এরপর অর্জুন বললেন, হে বাসুদেব, তুমি এই ক্ষণে
আমাকে যে বিশ্বরূপ দর্শন করালে
তা কি অন্য আর কেউ দেখতে পেয়েছে?
কৃষ্ণ বললেন, না, আর কেউ অধিকারী নয়
দেখো না, তোমার রকম সকম দেখে দু পক্ষেরই যুযুধান সবাই বিস্ময় বোধ করছে
অর্জুন বললেন, তুমি কৌরবসভাতেও একবার এই রূপ দেখিয়েছিলে, শুনেছি।
কৃষ্ণ বললেন, তা বটে। তখন প্রয়োজন হয়েছিল
অর্জুন বললেন, তখন কেউ কি বলেছিল, এ তোমার জাদুর খেলা
কৃষ্ণ সহাস্যে বললেন, তা কেউ বলতেও পারে, আমিই তো
এ বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাদুকর।
এই মহাবিশ্বও তো জাদুর খেলা
এই যে প্রস্তুতি, সামান্য, ক্ষুদ্র বীজ থেকে বনস্পতি
চাঁদের অদৃশ্য টানে সমুদ্রে জোয়ার
এও কি নয়, মহা ভোজবাজি? নাও, নাও, আর দেরি কোরো না
অর্জুন বললেন, আমার শেষ প্রশ্ন
তুমি তোমার অতুলনীয় জাদুবলে সমস্ত মানুষকে
নিরস্ত্র করে দিতে পারো না?
তা হলে তো আর যুদ্ধের প্রয়োজনই হয় না।
বন্ধ হয়ে যাবে সব রক্তক্ষয়, এই আত্মীয় হনন
মৃত্যুর সময় হলে মানুষ মরবে
আর যদি রেষারেষি, প্রতিস্পর্ধা না যায়, তা হলে
শুধু বাকযুদ্ধ থাক
কৃষ্ণ বললেন, কোনো প্রশ্নই শেষ প্রশ্ন নয়
সব প্রশ্নের উত্তরও পাওয়া যায় না
তোমার মন থেকে আমি এই প্রশ্ন মুছে দিচ্ছি
যারা যুদ্ধ করে, তারা এত প্রশ্ন করে না
নিজের বিবেকের কাছেও না!