স্বপ্ন ভঙ্গ – 2
সেদিন সব নিয়ম আচার শেষে পিয়ালীকে সবাই তার নিজের ঘরে নিয়ে যায়, ওদের খাটটা বেশ সুন্দর করে সাজানো বিয়ে বাড়ির অনাড়ম্বর ব্যাপারস্যাপার দেখে পিয়ালী এতটা আশা করেনি। মনে মনে ভাবলো যাক এখানে অন্তত কোনো কার্পণ্য করেনি তার শশুরবাড়ির লোকজনেরা। বেশ কিছুক্ষন ধরে অপেক্ষা করছে সৌরভের কোনো দেখা নেই এবার ওর খুব অধৈর্য লাগছে আর খুব অবাক ও। অনেক কিছু মনে মনে ঠিক করে রেখেছে সে সৌরভকে বলার জন্য। যাই হোক বেশ কিছুক্ষন বাদে সৌরভ এলো কিন্তু সাথে ওর মামাতো বোন সীমা।
দাদাভাইকে বেশি রাত পর্যন্ত জাগিও না বৌদি, ওর অভ্যেস নেই কষ্ট হবে এমনিতেই এই কদিন ধরে ওর ঠিক মতো খাওয়া ঘুম কিছুই হয়নি, আজকে ওকে একটু বিশ্রাম নিতে দিও, তোমার কথা বলার জন্য তো এখন তো সারাজীবন পরে রইল ওকে আজকে আর বিরক্ত করো না। দাদাভাই তুমিতো আজকে পাশের ঘরে ও শুতে পারো তোমার রেস্ট দরকার। তুমি চলো আমার সাথে আমি আমার পাশের ঘরে তোমার শোওয়ার ব্যাবস্থা করে রেখেছি।
পিয়ালী খুব অবাক হয়ে সৌরভের দিকে তাকিয়ে থাকে। সৌরভ একটু, অপ্রস্তুত হয়ে বলে তুই যা আমি শুয়ে পরবো, তুই এখনও এই ঘরে আছিস জানলে মা রাগ করবে। অগত্যা সীমা আর কোনো কথা না বলে বেরিয়ে গেলো। যেতে যেতে আবারো পিছন ফিরে তাকালো সীমা!!! আহ্, সীমা তুই জানা বললাম তো আমি শুয়ে পরবো, চিন্তা করতে হবে না। সীমা বেরিয়ে যেতেই সৌরভ দরজাটা লাগিয়ে দেয়।
কিছুক্ষন দুজনেই নির্বাক, মৌনতা ভেঙ্গে সৌরভ বলে উঠলো তুমি ওর কথায় কিছু মনে করো না, ও একটু এরকমই এ বাড়ির সবাইকে নিয়ে একটু বেশিই ভাবে।মা ও ওকে খুব ভরসা করে, বাবার তো ও চোখের মণি। এ বাড়িতে ওর একটা আলাদা জায়গা।
পিয়ালী উত্তরে বলে উঠলো হ্যাঁ সেটা আমি বেশ বুঝতে পারছি, আর এটাও বুঝতে পারছি ও তোমাকে নিয়ে একটু বেশিই ভাবে। আমার ও তোমার সাথে কিছু কথা ছিল কথা গুলো বলা জরুরি!!! আমাদের অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ কেউ কউকে ভালো করে চিনি না জানি না আমাদের একে অপরকে ভালো করে চিনতে জানতে হবে আগে তার জন্য সময় দরকার!!! বলতে বলতে পিয়ালী থেমে গেলো: আমি কি কিছু ভুল বলে ফেললাম? তুমি কিছু বলছো না যে?
—— শুনছিলাম, তোমার কথাগুলো!! বলে পিয়ালীর হাতটা শক্ত করে নিজের হাতে চেপে ধরলো! কিন্তু ম্যাডাম আজকেই যদি সব চেনাজানা সারতে চান? তাহলে তো রাতটাই ফুরিয়ে যাবে!! একসাথে থাকতে থাকতে ধীরে ধীরে না হয় চিনে নেবো_ কি চলবে না? এই দেখো কথায় কথায় তোমার গিফ্টটাই তোমাকে দেওয়া হলো না। এরপর খুব শক্ত করে পিয়ালীকে জড়িয়ে ধরে নিজের ঠোঁটের মধ্যে পিয়ালীর ঠোঁট দুটোকে নিয়ে আদরে আদরে ভরিয়ে দিচ্ছিল। পিয়ালী ও যেনো নিজেকে সপে দিয়েছিল নিজের ভালোবাসার মানুষটার কাছে। কিন্তু হটাৎ দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে দুজনেই একটু ঘাবড়ে গেলো, কোনো রকমে পিয়ালী নিজের পোশাক ঠিক করে নিল সৌরভ তাড়াতাড়ি করে দরজা খুলতেই দেখে সীমা দাঁড়ানো, কিছু না বলেই সে ঘরে ঢুকে এলো !!!! ” আমিই ঠিক বুঝেছিলাম, জানতাম আমি তুমি দাদাভাইকে ঘুমোতে দেবে না!!! বলেছিলাম দাদাভাই আমার পাশের ঘরে শোবে চলো, এক রাতে কি তোমার বউ অন্য করো হিয়ে হয়ে যেত?” যা ইচ্ছে করো তোমরা। বলেই খুব রাগ দেখিয়ে পিয়ালীর দিকে তাকিয়ে বেরিয়ে গেলো।
রাতটা এই ভাবে কেটে গেলো……. পরের দিন ভোর।