Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

সমকামি – ষষ্ঠ পর্ব

সেদিন দুপুরে তৃণা অন্যন্যাদের বাড়িতেই খাওয়া দাওয়া সারে বাড়িতে জানিয়ে দিয়েছিল ও। খাওয়া দাওয়ার পর ওরা আরো কিছুক্ষন গল্প করে তারপর বিকেলে চা খেয়ে সবার থেকে অনুমতি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে বাড়ির জন্য। যাবার আগে অন্যন্যাকে বলে: তুই কিন্তু মন খারাপ করবি না শক্ত থেকে সবকিছুর মোকাবিলা করতে হবে। তোকে ঠকানো হয়েছে তাই তোর ভয় পাবার ও কোনো কারণ নেই। শুধু একটু চোখ কান খোলা রেখে রাস্তায় চলবি কারণ ওদের আমিও ভরসা পাচ্ছি না তবে ভয় পাস না। দেশে আইন বলে একটা কথা আছে এখনো। ওদের ও নিশ্চয়ই সেটা জানা আছে। অন্যন্যা উত্তর দেয়: তৃণা বিশ্বাস কর আমার কোনো সমস্যা নেই ওর কার সাথে সম্পর্ক সেটা নিয়ে, সব সম্পর্কেরই একটা অর্থ আছে আমি এর বিরোধী নই তাতে কি যে যার সাথে সম্পর্ক সে একজন ওরই মতো পুরুষ। ভালো লাগার ভালোবাসার কোনো লিঙ্গ ভেদ হয় না বলেই আমিও বিশ্বাস করি। কিন্তু ও আমাকে এভাবে না ঠকালেই পারতো। আমাকে বলতো সত্যিটা, আমি নিজে এই বিয়েটা ক্যান্সেল করে দিতাম কাউকে কোনোদিন সত্যিটা জানতে ও দিতাম না। আমার সব স্বপ্নগুলো এভাবে নষ্ট না করে দিলেই পারতো। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আছে অন্যন্যার ভিতর থেকে। চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ে। তৃণা ওকে বোঝায় অন্যান্য ওরা যদি এটা বুঝতো তাহলে কি ওরা এই কাজটাই করতো? ভুল জায়গায় ভুল প্রত্যাশা করে কেনো কষ্ট পাচ্ছিস। চেষ্টা কর নরমাল লাইফে ফেরার। তুই অফিস জয়েন কর ঘরে বসে এসব চিন্তা সারাক্ষণ করতে থাকলে অসুস্থ হয়ে যাবি আর কাকু কাকিমা ও নিজেদের দোষ দিতে থাকবে। কাল তো আর দেখা হবে না। আজ তো গেলাম না আমিও অফিস কাল হয়তো কাজের চাপ থাকবে। আমি লাঞ্চ টাইমে ফোন করবো তোকে। আর চেষ্টা করবো যতো তাড়াতাড়ি তোর সাথে আবার দেখা করা যায়। তুই একজন ভালো লইয়ারের চেষ্টা করে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব যোগাযোগ কর। আজ আসি তাহলে তুই ভয় পাস না সব ঠিক হয়ে যাবে। অন্যন্যাকে বলে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়ে তৃণা। যাবার আগে অব্যশ অন্যন্যার বাবা, মাকে ও বলে যায় ও। তৃণা চলে গেলে অন্যন্যা নিজের ঘরে জানলার শিক ধরে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে ওর যেনো মাথায় কিছুই আসছে না কি ভাবে কি শুরু করবে উকিল কোর্ট এসবের ও কিছুই বোঝে না জানে না বাবাকে ও দেখেনি তেমনভাবে এসবের ধার ঘেঁষতে দরকার পড়েনি কখনো। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবার তাঁদের সাধারণ কিছু স্বপ্ন আকাঙ্ক্ষা নিয়ে দিব্যি ছিল। সংসারে অসুবিধা ছিল অনেক কিন্তু বাবা, মা কেউই সেই অসুবিধা অন্যান্য বা তিয়াসাকে বুঝতে দেয়নি কখনও। নিজেদের সামর্থ মতো সবকিছুই দেবার চেষ্টা করে গেছে। আজ ও একটা চাকরি ও করছে মাইনে নেহাত মন্দ নয়। কিন্তু বাবা কোনোদিন তার সেই টাকা সংসারের কোনো প্রয়োজনে কখনোই নেয়নি। খোলা জানলা দিয়ে আকাশের দিকে তাঁকিয়ে এসব কথাই ভেবে যাচ্ছে অন্যন্যা। এভাবে কতক্ষন যে ও দাঁড়িয়ে আছে তা বোধ হয় ওর নিজেরও খেয়াল নেই। স্তম্ভিত ফেরে বাবার ডাকে। ” কিরে মা সেই থেকে এভাবে দাঁড়িয়ে কি এতো ভেবে যাচ্ছিস? তোর মা দুবার এসে তোকে দেখে গেলো তোর কোনো হুস নেই। এতো ভাবিস না, আমি তোর মা আমরা তো আছি সবাই তোর পাশে”। অন্যন্যা উত্তর দেয় কিন্তু বাবা সবাই তো প্রশ্ন করবে আমার জন্য তোমরা সবার প্রশ্নের সম্মুখীন হবে মাথা নীচু করে থাকে অন্যন্যা। সকালের কথাগুলো মনে রাখিস না মা। আসলে ছবিগুলো না দেখলে পুরোটা বিশ্বাস করা খুব কঠিন ছিল তোর কোনো ভুল হচ্ছে কিনা বুঝতে পারছিলাম না আসলে তোর আড়ালে নিজেদেরই অবিশ্বাস করেছি আমরা। আমাদের বোঝা উচিত ছিল আমরা সাধারণ মধ্যবিত্ত হলেও আমাদের শিক্ষায় কোনো খামতি ছিল না। আমাদের সন্তান অকারণে করো দিকে অভিযোগের আঙুল তুলবে না। ভুলটা আমাদের মা তুই কষ্ট পাস না। অন্যন্যা বাবাকে থামিয়ে দিয়ে বলে এভাবে বোলো না বাবা, তোমরা ও কি জানতে বলো? এটা কি সত্যি জানা সম্ভব ছিলো? বাবা একটা লইয়ারের খোঁজ করতে হবে আমি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সম্পর্কটা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। তুমি প্লিজ একটু দেখো। দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিকাশ বাবু বলে হ্যাঁ আমি দেখছি তুই চিন্তা করিস না। ও, বাবা আমি কাল থেকে অফিস জয়েন করতে চাই। অনেক ভুলভাল ছুটি নেওয়া হয়ে যাচ্ছে আর অকারণে ঘরে বসেই বা কি করবো? এমন সময় ঘরে ঢোকে রিনা দেবী, কাল থেকেই অফিস যাবি? আমার তো তোকে বেরোতে দিতেই ভয় লাগছে তুই বরং কটাদিন বাদেই বেরো। অন্যন্যা মাকে বলে : না, মা ওদের ভয় পেতে থাকলে তো আমি কোনোদিনই আর ঘর থেকে বের হতে পারবো না। আমাকে আমার নরমাল জীবনে ফিরতে হবে। অন্যায় ওরা করেছে সত্যি গোপন করে আর লুকিয়ে থাকবো আমরা? কেনো মা। তুমি চিন্তা করো না আমি ঠিক নিজেকে সামলে সাবধানে চলবো, ভয় পেয় না অকারণে। অন্যন্যার বাবা অন্যন্যাকে সমর্থন করে বলেন: একদম ঠিক বলেছে আমাদের মেয়ে, তুমি ভেবো না আমরা সবাই তো আছি ওর পাশে। অন্যন্যার মা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে সেতো আছি কিন্তু কি জানো মায়ের মন তো অজানা আতঙ্কে ভীত হয়ে থাকে। ও তোমার বুঝবে না গো মা হবার কি যে জ্বালা। তোমরা এসো আমি রাতের খাবার দিয়ে দিচ্ছি। বলে উনি বেরিয়ে যায় ঘর থেকে। অন্যন্যা ওর বাবার দিকে তাঁকিয়ে বলে তোমাদের দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে গেলাম বাবা। বিকাশ বাবু অন্যন্যাকে বলে এসব কথা একদম বলবি না তোরা দুজন আমাদের অহংকার দুশ্চিন্তা না। নে রেডি হয়ে তাড়াতাড়ি খেতে আয় কাল তো আবার অফিস যাবি বলছিস। একথা বলে বিকাশ বাবু ও বেরিয়ে যায় ঘর থেকে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *