সোহেলী
রথের মেলায় জমজমাট ভিড়।
মেলার চোখ ধাঁধানো জৌলুসে সোহেলীর চোখে একরাশ বিস্ময় মাখানো মুগ্ধতা।
সারি সারি দোকানে নানারকম পসরা সাজিয়ে বসেছে দোকানীরা।সুন্দর সব পুতুল,খেলনা গাড়ি, জামা,কাপড় ,জুতো,বাসন কোশন,সন্দেশের সাজ কতো কী।
অন্যদিকে সাঁই সাঁই করে নাগড়দোলা চলছে।টয়ট্রেনে সোহেলীর বয়েসী ছোটরাও আছে।ওদিকে মাইকে জোর গলায় ঘোষনা চলছে,ম্যাজিক দেখতে হলে চলে আসুন।
মেলায় কী নেই বাপরে! মিষ্টি, তেলেভাজা, জিলিপি, বোম্বেচাট , পেঁয়াজি – গন্ধে ম- ম করছে।
বাবা মেয়ের দিকে তাকান– মামনি,তুমি কি নাগড়দোলা চড়বে? ম্যাজিক দেখবে? আচ্ছা,বলো ,কি খাবে তুমি?
সোহেলীর চোখদুটো ততোক্ষণে আলোয় ভরে উঠেছে,বাবাকে টেনে নিয়ে চলে- চলো না বাপি,ওই দোকানে–
বাবা অবাক হয়ে দেখেন- দোকানটাতে রঙবেরঙের কাঁচের চুড়ি।
সোহেলী দারুণ খুশি– কি সুন্দর চুড়িগুলো তাইনা বাপি?
আমি ওগুলোই নেবো, দেবে বাপি?
লাল নীল সবুজ চুড়ি দোকানদার সোহেলীর হাতে পরিয়ে দিতে আহ্লাদে আটখানা সোহেলী।
মেলায় লোকজনের ঠাসা ভিড়ে প্রচুর ঠেলাধাক্কা চলছিলো।দরদর করে ঘামছেন সোহেলীর বাবা।পকেট থেকে রুমালটা বের করে মুখ,ঘাড় মুছতে গিয়ে মানুষের ঠেলাঠেলিতে সোহেলীকে ধরে রাখা হাতটা ফসকে গেলো।
ব্যতিব্যস্ত বাবা পাগলের মতো খুঁজতে থাকেন সোহেলীকে। নাহ্ ভিড়ের চাপে এগোনো তো দূর পিছনোও যাচ্ছেনা,সোহেলী কোথায়!
যতদূর চোখ যায় দিশেহারা উদভ্রান্তের মতো খুঁজতে থাকেন। মেলা থেকেই এনাউন্স করা হয় বারবার, কিন্তু সোহেলী যেন কর্পূরের মতোই হারিয়ে গেলো।
উন্মাদের মতো বুকফাটা চিৎকার করে উঠেন– সো- হে- লী— কোথায় মা? সো-হে-লী–