Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » আলোকবর্তিকা || Suchandra Basu

আলোকবর্তিকা || Suchandra Basu

[বিধবাবিবাহ প্রবর্তন আমার জীবনের সৎকর্ম।
আমি দেশাচারের নিতান্ত দাস নহি।নিজের বা
সমাজের মঙ্গলের নিমিত্ত যাহা উচিত বা আবশ্যক বোধ হইবে তাহা করিব]
ঊনবিংশ শতকের সমাজ কুসংস্কারময়
অজানা ছিল না তার জন্ম পরিচয়
ছিলেন মাতামহ শ্মশানবাসী সর্বসময়
বুঝেছিলেন এই শিশু সাধারণ তো নয়।
অন্তর্দৃষ্টিতে দেখেছিলেন শিশুর মুখটি তুলে
শ্মশানের ছাইয়ের টিপ দিলেন তার কপালে।
দীর্ঘশ্বাসে মঙ্গল কামনা করি
পাঠালেন তোকে স্বয়ং ঈশ্বর
ভাল রেখো বলি শ্রীহরি
বুঝে নিতে হবে তোকেই বিশ্বচরাচর।
পার হলো আজ জন্মের দ্বিশতবছর
স্মরণ সভায় জাগ্রত আলোকবর্তিকা বিদ্যাসাগর।
বর্ণের মাধ্যমেই তার সাথে পরিচয়
গড়তে চেয়েছিলেন সমাজ আধুনিক শিক্ষায়
ব্রাহ্মণ্যবাদী বিধবা বিবাহের বিরোধিতায়
স্বার্থান্বেষীরা বাধা স্বরূপ এসে দাঁড়ায়।
বারবার যুক্তি বিদ্ধ হয়ে পন্ডিতেরা পরাস্ত
তাদের মতে বিধবা বিবাহ লোকাচার অসম্মত
দৃঢ়চেতায় পরাশর সংহিতার যুক্তি প্রমাণিত
দেখালেন রেনেসাঁস যুগেও বিধবাবিবাহ শাস্ত্রসম্মত।
তিনি ধর্ম সংস্কারে ছিলেন না যুক্ত
চেয়েছিলেন সমাজ হোক কুসংস্কার মুক্ত।
হোক বহুবিবাহ বাল্যবিবাহ কৌলিন্য প্রথার রোধ
জাগুক শিশু মনেই পাশ্চাত্য দর্শন বোধ।
শিশু মনের বিকাশেই হোক মনুষ্যত্ব অর্জন
বীজ হিসাবে বর্ণপরিচয় শিশুশ্রেণীতেই হয় রোপণ।
বই লিখেই করেছিলেন তার বিপণন
চাকরি ছাড়াও বই লিখেই হতো অর্থ উপার্জন।
‘পরার্থে প্রাজ্ঞঃ উৎসৃজেৎ’উইলেই সার্থক রূপায়ণ,
তার মধ্যেই দেখা যায় আধুনিকতার প্রতিফলন।
তিনি ছিলেন গরীবের বন্ধু আত্মজন
আশা ভরসায় তিনিই একমাত্র বিপদভঞ্জন।
তিনি ছিলেন একাধারে বজ্রকঠোর মানবিকতায়
তাই আনন্দ পেতেন পরের সেবায়
প্রয়োজনে স্থাপন করতেন অস্থায়ী চিকিৎসালয়।
তিনিই ছিলেন অসহায়ের সহায়
ছিল না আর কেউ তার মতো দয়াময়,
ছিল যে কুসুম কোমল তার হৃদয়।
তিনি বলেন মিথ্যা সাংখ্য বেদান্ত
এর মধ্যে নেই কোন সত্য
প্রাচীন শাস্ত্র সকলই যেন অভ্রান্ত
ঈশ্বর,পরলোক,আহ্নিক অবিশ্বাস নিশ্চিন্ত।
শিক্ষক হবে ধর্মীয়সংস্কারমুক্ত হৃদয়বান
শক্তি ও দৃঢ়তায় নিজেই ইংলিশম্যান,
তাই সমাজে এনেছিলেন বৈপ্লবিক পরিবর্তন
করেছিলেন ঊনবিংশ শতকে স্ত্রীশিক্ষার প্রচলন।
যে আলোকবর্তিকা জ্বেলে হয়েছিলেন মহান
একুশ শতকেও সেই আলোকবর্তিকা দেদীপ্যমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress