Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ছিন্নবীণা || Rimpa Laha

ছিন্নবীণা || Rimpa Laha

ছিন্নবীণা

বিয়ের আর মাসখানেক বাকি ।তাই দক্ষিণেশ্বরে মায়ের কাছে পূজো দিতে এসেছে ঋক আর অহনা । আজ অহনার জন্মদিন । দুজনে পূজো দিয়ে লঞ্চ ঘাটে এসে পৌঁছায় । লঞ্চে উঠে দুজনে রেলিং ধরে দাড়ায় । লঞ্চ ছেড়ে দেয় । দুবছরের প্রেম ওদের । ঋক একটা মাল্টিন্যাশানাল কোম্পানির সি .ও. । আর অহনা এম.বি .এ. কমপ্লিট করলো ।বছর দুয়েক আগে অহনার এক বান্ধবীর বিয়েতে আলাপ হয় ঋকের সাথে ।সেখান থেকেই ভালোলাগা তারপরই ভালোবাসা । দুজনেরই বাড়ি থেকে কোনো আপত্তি ছিল না । দুই পরিবারই স্ব – ইচ্ছায় সম্পর্কটা মেনে নিয়েছে । শুধু অহনার কোর্সটা কমপ্লিট হবার অপেক্ষা ছিল ব্যাস।
এগিয়ে চলেছে লঞ্চ । গঙ্গার শীতল স্নিগ্ধ হাওয়া আবেশিত করছিল ওদের । লঞ্চ ঘাটে ভিড়ল । অদ্ভুত মন ভালো করা পরিবেশ । দুজনে হাত ধরে ফিরছিল । এমন সময় দশ বারোটা ছেলে অহনাকে বিরক্ত করতে শুরু করে । উল্টোপাল্টা কথা বলা , গা ঘেঁষে যাওয়া , পিছনে ধাক্কা মারা । ঋকের সাথে ছেলেগুলোর বচসা বাঁধে ও হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় ।এরপর লোক জমে যায় ও ভয় পেয়ে ছেলেগুলো পালিয়ে যায় । ঋক অহনাকে নিয়ে তৎক্ষণাৎ ওখান থেকে বেরিয়ে আসে ।এই ঘটনার পর অহনা মন মরা হয়ে যায় । ঋক ব্যাপারটা বুঝতে পেরে অহনার হাতটা শক্ত করে ধরে বলে কিচ্ছু হয়নি । just chill and cheer up . আরে তোর birthday gift টাই তো এখনো বাকি । চল তোর জন্য একটা gift কিনবো । আমার কিচ্ছু লাগবে না । আমার শুধু তোকে চাই ব্যাস । দুর পাগলি আমি তো তোরই । please চল ।কোথায় ? আরে আয় না । একটা সোনার দোকানে নিয়ে যায় ঋক । একটা ডায়মন্ড রিং পছন্দ করে সে অহনার জন্য। আমি এটা নিতে পারবো না । Its very costly . please সোনাই নিয়ে নে । তোর থেকে বেশী মূল্যবান আমার কাছে আর কিছুই নেই । তবে পরিয়ে দে । ঋক অহনার হাতে আংটিটা পরিয়ে দেয় ।
আকাশে বেশ মেঘ করেছে ।এক্ষুনি মনে হয় বৃষ্টি নামবে । অনেকটা রাত হয়ে গেল । নিজের স্করপিও তে ড্রাইভ করে ফিরছিল ঋক । বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে মুষলধারে , অহনা ঋকের বুকে জড়িয়ে আছে। হঠাৎ ঋক লক্ষ্য করে সামনে চার পাঁচটা বাইক দাঁড়িয়ে আছে আর গাড়িগুলোর হেডলাইট জ্বলছে । ঋক গাড়িটা দাঁড় করাতেই কয়েকটি ছেলে গাড়িটার ওপর এলোপাথারি লাঠি চালাতে শুরু করে । দুজনকেই গাড়ির ভিতর থেকে টেনে বের করে আনা হয় । ওদের বুঝতে বাকি থাকে না বিকেলে যে ছেলেগুলোর সঙ্গে বচসা লেগেছিলো এরাই তারা । একটা ছেলে বলে ওঠে তখন তো খুব হিরোগিরি দেখাচ্ছিলি এখন কোথায় গেল ,, সব ফুর । ঋক – আমরা তোমাদের কি ক্ষতি করেছি বলো ? আমাদের ছেড়ে দাও । অতো তাড়া কিসের ? দাঁড়া তোর মালটাকে পরখ করে দেখি একটু । মুখ সামলে কথা বল শয়তান । সেই থেকেfollow করে তোদের বাগে পেয়েছি ।এক্ষুণি ছেড়ে দেবো । দুটো ছেলে অহনার ওড়নাটা টেনে খুলে দেয় । ওর সাথে নোংরামো করতে শুরু করে ।ঋকের রক্ত গরম হয়ে যায় । নিজেকে মুক্ত করে দৌড়ে যায় অহনাকে বাঁচাতে । ছেলেগুলোর সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হয় । একটা ছেলে ছোরা বের করে ভয় দেখানোর জন্য অহনার গলায় চেপে ধরে ।ঋক ভয় পেয়ে যায় ।আর একটা ছেলে বলে ওঠে আগে মজনুটাকে খতম কর তবে ওর লায়লাকে আমরা পাবো । বলতে না বলতেই আর একজন ছোরা বের করে ঋকের পেটে গুঁজে দেয় । অহনা চিৎকার করে ওঠে । ওকে মেরো না তোমরা আমায় মেরে ফেলো । রক্তে ভেসে যাচ্ছে ঋক । তবুও লড়াই করে যাচ্ছে ।ধস্তাধস্তিতে ছুরি লেগে অহনার গলার নলিটা কেটে যায় ।ছেলেগুলো ভয় পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায় । অহনা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে । ঋক কোনোরকমে অহনার কাছে আসতে গিয়ে মুখ থুবরে পড়ে । অহনা শরীরটাকে ঘষরাতে ঘষরাতে ঋকের কাছে আসে । অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে । হাত বাড়িয়ে ঋককে শেষবারের মতো ছুঁতে চেষ্টা করে অহনা । আঙুলে সেই ডায়মন্ড রিং । ঋক হাত বাড়িয়ে অহনার সিঁথিতে রক্ত চিহ্ন এঁকে দেয় । তুই আমাকে চেয়েছিলি না পাগলি । এই আমি তোর হলাম । দুজনেই অশ্রুসজল চোখে দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে চিরতরে না ফেরার দেশে যাত্রা করে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *