড়ে চলে বাঁধের দিকে॥ তেলে মুনিয়ার ঝাঁক বেনা ঘাসের জঙ্গলে লুকোচুরি খেলছে……..”সবাই মন্ত্র মুগ্ধ॥ বৃষ্টিও যেন খবর শোনা র জন্য অপেক্ষা করছিল ॥ তুঁতে ডানা য় লহর তুলে তীব্র শিসে চরাচর কে জানিয়ে মাছরাঙা উড়ান ভরে দক্ষিনে র মাঠে……॥বুলবুলি বলে ওঠে….”কী সুখের জীবন ” । মৌটুসীর মুখঝামটা তৎক্ষনাত … ”তোমার ই বা কম কিসের ,?”শ্বেত শিমূলের ডালে ডালে ছড়িয়ে পড়ে ওদের কলকাকলি……..বৃষ্টি ভেজা সুবাস মাখা বাতাসটা মন টাকে স্মৃতিমেদুর করে তোলে………..॥