আগুনের জিহ্বা এসে স্পর্শ করে যায়
উনিশের কুমারীকে ; তার চোখ ক্ষণকাল বিদ্ধ হয়ে থাকে যন্ত্রণায়
তারপর জ্বলে ওঠে আকস্মিক আলেয়ার মতো
এক টুকরো অন্ধকার পাখি হয়ে তার পাশে ঘোরে ক্ৰমাগত ।
পূর্ণিমার স্নিগ্ধ আলো রোদ্দুরের চেয়ে আরো তীক্ষ্ণ মনে হয়
স্মৃতির অসহ দুঃখ ছেলে দেয় প্রথম সংশয়।
একটি আলোর বিন্দু ঘুরে ফেরে ধমনীর রক্তের ভেতরে”
শৈশবের ভুলে যাওয়া পদ্মা আরও কীর্তিনাশ করে।
শরীরে মৃত্যুর স্বাদ–বুক জুড়ে উন্মাদ তুফান
আগুনের জিহ্বা এসে স্পর্শ করে, ভয়ে কাঁপে প্ৰাণ
এক টুকরো অন্ধকার পাখি হয়ে ঘোরে চারপাশে
আলেয়ার মতো চোখ জ্বলে উঠে মেলায় আকাশে ।
মেয়েটি কান্নায় ভরে অন্ধকার মাঠে ভেঙে পড়ে
প্রার্থনায় দীর্ণ হয়, অস্ফুট হাওয়ার মতো স্বরে :
হে দেব, তৃষ্ণার শান্তি, মুক্তি দাও এই তৃষ্ণা যুপকাষ্ঠ থেকে
বিশাল বাতাসে ছাওয়া মাঠে আমি তৃণে মুখ ঢেকে
উদ্ভিদ মূলের মতো মাটি থেকে চাই শান্তিরস
হে দেব, তোমার দানে পূর্ণ করো যৌবনের তৃষ্ণার কলস ।
তখন কবির কণ্ঠ প্রচ্ছন্ন আধার থেকে উচ্চারিত হয়,
হে কুমারী, শান্ত হও, অশ্রুজিলে লিখে রাখো অনেক বিস্ময়।
তোমার পিপাসা ঋতু জ্বলে জ্বলে দীর্ঘতর হোক
তোমার প্রাণের নাম দাহময় গ্রীষ্মের চাতক ।
পৃথিবীর মতো তুমি স্থির হয়ে থাকো প্রতীক্ষায়
প্ৰথম প্রেমের স্পর্শ নেমে আসবে আষাঢ়ের প্রথম বর্ষায় ।