Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » হত্যা রহস্য || Panchkari Dey » Page 13

হত্যা রহস্য || Panchkari Dey

যখন অক্ষয়কুমার দেখিলেন যে, যমুনা কতক প্রকৃতিস্থ হইয়াছে, তখন তিনি বলিলেন, “আপনাকে আরও দুই-একটা কথা জিজ্ঞাসা করিতে ইচ্ছা করি।”

যমুনা মৃদুস্বরে বলিল, “বলুন।”

অক্ষয়কুমার বলিলেন, “বড়বাজারে রাণীর গলিতে আপনাদের দাসী রঙ্গিয়া হুজুরীমলবাবুর সঙ্গে রাত বারটার সময়ে দেখা করিয়াছিল; সেই সময়ে হুজুরীমল খুন হন।”

যমুনা ব্যগ্রভাবে বলিল, “তবে কি সে তাঁকে খুন করেছে?”

“না—তাহার সঙ্গে আর একজন পুরুষমানুষ ছিল। তাহারা দুইজনে গঙ্গার ধারে যায়; তাহার পর সেখানে রঙ্গিয়াও খুন হয়। তার সঙ্গী নিশ্চয়ই খুন করে নাই; কারণ তাহা হইলে সিন্দূরমাখা শিবের দরকার হইত না।”

যমুনা চমকিত হইল। অক্ষয়কুমারের তীক্ষ্ণদৃষ্টি তাহা দেখিল। তিনি বলিলেন, “এ বিষয়ে আপনি কি জানেন?”

যমুনা কম্পিতস্বরে কহিল, “কি–কি—কি বিষয়ে?”

অক্ষয়কুমার পকেট হইতে তাড়াতাড়ি শিবলিঙ্গটি বাহির করিয়া যমুনার ক্রোড়ে নিক্ষেপ করিয়া কহিলেন, “এই—এই বিষয়ে।”

সহসা কেহ গায়ের উপরে সাপ ফেলিয়া দিলে যেরূপ হয়, যমুনারও ঠিক তাহাই হইল। সে একবার বিস্ফারিতনয়নে অঙ্কস্থিত শিবলিঙ্গের দিকে চাহিল; তখনই সে মূৰ্চ্ছিতা হইল। অক্ষয়কুমার গম্ভীরভাবে কেবলমাত্র বলিলেন, “ওঃ–তুমিও তবে ইহার ভিতরে আছ!”

নগেন্দ্ৰনাথ মহাক্রুদ্ধ হইয়া লাফাইয়া উঠিলেন। এবারে তিনি আর রাগ সাম্‌লাইতে পারিলেন না। অক্ষয়কুমারকে কঠিনকন্ঠে কহিলেন, “দেখিতেছেন না, ইনি অজ্ঞান হইয়াছেন—এঁর দাসীদের শীঘ্র ডাকুন।”

অক্ষয়কুমার হাসিয়া বলিলেন, “বসুন—অত ব্যস্ত হইতে হইবে না। এইখানে জল আছে, হৃদয়ে ব্যথা পাইয়া থাকেন—মুখে জল দিন।”

নগেন্দ্রনাথ ঔপন্যাসিক—তাঁহার মনটা কোমল; তিনি এরূপ সুন্দরীর এরূপ কষ্টে বড় ব্যথিত হইলেন। তিনি সত্বর জল আনিয়া অতি যত্নে যমুনার মুখে ধীরে ধীরে সিঞ্চন করিতে লাগিলেন।

যমুনা কিয়ৎক্ষণ পরে দীর্ঘনিঃশ্বাস পরিত্যাগ করিল। তৎপরে ধীরে ধীরে চক্ষুরুন্মীলন করিল। বোধ হয়, প্রথমে সে কি হইয়াছে স্মরণ করিতে পারিল না—চারিদিকে ব্যাকুলভাবে চাহিতে লাগিল। সহসা তাহার সকল কথা মনে পড়িল; সে কাঁপিতে কাঁপিতে উঠিয়া দাঁড়াইল; এবং গৃহ হইতে বহির্গত হইবার প্রয়াস পাইল; কিন্তু অক্ষয়কুমার তাহার পথরোধ করিয়া সম্মুখে দাঁড়াইলেন। বলিলেন, “আমার সকল কথার জবাব না দিলে আমি যাইতে দিতে পারি না।”

যমুনা সকরুণনেত্রে নগেন্দ্রনাথের দিকে চাহিল। সে দৃষ্টি নগেন্দ্রনাথের হৃদয়ে আঘাত করিল। কিন্তু তিনি কিছুই করিতে পারেন না, নীরবে দাঁড়াইয়া রহিলেন।

তখন যমুনা কাতরকন্ঠে বলিল, “আমার বড় অসুখ করিতেছে।”

এবার নগেন্দ্রনাথ কথা না কহিয়া থাকিতে পারিলেন না—বলিলেন, “অক্ষয়বাবু, দেখিতেছেন না, ইঁহার অসুখ করিয়াছে।”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress