Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হত্যা রহস্য || Panchkari Dey » Page 38

হত্যা রহস্য || Panchkari Dey

দুইদিন নগেন্দ্রনাথ অক্ষয়কুমারের আর কোন সংবাদ পাইলেন না। তৃতীয় দিবস বৈকালে একজন লোক আসিয়া বলিল যে, অক্ষয়কুমার তাঁহাকে তৎক্ষণাৎ তাঁহার সহিত দেখা করিতে বলিয়াছেন। ব্যাপার কি, সে কিছুই বলিতে পারিল না। কেবল বলিল, “তিনি এখনই, আপনাকে যাইতে বলিয়াছেন।” নগেন্দ্রনাথ নিতান্ত কৌতূহলাক্রান্ত হইয়া সত্বর অক্ষয়কুমারের সহিত দেখা করিতে চলিলেন। তাঁহার বাড়ীতে আসিয়া নগেন্দ্রনাথ দেখিলেন, অক্ষয়কুমার উমিচাঁদের সহিত বসিয়া আছেন। তাঁহাকে দেখিয়া অক্ষয়কুমার হাসিয়া বলিলেন, “আপনি এ খুনের ব্যাপারে গোড়া হইতে আমার সঙ্গে আছেন; উপসংহারকালে আপনাকে বাদ দেওয়া উচিত নয়।”

নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “ব্যাপার কি? খুনী কি ধরা পড়িয়াছে?”

“না, এখনও পড়ে নাই; তবে আর ধরা পড়িবারও বড় বেশী বিলম্ব নাই।”

“ব্যাপার যে কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না।”

“এই চিঠিখানা দেখুন।”

এই বলিয়া অক্ষয়কুমার একখানা পত্র তাঁহার সম্মুখে ফেলিয়া দিলেন। নগেন্দ্রনাথ দেখিলেন, পত্র উমিচাদের নামে।

অক্ষয়কুমার পত্রখানি খুলিয়া পাঠ করিলেন। পত্রের মর্ম্ম এইরূপ যে, কাল রাত্রি এগারটার সময়ে উমিচাঁদবাবু যদি বীডন গার্ডেনের পূৰ্ব্ব-দক্ষিণ কোণে আসেন, তবে রাণীর গলির খুনের সকল বিপদ্ হইতে তিনি রক্ষা পাইতে পারেন। একাকী আসা চাই। সেইখানে ঠিক সেই সময়ে একজন ভদ্রলোক আসিয়া চুরুট ধরাইবার জন্য দিয়াশলাই চাহিবেন। তাঁহার সহিত কথা কহিলেই সকল কথা জানিতে পারিবেন।

পাঠান্তে নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “কে চিঠি লিখিয়াছে, জানিবার উপায় কি?”

উমিচাঁদ ব্যগ্রভাবে বলিল, “যে খুন করিয়াছে, সে-ই লিখিয়াছে।”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “হাঁ আমারও বিশ্বাস, যে খুন করিয়াছে, সে-ই এ পত্র লিখিয়াছে; সে রঙ্গি য়াকে খুন করিবার সময়ে নিশ্চয়ই উমিচাঁদকে দেখিয়াছিল। উমিচাঁদ যে এই খুনের জন্য বিপদে পড়িয়াছে, তাহা আমরা ছাড়া আর কেহ জানে না; সুতরাং এই ব্যক্তিই খুনী। এখন উমিচাদের সঙ্গে টাকার বিষয়ে একটা বন্দোবস্ত করিতে চায়।”

নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “কতকটা সম্ভব বটে।”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “সম্ভব নয়—ঠিক।”

নগেন্দ্রনাথ হাসিলেন। পূর্ব্বে অক্ষয়কুমার এইরূপ ‘ঠিক’ অনেকবার বলিয়াছেন এবং প্রতিবারই তাঁহাকে তাঁহার মতের পরিবর্ত্তন করিতে হইয়াছে। তাঁহাকে হাসিতে দেখিয়া অক্ষয়কুমার বলিলেন,

“এবার দেখিবেন, আমার কথাই ঠিক।”

“আপনি কি উমিচাঁদের সঙ্গে এই লোককে ধরিতে যাইবেন?”

“নিশ্চয়ই—আপনিও যাইবেন। উপসংহারকালে আপনারও থাকা চাই—আপনাকে ছাড়িব না।”

“তা ত নিশ্চয়ই যাইব। কিন্তু উপসংহার হয় কি আবার সূচনা হয়, তাহা দেখা চাই।”

উমিচাঁদ বলিল, “তাহা হইলে আমি এখন যাইতে পারি?”

অক্ষয়কুমার উত্তর করিলেন, “হাঁ, এখন যাও। রাত্রি ঠিক এগারটার সময়ে বীডন গার্ডেনের পূৰ্ব্ব-দক্ষিণ কোণে দাঁড়িয়ে থাকিয়ো—আমরা কাছেই থাকিব।”

উমিচাঁদ চলিয়া গেলে নগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “ইনিও একটি প্রকাণ্ড বদমাইস।”

অক্ষয়কুমার হাসিয়া বলিলেন, “আমাদের অনেক সময়ে কাঁটা দিয়া কাঁটা তুলিতে হয়। বেটা টাকাগুলা বেশ গাফ্ করিয়াছিল, কিন্তু শেষে ফেরৎ দিয়াছে।”

“কেবল ভয়ে—বেটা একটি পুরাতন পাপী।“

“এ বেটাকে হাতে না পাইলে এই খুনীকে ধরা শক্ত হইত।”

“যাক্, এখন কে এই চিঠি লিখিয়াছে, আপনি মনে করেন?”

“যে হুজুরীমল আর রঙ্গিয়াকে খুন করিয়াছে।”

“কে সে? আপনার অনুমান কিরূপ?”

“নিশ্চয়ই আমাদের কোন পরিচিত বন্ধুকেই দেখিতে পাইব।”

“কে গুরুগোবিন্দ সিং?”

অক্ষয়কুমার হাসিয়া বলিলেন, “নগেন্দ্রনাথবাবু, আপনি কি কোনরূপেই গুরুগোবিন্দ সিংকে ছাড়িতে পারিবেন না? গুরুগোবিন্দ সিং যে খুন করে নাই, তাহার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়াছে।”

“তবে কে আপনি মনে করেন?”

“আর কিছু মনে করিব না, তাহাতে খুবই অরুচি হইয়া গিয়াছে। আজ রাত্রেই সকল সন্দেহ ভঞ্জন হইবে।”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress