সাঙ্গা
”বুঝিতে পারিনি বঁধূ, তোমারি এ আঙিনা
তাই দেরী হল যে,দেরী হল যে ,তোমার কাছে আসিতে…..”ঝুমুরের মোহময় সুরে আবেশ লেগেছে আসরে।নাচনী বৃন্দার আবেসী গলা ও লাস্য সবাই কে মোহমুগ্ধ করে রেখেছে! আসর থেকে দূরে দাঁড়ি য়ে একমনে দেখছে…বিশু…বিশুসর্দার…শুশুনিয়ার বাউরি দের মোড়লের ছেলে।আজ একবছর ধরে সে বৃন্দার নাচ গানে র আসর সে অনু সরণ করে চলেছে।প্রথম যেদিন ও বৃন্দা র গান শোনে …ও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে . .. সে দিন টার কথা খুব মনে পড়ে …..বামুনডিহার গাজনমেলা….এখানে ওর মামা বাড়ি ….মামাতোভাই আর ও দুজনে লুকিয়ে ঝুমুরের আসরে ঢুকেছে…..অদ্ভুত একটা সুরেলা কণ্ঠ ওকে আবিষ্ট করে দেয়…..ভালো ছিল শিশুবেলা,যৌবন কেন আসিল
রাঙা ফুল ফুটলো ডালে,ভ্রমরা আসি জুটিলো…..
সুরের জাদুতে মন হারালো বিশু। কে গাইছে….খোঁজনিতে গিয়ে বৃন্দার কথা জান তে পারে।অনাথ বৃন্দা র মালিক দলের অধিকারী মাধবদাস। পাঁচবছরের ছোট্ট অনাথবৃন্দা কেএক মেলা থেকেকুড়িয়ে পেয়ে ছিল সে।নিজে র তিন মেয়ের সাথে একে মানুষ করেন …নাচ গান শেখান…ঝুমুর দলের মালিক তো।খালি নি জের মেয়েদের পাত্রস্হ করেন ….বৃন্দা কে রেখে দেন রোজকারের যন্ত্র হিসেবে….।ওরসুন্দর গানে র গলা ও শ্যামলা সৌন্দর্য….দুইই বিকেয় ভালো দামে।বিশু
বেশ কয়েক বার বৃন্দার কাছে গেছে….এ সব কথা ওর মুখেই শোনা ॥ যেখানে ই মাধবদাসের ঝুমুরের আসর বসে…বিশু যেমন করে পারে হাজির হয় সেখানে । দেখতে দেখতে দণ্ড পলের হিসেবে প্রায় দুবছর কেটে গেছে!বৃন্দা কেঅনেক কষ্টে রাজী করিয়েছে ঝুমুরেরদল ছেড়ে ওর সাথে ঘরবাঁধতে॥আজ শেষ আসর…..আজ ই বৃন্দা বিশুর সাথে দল ছেড়ে চলে যাবে।দলের সবাই জানে ব্যাপার টা। মাধবদাস কে রাজী করাতে যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়েছে….শেষে জ50হাজারটাকা কন্যাপণ দিয়ে রাজী করিয়েছে॥এবার সাঙ্গা করবে ওকে।
আসর শেষের মুখে….বিশু এগিয়ে গেল…ভীড়ঠেলে আসরে উঠে এল জোড়হাতে…..।বলে উঠলো…..ভদ্রজন একটা নিবেদন _আমি শুশুনি য়ার বিশুসর্দার…আপনাকার সুমুখে…ভৈরববাবা কে সাক্ষী করে নাচনী বৃন্দাকে সাঙ্গা করলাম….এইবলে ভৈরবথানে র মেটে সিঁদুরে বৃন্দা র সিথি রাঙ্গিয়ে বলে উঠলো….আজ থেকে বৃন্দাআমার স্ত্রী…..॥সারা আসর উলুধ্বনি তে মুখর…কে যেন শাঁখ বাজাতে লাগলো….ঝুমুরের আসর বিয়ের বাসরের রূপ নিলো…..॥