Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

উপসংহার

রহমতের জিপ সবে পোর্টিকোর তলায় ঢুকছে, এমন সময় মিঃ পাণ্ডের পুলিশ জিপও এসে হাজির। পাণ্ডেকে উত্তেজিত দেখাচ্ছিল। বারান্দায় উঠে ব্যস্তভাবে বললেন, য়ু আর রাইট কর্নেল সরকার। ডাকঘরের বারান্দায় যে লোকটা টাইপ করে, তার নাম বদ্রিনাথ প্রসাদ। জেরার চোটে কবুল করেছে, রাকেশের নামে চিঠিটা সে অনিলবাবুর অনুরোধে টাইপ করেছিল। কাজেই অনিল সাঁতরাকে শেষরাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদিকে রাকেশ শেষ পর্যন্ত স্বীকার করেছে, বাচ্ছ তাকে বলেছিল অনিল চোরাই মালের জিম্মাদার। তারা দুজনে মিলে মালটা উদ্ধার করেছে। রাকেশ যেন পাটোয়ারিজির সঙ্গে কথা বলে রাখে। রাতেই তারা মাল নিয়ে যাবে। কিন্তু কথামতো বাচ্চু এবং অনিল সে রাতে যায়নি। পরদিন সকালে অনিল একা রাকেশকে সঙ্গে নিয়ে পাটোয়ারিজির কাছে কথা বলতে যায়। পাটোয়ারিজি বলেন, মাল না দেখে দরদাম হবে না। অনিল কিন্তু আর যায়নি। কেন যায়নি, তা ওকে জেরা করে জেনে নেওয়ার চেষ্টা চলেছে। দেখা যাক।

কর্নেল নিভে যাওয়া চুরুট ফেলে বললেন, সকালে মুসহর বস্তিতে গিয়েছিলাম। ভারুয়া নামে একটা লোক বলল, কিছুদিন থেকে অনিল সাঁতরাকে সে কেল্লাবাড়িতে ঘুরঘুর করতে দেখত। আর যখনই অনিল সেখানে যেত, বটোবাবু তাকে আড়াল থেকে ফলো করত। ভারুয়া জাত শিকারি। তার সঙ্গে কথা বলে বুঝেছি, তার দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ণ। কাজেই বোঝা যাচ্ছে, বটোবাবুর ফলো। করে বেড়ানো অনিলের চোখে পড়ে থাকবে। তাই সে সতর্ক হয়ে গিয়েছিল। কর্নেল আমার দিকে ঘুরলেন। হাওড়া স্টেশনে বটোবাবুর শেষ সংলাপে আরও একটি মাত্রা যোগ করা চলে। উনি বলেছিলেন, কিন্তু তা কি করে সম্ভব? ভারি অদ্ভুত তো। তার মানে, নবকুমারবাবু কলকাতা এসেছে। কাজেই তার খুন হওয়া সম্ভব নয়। এরপর ভারি অদ্ভুত তো কথাটার মানে আরও অর্থবহ হচ্ছে, ছেলের বাবাকে খুন করা ভারি অদ্ভুত। যাই হোক, বটোবাবু কলকাতা ছুটেছিলেন। বাচ্চুকে জানাতে যে, অনিল কেল্লাবাড়িতে বড্ড বেশি ঘুরঘুর করে বেড়াচ্ছে। কারণ বাচ্চু তার চিঠিতে সাড়া দেয়নি।

বললাম, কিন্তু নবকুমারবাবুই যে ভিকটিম হতে পারেন, বটোবাবুর মাথায় এ ধারণা কেন এল?

পাণ্ডে একটু হেসে বললেন, দ্যাটস অ্যানাদার স্টোরি। পাটোয়ারিদের সঙ্গে সাঁতরাদের রেষারেষি আছে। হয়তো পাটোয়ারির ভাতিজার মুখে তেমন কিছু শুনে থাকবেন বটোবাবু। মাঝেমাঝে দুদলে মারপিট বেধে যায়। এই কেসের সঙ্গে ওটার সম্পর্ক নেই। বেওসায়ি লোগোঁকা কাজিয়া।

কর্নেল বললেন, তো বটোবাবু সত্যি রক্ত দেখেছিলেন এবং লাশ উদ্ধারের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। অনিল তক্কেতক্কে ছিল। পাঠাগারের ইন্দুবাবু বলেছিলেন, আনিল ফেরোসাস। পেটাই শরীর দেখলেই বোঝা যায়, শরীর চর্চা করত। তার পক্ষে বটোবাবুর শাবল কেড়ে নিয়ে তাকে মারা খুব সহজ কাজ। দ্বিতীয় লাশটা পুঁতে ফেলার সুযোগ অনিল পায়নি। দিনের আলো ফুটেছিল।

পাণ্ডে বললেন, কিন্তু কর্নেলসায়েব, হোয়্যার ইজ দ্যাট সোয়াস্তিকা? অনিলের বাড়ি সার্চ করে পাইনি।

কর্নেল সে কথার জবাব না দিয়ে কৃপানাথকে কফি আনতে বললেন। তারপর বললেন, এই চিঠির কপিগুলো রাখুন। এতে একটা অভিধানের উল্লেখ আছে। পরে বুঝিয়ে বলব। আসলে মকর, কচ্ছপ এবং রপট শব্দের রহস্য ফাঁস করার মতো অভিধান ভীমগড়ে দুর্লভ। সাধারণ বাংলা অভিধানে মকর অর্থ কুমির এবং কচ্ছপ অর্থ কাছিম পাওয়া যাবে। রপট অর্থ যদি বা পাওয়া যায়। তাতে নদী বা স্রোত বোঝাবে। কিন্তু শব্দাভিধানে মকর যে গঙ্গার এবং কচ্ছপ যে যমুনার বাহন, তার উল্লেখ থাকবে। কাজেই এক ঢিলে দুই পাখি বধের মতো অনিল বাচ্চুর শরণাপন্ন হয়েছিল। আভিধানও এল এবং বাচ্ছ পাশে থাকলে সে নির্ভয়ে কাজ করতে পারবে। বাচ্চু ছিল দুর্দান্ত প্রকৃতির যুবক।

পাণ্ডে চিঠির কুচিগুলো রুমালে বেঁধে বললেন, হ্যাঁ, ওর নামে পুলিশ রেকর্ডে অনেক সাংঘাতিক তথ্য আছে। এরিয়ার সব মাফিয়া দলই ওকে সমীহ করে চলত। মিসেস দয়াময়ী সাঁতরা ওকে জেনেশুনেই পোষ্যপুত্র নিয়েছিলেন। বাচ্চু না থাকলে ওঁর দেবর ওঁকে প্রপার্টি থেকে বিঞ্চিত করতেন।

কফি এল। কর্নেল বললেন, কফি খেয়ে নার্ভ চাঙ্গা করুন মিঃ পাণ্ডে। স্বস্তিকা একটি জায়গাতেই লুকিয়ে রাখা অনিলবাবুর পক্ষে সম্ভব। পোস্ট অফিসের পার্শেল রুমে। চট বা ওই জাতীয় কিছু ধরুন পিচবার্ডের মোড়কে পেয়ে যাবেন। ভুয়া নামঠিকানাও লেখা থাকতে পারে।

কফি খেয়েই পাণ্ডে জিপ নিয়ে বেরিয়ে গেলেন। কর্নেল মিটিমিটি হেসে বললেন, ডার্লিং। আমরা বরং ব্রেকফাস্ট করেই বেরুব। আর তাড়া দেখছি না। বলে সকৌতুকে ফিসফিস করে বললেন, অনিলবাবুর সঙ্গে দেখা করার দিন পাশের পার্শেল রুমে একটা বেখাপ্পা সাইজের পার্শেল দেখেছিলাম। খটকা লেগেছিল। ডাকে এই সাইজের পার্শেল পাঠানো যায় না…..।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10
Pages ( 10 of 10 ): « পূর্ববর্তী1 ... 89 10

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *