কাকপক্ষী, প্রজাপতি, পারাবত, পেলব বেড়াল
ইত্যাদির প্রতি আমি ঈর্ষান্বিত, কেননা তোমার
বাড়িতে তাদের গতি উন্মুক্ত অবাধ; কিন্তু আমি
সেখানে পারি না যেতে নির্দ্বিধায় যখন-তখন
হলেও ইচ্ছায় সকাতর। ইচ্ছা কুকুরের মতো
লোভী আর এমন সুদৃঢ় চেন, বকলস নেই
যা দিয়ে বাঁধবো তাকে, রাখবো স্ববশে। ইচ্ছা হয়,
ভারি ইচ্ছা হয় যাই তোমার বাড়িতে বার বার।
সেখানে ড্রইংরুমে নেই সুশোভন টিভি,
দামি আসবাবপত্র কিছু নেই, এমনকি হায়
চায়ের বাটিও ঠুঁটো, ডানাভাঙা নিঃসঙ্গ মৃন্ময়ী
পরী তাকে, যেনবা বালিকাবধূ সংকোচে দাঁড়ানো।
তবুও তো সে-বাড়ির চতুঃসীমা, কৃপণ উঠোন,
সংকীর্ণ বিবর্ণ ঘর বড় ভাল লাগে, বার বার
চৌকাঠে দাঁড়াতে চাই, ব্যাকুল দেখতে চাই তুমি
হাসলে কেমন হাসো, কাঁদলে বালিশ কতটুকু
ভিজে ওঠে ব্যথাবাষ্পে, মেজাজের তেজিমন্দি তো-ও।
আমার ইচ্ছাকে আমি কিছুতেই পারি না দমাতে।
সে-বাড়িতে তুমি থাকো বলে অতি দরিদ্র উঠোন
নিমেষে উদ্যান হয়, ক্ষয়রোগীর মুখের মতো
কাঠের দরজা রাজ-তোরণের স্বপ্নময়তায়
কথা বলে অলৌকিক এবং কলের বিন্দু বিন্দু
জল কৃশ সাধকের জপমন্ত্র; সমস্ত বাড়িটা
জ্যোতিষ্কের বর্ণকৃতি পেয়ে যায়, দূর থেকে দেখি।