Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » স্বপ্ন || Samarpita Raha

স্বপ্ন || Samarpita Raha

আমি অঘোরে ঘুমাচ্ছিলাম আর চিৎকার করে বলছিলাম ওকে বাঁচাও।কে কোথায় আছো শীঘ্রই হাসপাতালে নিয়ে চলো….একমাত্র অবলম্বনকে কেড়ে নিওনা।

তারপর বরের ধাক্কা এই সোমা কি হয়েছে..এত ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে কাঁদছ কেন?স্বপ্ন দেখছিলে!!কি স্বপ্ন দেখলে গো?আমি মরে গেছি।

বলতে গিয়েও বলি নি কারণ মা বলতেন স্বপ্ন কাউকে বলতে নেই।আর এতো দুঃস্বপ্ন।বলে দিলে হয়ত সাবধানে গাড়ি চালাবে।স্বপ্নেতো বাইক দেখলাম।আমার বরতো বাইক চালাতে জানে না।

বর বলে শোনো আমার গাড়ি সার্ভিসিং- এ দিয়েছি…বাসে করে অফিস যেতে হবে।ফেরার সময় গাড়ি নিয়ে ফিরব।
বর খেতে বসে বলে… বললে নাতো কি স্বপ্ন দেখলে?নিশ্চয় প্রাক্তন কোন প্রেমিকের।

জানো একবার এক স্বপ্নের কথা বলে ফেলেছিলাম…সেটা ফলে গেছিল..তাই আর জিজ্ঞেস করো না।আমার মা আমাকে ডাইনী,রাক্ষসী,ভাইকে আমি মেরেছি বলত। সেই দশ বছর থেকে একঘরে করে দিয়েছিল।শৈশব থেকে হস্টেলে থাকতাম।

বিয়ে হয়েছে আমাদের প্রায় সাত মাস।সোমা নিজের মধ্যে এত দুঃখ রাখা।তোমাকে মা ডাইনী বলতেন!!
একদিন ভোরে স্বপ্ন দেখি আমার প্রাণের চেয়ে প্রিয় একমাত্র ভাই মরে গেছে। তারপর মাকে বলতেই মা সজোরে থাপ্পড়।ঐ দিন বিকেলে ভায়ের স্কুল বাস দুর্ঘটনায় পড়ে।ভাই তিনদিন ধরে লড়তে লড়তে চলে যায়।দশ বছর বয়সে আমার ভায়ের জন্য কান্না কারো চোখে পড়ে নি।মা যে সৎমায়ের মতো আচরন করবেন বাবা ও ভাবতে পারেন নি।তাই হস্টেলে থেকে একাই বড় হয়।

আজকের স্বপ্নটা কি দেখলে বলো..?
একটা সত‍্যি হয়েছে বলে সব হবে??

.আমি দেখলাম আমার জবা গাছটি গরুতে খেয়ে গেছে।একটা ঘটনা সত্যি হয়েছে বলে সোমা বরকে মিথ্যা বলে খুশি হল। যদি স্বপ্নটা সত্যি হয় তাহলে তারই ক্ষতি হবে।

ওমা বিকেলে মালী বলল কিছুক্ষণের জন্য চোখটা লেগে গেছিল জবা গাছটা গরুতে মুড়িয়ে খেয়ে গেছে।

আমি মালীকে বলি সাহেবকে বলার দরকার নেই।গাছটাতো আমি কিনে এনেছি।

এদিকে বর অফিস থেকে ফিরে বলে তোমার শখের গাছ গরু খেয়ে নিয়েছে।

মনে মনে ভাবলাম মালীকে বারণ করলাম তাও বলে দিল।

বর আচমকা বলে ওঠল এটা তুমি স্বপ্নে দেখেছিলে না??

আমি কি করে বলি!
না এটাতো বানিয়ে বলেছি।

বর অন‍্যমনস্ক হয়ে বলে আর স্বপ্নের কথা বলো না।

আমি মনে মনে ভাবি আমি কি সত‍্যি ডাইনী।মুখ দিয়ে যা বের হয় তাই ঠিক হয়ে যায়।
এরপর বাস্তবে থেকে একটু দূরে মন কল্পনায় ভেসে বেড়াতে থাকে।
ভয়ংকর এক রোগ আমাকে চেপে বসে।আমি চুপ করে মনের ডাক্তার দেখাই।ডাক্তার বলেছেন যা ভবিতব্য তা হবেই ।আমাকে পরের ব‍্যাপারে ভাবতে বারণ করা হয়েছে।কল্পনায় ভেসে বেড়াবেন… বেড়াতে গেছি দেখবেন।প্রচুর জিনিস কিনেছেন দেখবেন।
একদিন স্বপ্নে দেখলাম চাঁদে গেছি মাটি আনতে…. জবা গাছে মাটি দেব বলে।
মনের সুখে আমি ভেসে বেড়াচ্ছি।আমার ওজন বাহাত্তর নয় বারো কেজি ওজন।
চাঁদ থেকে বাড়ি ফিরতে ইচ্ছা করছিল না।কিন্তু বাড়ি এসে বরের অফিসের রান্না করতে হবে । তাই ঘুমিয়ে কান্নাকাটি করছিলাম।

বরের ধাক্কায় জেগে উঠি।বর বলে স্বপ্নের কথা বলতে হবে না।

আমি বলি স্বপ্নটা শুনলে তোমার ভালো লাগবে।আমি প্রায় জোর করে শোনালাম।

তারপর হেসে ফেলেন।
বলেন সত্যি যদি বারো কেজি ওজন হয়ে যাও..তাহলে কি হবে!!
তারপর বর বলে সব ঈশ্বরের হাত কাকে রাখবেন ও কাকে তুলে নেবেন।
তবে চাঁদে গেলে ওজন একের ছয় অংশ হয়ে যায় সেটা তোমার মনে ছিল।
এক কাজ করো এখন থেকে কল্পনায় ভেসে কল্পনা চাওলা হয়ো না।এক কাজ করো আমাদের তো কোনো সন্তান নেই তুমি লিখতে শুরু করো।কবি হয়ে যাও।লেখাতে মনোনিবেশ করো।
লিখব আর কি !!!
কল্পনায় কখনো যাচ্ছি― শান্তিনিকেতন…শপিং করতে যাওয়া।
বর বলেছে কল্পনায় বেশি দূর যেতেনা।ফিরতে কষ্ট হবে।

বাস্তবটা আর ভাবিনা।কেননা ঐ ভায়ের মৃত্যু..যেমন মা আমাকে দোষী ভাবত।তাই “বাস্তব থেকে একটু দূরে ” কল্পনায় হাতরে বেড়াই।
ডাইনী অপবাদ নিজের মা যদি দিতে পারে তাহলে বাস্তব সমাজ ও দিতে পারে।মাঝে মাঝে শুনতে পাই ডাইনী সন্দেহে গ্রামবাসীরা পিটিয়ে আধমরা করে দিয়েছে কোনো এক মহিলাকে।তার ভবিতব্য নাকি লেগে যেত। মনের ডাক্তার দেখালে সবাই ভালো হয়ে যায়।অনেকে নিজেকে পাগল ভাবতে পারে না ।তাই সাইকাটিস্টের কাছে যেতে চাই না।আমাদের সকলের মধ্যে পাগলামি সুপ্ত থাকে।কারর একটু বাড়াবাড়ি থাকলে কাউন্সিলিং করলে ভালো হয়ে যায়।

আমি আমির খানকে খুব ভালবাসতাম।শয়নে স্বপনে আমিরকে দেখতাম।এই স্বপ্নটা মনের ডাক্তারকে বলেছিলাম।উনি বলেছিলেন এখনতো আপনার বিয়ে হয়ে গেছে ।তখন জ্ঞান দিয়েছিলেন বাস্তব থেকে দূরে কেন যাচ্ছেন..ওরাতো রুপোলি জগতের লোক।আমারতো মনে হয় ঐ মনের ডাক্তারের চিকিৎসার দরকার।একবার বলেন বাস্তব থেকে একটু দূরে যান ।আবার কখনো বলে বাস্তবের সঙ্গে থাকুন।
আমি অলীক কল্পনায় ভেসে নাসায় যাচ্ছি মরা তারা নিয়ে গবেষণা করছি।বেশ কটা মরা তারা দেখতে পেয়েছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *