ফিরে পাওয়া
আমার বন্ধু দিতি সমাজসেবী।হোয়াইটস এপে আমরা গল্প করি। একদিন দিতি আমাকে বলল, তোর অদিতিকে মনে আছে? কেন মনে থাকবে না। কি সুন্দর দেখতে। চুল গুলো বাদামি। ধব ধবে সাদা গায়ের রঙ।হাসলে চোখ দুটি আপনি বুঁজে আসে।খুবই মিষ্টি দেখতে।যেন আদরের পারুলবোন।সাত ভাই মিলে খুবই জাঁকজমক করে অদিতির বিয়ে দিয়েছিল। হ্যাঁ, মনে আছে ওর বরকে কেমন আমরা মুরগী করেছিলাম।কিন্তু পবিত্রদা কেমন রেগে রেগে যাচ্ছিল। মনটা যেন কু গাইল।সে তো পঁচিশ বছর আগের কথা। তোর সাথে ওর কি করে যোগাযোগ হল? ওই,তোর সাথে যেমন রবীন্দ্র জয়ন্তীতে দেখা হল। ওর সঙ্গে দেখা হয়েছিল সারদা মঠে।ওখানেই ও দীক্ষা নিয়েছিল।দেখলাম সিঁথিতে লাল রঙ নেই। হাত দুটো দেখি শাঁখা পলা শূন্য। কোন প্রশ্নও করতে পারি নি। তাই ওর সাথেও যোগাযোগ করি হোয়াইটস এপে।অদিতি বলল বাড়িতে আয় কথা আছে।দাঁড়া একটা ছবি পাঠাই। দেখ চিনতে পারিস? দেখি কেমন? বাঃ দারুণ। পঁচিশ বছরে পবিত্রদার সাথে আবার মালাবদল? তুই পবিত্রদাকে ভুলে গেলি? হ্যাঁ বাসর রাতে বরবেশে যেটুকু দেখেছি।তাতে কতটুকু আর মনে থাকবে। দিতি এই রকম মহিলাদের খুঁজে বেড়ায়।যদি সে তার কোন উপকার করতে পারে। দিতি বলল অদিতি যেন কি অবসাদে ভুগছিল। বিধবা মা এখন আদিতির সাথী। অদিতি তখন থেকেই বাপের বাড়ি থাকে।মানে,ও কি বিধবা? না ডিভোর্স? সে এক উপন্যাস।একই বাড়িতে থাকে কিন্তু বিধবা মায়ের দায়িত্ব কোন দাদা নিতে চায় না। অদিতি মায়ের কাছে ফিরে আসে ফুলশয্যার পরের দিন।পবিত্রদার সাথে নাকি তার ফুলশয্যাই হয় নি।সে ছিল সেদিন অন্য ঘরে। তাই মায়ের ইচ্ছা মেয়ের আবার বিয়ে দেবে। একটা পাত্র খুঁজে দিতে বলেছিল। দিতি দেখেছিল খবরের কাগজে প্রীতমের বিজ্ঞাপন। প্রীতমের স্ত্রী দুই বছর হল মারা যায়। বাড়িতে বিধবা মা একা।তাই সে বিয়ে করতে আগ্রহী। এই বিজ্ঞাপনটা অদিতির মায়ের পছন্দ হয়।মেয়েকে অনুরোধ করে বিয়ে করতে।যেন মা মরেও শান্তি পাবে। অদিতি তো ঠিক করেই ছিল আর বিয়ে করবে না।মায়ের শান্তির কথা ভেবেই সে রাজি হয়। পঁচিশ বছর পর প্রীতমের সাথে আবার বিয়ে।কুড়ি বছরের ছেলেও নিজে হুলুধ্বনি দিয়ে নতুন মামণিকে বরণ করে নেয়। সমাজের পরিবর্তনে দুটি জীবন আবেগে আবার নতুন স্বপ্নে ভেসে যায়।