Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

সমকামি – চৌত্রিশতম পর্ব

পরেরদিন তৃণা কৃষ্ণেন্দুর সাথে ওর অফিসে দেখা করে সিমটা দিয়ে আসে এবং কৃষ্ণেন্দুকে বলে: আমি রিচার্জ করে দিয়েছি এবার থেকে আপনি এটা দিয়েই আমাকে ফোন করবেন। তারপর তৃণা সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। ওদিকে অন্যন্যার জ্ঞান ফিরতেই ও নিজেকে একটা হসপিটালের বেডের দেখতে পায়। অন্যন্যা প্রথমে বুঝতে পারে না ও এখানে কি ভাবে এলো। তারপর ধীরে ধীরে ওর সব কথা মনে পড়ে। অন্যন্যা উঠে বসার চেষ্টা করে কিন্তু সারা গায়ে ভীষন ব্যাথার কারণে ও উঠতে পারে না। কিছুক্ষণ বাদে যখন নার্স এসে দেখলো তখন সে তাড়াতাড়ি করে একজন ডক্টরকে ডেকে নিয়ে এলো। ডাক্তার এসে অন্যন্যাকে ভালো করে পরীক্ষা করে বললো ওনার ঘুমের ওষুধের ঘোড় কাটতে শুরু করেছে। স্যার রাতের আগে এই ঘরে আসবেন না আর এখন উনি ওনার অন্য চেম্বারে আছেন। আমি ফোনে কথা বলে নিচ্ছি। তুমি ওনাকে খাবার টা খাইয়ে দাও। তারপর আমি বলছি আর ইনজেকশন দেয়া হবে কিনা? যাও এবার নিজের কাজ করো। অন্যন্যার কানে কথাগুলো আসলেও ওর শরীরের অবস্থার জন্য ও কোনো চিন্তা শক্তি কাজ করছিল না। কিন্তু এই টুকু যেন ও বুঝতে পারলো ও না জেনে না বুঝে ট্র্যাপে পা দিয়ে দিয়েছে।

ওদিকে বিপ্লব হসপিটালের চারপাশে পাগল সেজে সব নজর রাখতে থাকলো। কিন্তু তেমন করে এখনও পর্যন্ত কিছুই ওর নজরে আসলো না। কিন্তু ঠিক দুদিন পরে সেদিন রাতে ও হঠাৎই খেয়াল করলো ডক্টর চৌধুরীর গাড়িটা প্রায় রাত আড়াইটের সময় হসপিটালের সামনে এসে দাঁড়ালো। গাড়ি থেকে নেমে এলো ডক্টর চৌধুরী আর অয়ন। তারপর সোজা ঢুকে গেলো হসপিটালের ভিতরে। এই ভাবে পর পর বেশকিছু দিন ঘটনাটা বিপ্লবের চোখ এড়ালো না। ওর কিছু একটা সন্দেহ হলে ও ঠিক করলো স্যারের সাথে এটা নিয়ে কথা বলতে হবে।

এদিকে হসপিটালের ভিতরে সম্পূর্ণ একটা আলাদা জায়গায় অন্যন্যাকে রাখার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। যেখানে ডক্টর চৌধুরীর খাস লোক ছাড়া কারো খুব একটা যাতায়ত নেই। যাওয়ার অনুমতি ও নেই। অন্যন্যাকে ওরা লিকুইড খাবার খাইয়ে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে। যার কারণে অন্যন্যা শারিরীক ভাবে খুবই দূর্বল হয়ে আছে। ওদের প্ল্যান হলো ওরা অন্যন্যাকে চিকিৎসার নাম করে বিদেশে নিয়ে যাবে। তারপর ডক্টর চৌধুরী নিজেরই পুত্র বধূর সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে নিজের বংশ রক্ষা করবে তারপর যা হবে তা হলো অন্যন্যা নিজেই আর কোনোদিন ফিরে যেতে চাইবে না। সাপ ও করবে লাঠি ও ভাঙ্গবে না। বাকি অন্যন্যাকে রুগি সাজিয়ে ওর সমস্ত ডকুমেন্টস বের করা ডক্টর চৌধুরীর কাছে খুবই সামান্য আর সহজ ব্যাপার। কারণ টাকা আর পরিচিতি কোনোটারই কোনো সমস্যা নেই। আর এই পোড়া দেশে টাকা থাকলেই সবকিছু করা সম্ভব। এই মাত্র কটাদিনেই অনেকটা কাজ ডক্টর চৌধুরী আর তার যোগ্য সুপুত্র অয়ন বাবু অনেকটাই এগিয়ে ফেলেছে।

তখন প্রায় সকাল হয়ে গেছে বিপ্লব দেখলো ঘড়িতে একদম ঠিক চারটে বাজে। ডক্টর চৌধুরী আর অয়ন গাড়িতে উঠে বেড়িয়ে যায়। ওরা বেরিয়ে যাবার পরেই বিপ্লব কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করলে উনি বললেন বিপ্লব যেনো এখুনি ওনার বাড়িতে চলে আসে। ঠিক মতো আলো ফোটার আগেই ওকে আবার ওখান থেকে বেড়িয়ে যেতে হবে। বিপ্লব সেই মতো গিয়ে দেখা করে কমিশনারের সাথে। বিপ্লব ওনাকে জানায়: স্যার আমি হান্ড্রেড টাইমস সিওর অন্যন্যাকে ওরা ওখানেই রেখেছে। কিন্তু আমি শুধু হসপিটালের বাইরে থেকে কিছু করতে পারবো না একা। হয় আমাদের বিশ্বস্ত কোনো লোককে আমাদের কোনো ভাবে হসপিটালে ঢোকাতে হবে আর তা না হলে ডক্টর চৌধুরীর কোনো বিশ্বস্ত কোনো লোককে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। সেটা ভয় দেখিয়ে হোক বা টাকার লোভ দেখিয়ে। কমিশনার এতক্ষন চুপচাপ বিপ্লবের সব কথা শুনলেন তারপর বললেন: হুম্ ঠিকই বলছো তুমি। বিপ্লব তুমি আরো ভালো করে খেয়াল করো যে ওনারা যখন আসছেন বা চলে যাচ্ছেন তখন কোনো লোক ওদের গাড়ির কাছে আসে কিনা মানে ওদের এগিয়ে দিতে আসে কিনা? কিন্তু ডিপার্টমেন্টের কাউকে আমি বিশ্বাস করতে পারছি না সত্যি বলতে কারণ ডিপার্টমেন্টে ওদের ও অনেক ইনফরমার আমাদের মধ্যেই আছে। সেটা কে বা কারা সেটা এই ভাবে বোঝা সম্ভব না। তাতে ঠগ বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে বুজলে? তাছাড়া ওদের উপর তলা পর্যন্ত ক্ষমতা বিস্তার করা আছে। ওদের গায়ে টাচ করা ওতো সহজ হবে না। কিন্তু আমি ভাবছি অন্য কথা!!এক: ওরা অন্যন্যাকে ওখানে রেখে কি করতে চাইছে? ওকে যদি মেরে ফেলার হতো তাহলে ওকে বাঁচিয়ে আটকে কেনো রাখতে যাবে? আর দুই: আমরা মেয়েটাকে বাঁচিয়ে আনতে পারবো তো? কি অদ্ভুত না একটা ছেলে যে নাকি একই লিঙ্গে আকৃষ্ট অথচ সমাজে নিজেদের ওই বেকার আভিজাত্য বজায় রাখতে কতোটা নীচে নামছে। কিছুক্ষণ ঘর জুড়ে একটা নিস্তব্ধতা। তারপর মৌনতা ভেঙ্গে কমিশনার বললেন: বাইরে আলো ফুটে গেছে তুমি এক কাজ করো তুমি গিয়ে তোমার ছেড়া জামা পাল্টে নাও আমার কিছু পুরানো জামা আছে সেটা দিচ্ছি পরে নাও। আর একটা রেঞ্জ আছে আমার ঘরে বেরোনোর সময় ওটা হাতে নিয়ে বেরও তাতে সবাই ভাববে তুমি মিস্ত্রী কোনো কিছু ঠিক করতে এসেছিলে। এখন যাও বাথরুমে গিয়ে একটু ফ্রেশ হয়ে এসো আমি কফি করছি। কাজের মেয়েটি আসার আগে তোমার এখান থেকে চলে যাওয়া ভালো আমি কোনো রিস্ক নিতে চাইছি না। ওকে স্যার বলে বিপ্লব বাথরুমের দিকে গেলো। ওর ফোনটা তার আগে একটু চার্জ দিয়ে নিল। তারপর কফি খেয়ে ও কমিশনারের কথা মতো বেরিয়ে গেলো সেখান থেকে। তারপর রাস্তার ধারের দোকান থেকে কিছু খেয়ে নিয়ে আবার হসপিটালের সামনে গিয়ে বসলো। সারাদিনে বহু লোকের আনাগোনা তেমন সন্দেহজনক কিছু ওর নজরে এলো না। কিন্তু হঠাৎ ও দেখলো দুজন লোক যারা নাকি যতদূর বিপ্লবের জানা বা ও চিন্তে পারছে তাতে লোকগুলো পাসপোর্ট অফিসের। বিপ্লব বুঝতে পারলো না এরা এখানে কেনো এসেছে ট্রিটমেন্ট নাকি ওরা অন্যন্যাকে অন্য কোথাও সরিয়ে নেবার চেষ্টা করছে? একজন ডক্টর এসে ওনাদের খুব খাতির করে ভিতরে নিয়ে গেলো। তার কিছুক্ষন পরেই ডক্টর চৌধুরীর গাড়ি এসে থামলো আর ঠিক তার পিছনেই ছেলে ডক্টর অয়নের গাড়ি। আবার সেই ডক্টর যে একটু আগে এসে ওই লোকগুলোকে ভীতরে নিয়ে গেলো কি যেনো আলোচনা করছে তারপর একসাথে হসপিটালের ভীতরে ঢুকে গেলো। সবটাই বিপ্লবের কাছে খুব সন্দেহজনক লাগে।

ঠিক আধ ঘণ্টা বাদে সবাই এক সাথে বেরিয়ে এলো এবং যে যার মতো করে চলে গেলো। ঠিক সেদিন রাতেই তখন এই কটা হবে রাত একটা ডক্টর অয়নের গাড়ি আবার এসে থামলো হসপিটালের সামনে। বিল্পব দেখলো ডক্টর অয়নের সাথে একজন ভদ্র মহিলা নেমে এলেন গাড়ি থেকে। বিপ্লব আন্দাজ করতে পারলে ও সিওর হতে পারছিল না যে উনিই ডক্টর চৌধুরীর ওয়াইফ কিনা? যাই হোক খুব সাবধানে আর সন্তর্পনে নিজের সাথে রাখা ফোন দিয়ে ও ওদের ছবি তুলে নিতে সমর্থ হয় সে। হ্যাঁ বেশ কিছুটা সময় ধরে ওরা হসপিটালের বাইরে দাঁড়ানো। এবং ডক্টর অয়ন বার বার মহিলাকে কিছু একটা বোঝানোর চেষ্টা করছিল কিন্তু তিনি তা বুঝতে চাইছিলেন না । কিন্তু সেটা কি? দূর থেকে বিপ্লবের পক্ষে সেটা বুঝে ওঠা সম্ভব হচ্ছিল না। ও কিছু একটা করার চেষ্টা করছিল যাতে ওদের অন্তত কিছু কথা ও শুনতে পায় কিন্তু কি করবে বুঝতে পারছিল না কারণ হঠাৎ করে ওদের কাছাকাছি যাবার চেষ্টা করলে এক ওরা সিকিউরিটি দিয়ে তাড়িয়ে দেবে আর দুই ওদের মনে সন্দেহ হতে পারে। কিন্তু আচমকাই একটা সুযোগে বিপ্লব যেনো হতে চাঁদ পেল। হসপিটাল চত্বরের একটা কুকুর হটাৎই অজানা কারণে ধেয়ে এল বিপ্লবের দিকে। আর এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে বিপ্লব বেশ অনেক এগিয়ে গিয়ে একটা পাশ ঘেঁষে মাথা নিচু করে গিয়ে বসলো। এবং কিছু কথা ওর কানে এলো।

অয়ন: ” listen to me mom। And please try to understand me। তুমি এখানে এসেছো এটা যদি dad ফিরে এসে জানতে পারে তাহলে খুব রাগারাগি করবে। তুমি প্লিজ ফিরে চলো বাড়িতে। এখানে এভাবে থাকা আমাদের জন্য safe নয়। Please go back to home”।

রিতা দেবী ( অয়নের মা): ” please বেটা আমি একবার ওকে দেখে চলে আসবো। কিন্তু তোমরা যেটা করতে যাচ্ছো সেটা পাপ অন্যায়। আমি তোমার dad কে কোনোদিন কোনো ব্যাপারে কোনো অন্যায় আটকাতে পারিনি কিন্তু তুমি তো আমার কথাটা শোনো। আমিও চাই না কোর্ট পর্যন্ত কোনো ঘটনা পৌঁছাক কিন্তু this is not the right way। তোমার বাবা তারই। উফফ I just can’t imagine”।
অয়ন: “please stop it mom। তুমি বাইরে দাঁড়িয়ে উফ্। And listen mom আমি আমার আর নিখিলেশের সম্পর্ক নিয়ে যথেষ্ট concern। আর সেই জন্য সবকিছু করতে পারি। Dad এর কথা শোনা ছাড়া আমার কাছে অন্য রাস্তা কিছু খোলা নেই। তুমি প্লিজ চলো এখান থেকে।

রিতা দেবী অয়নের সাথে আর কথা না বাড়িয়ে সোজা ঢুকে গেলো হসপিটালের ভিতরে। অয়ন পিছন থেকে ডাকতে থাকলো” Mom please mom listen to me”। রিতা দেবী অয়নের ডাকে সাড়া না দিয়ে এগিয়ে যেতে থাকলো। অগত্যা উপায় না পেয়ে মায়ের পিছন পিছন অয়ন ও চলে গেল হসপিটালের ভীতরে।

ওরা চলে যেতেই বিপ্লব মনে মনে ভাবলো ও যা ভেবেছিল সেটাই ঠিক। উনিই হলেন মিসেস চৌধূরী। এবং তার থেকে ও বড় যেটা সেটা হলো ওরা অন্যন্যাকে এই হসপিটালের মধ্যেই লুকিয়ে রেখেছে। কিন্তু ওরা কি এমন করতে চাইছে অন্যন্যার সাথে যেটাতে মিসেস চৌধূরীর এতো আপত্তি।

ওদিকে মিসেস চৌধূরী গিয়ে ঢুকলেন অন্যন্যাকে যেখানে বলা যেতেই পারে যে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল সেই রুমে। মিসেস চৌধূরী ভীতরে ঢুকতেই অয়ন ও মায়ের পিছন পিছন গিয়ে ঢুকলো সাধারণত অয়ন অন্যন্যাকে যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে ঢোকে না। যা করার যা দেখার সেটা ডক্টর সিনিয়র চৌধূরীই করে থাকেন। রিতা দেবীকে ঢুকতে দেখে ওখানে ডিউটিতে থাকা নার্স সোফা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। মিসেস চৌধুরী ঢুকেই নার্সকে বলে আপনি একটু বাইরে যান। আমি ডাকলে ভীতরে আসবেন। নার্স ও মিসেস সেনের নির্দেশ মতো বাইরে গিয়ে দাঁড়ায়‌। রিতা দেবী ধীর পায়ে এগিয়ে যায় অন্যন্যার বেডের কাছে। স্বস্নেহে অন্যন্যার মাথায় হাত রাখে। এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকে ওর কালসিটে পরে যাওয়া মুখের দিকে। আর মনে মনে ভাবতে থাকে আমি কি ভাবে তোকে বাঁচাবো জানি না। আদৌ ওদের হাত থেকে তোকে রক্ষা করার ক্ষমতা আছে কিনা সেটাও আমার অজানা। কিন্তু আমি মন থেকে চাই না যা হতে যাচ্ছে সেটা হোক। কিন্তু ওদের বিরুদ্ধে গিয়ে দাঁড়ানোর সাহস আমার নেই। অন্যন্যার মুখের দিকে তাঁকিয়েই তিনি ছেলেকে উদ্দেশ্য করে বলেন: please অয়ন ওকে তোরা ছেড়ে দে।

অয়ন মায়ের কাছে গিয়ে মায়ের হাত ধরে টেনে বলে: অনেক হয়েছে mom এবার তুমি চলো এখান থেকে। নাহলে আমি বাধ্য হবো এবার dad কে call করতে। রিতা দেবী ছেলের কাছে অনুরোধ করে তাকে আর একটু সময় অন্যন্যার কাছে থাকতে দেবার জন্য। কিন্তু অয়ন তাতে রাজি হয় না। শেষে রিতা দেবী জেদ করছে দেখে অয়ন বলে: ” okay I promise you আমি dad ফিরে আসার আগে আর একবার তোমাকে এখানে নিয়ে আসবো। But now you leave this place”। একপ্রকার বাধ্য হয়ে রিতা দেবী বেরিয়ে আসে অন্যন্যার রুম থেকে।

কিছুক্ষণ পর দুজন একসাথে বেরিয়ে আসে হসপিটাল থেকে। তারপর আর কোনো কথা না বাড়িয়ে বেড়িয়ে যায় সেখান থেকে। ওরা যখন বেরিয়ে যায় তখন প্রায় দুটো বেজে তিরিশ মিনিট। বিপ্লব সাথে সাথে ফোনে সব কথা কমিশনারকে জানালে তিনি তখনই বিপ্লবকে তার বাড়িতে যেতে বলে। সাথে এটাও বলে বিপ্লব যেনো বাড়ির সামনে পৌঁছে ওনাকে ফোন করে। কারণ বিপ্লব বাড়ির সামনের গেট দিয়ে নয় ও ঢুকবে বাড়ির পিছনের দিক থেকে আর বিপ্লবকে তিনি ঢোকানোর জন্য নিজেই দাঁড়িয়ে থাকবেন। বিপ্লব ঠিক সেই ভাবেই কাজ করলো। বিপ্লব কমিশনারকে সেই ছবিটা দেখলো যেটা ও তুলেছিল। এবং সবটা খুলে জানালো যে এতক্ষন ধরে ঠিক কি কি ঘটেছে সারাদিনে। কমিশনার একটু বিদ্রুপের হাঁসি হেঁসে বিপ্লবকে উদ্দেশ্য করে বললো: জানো তো বিপ্লব অপরাধী যতই চালাক হোক সে একটা না একটা ক্লু রাখবেই রাখতেই হবে। বিপ্লব এবার একটু উৎসাহ নিয়ে বললো: স্যার তাহলে প্রমাণ তো আমাদের হাতে এসেই গেছে যে অন্যন্যা দেবীকে ওরা গুম করে ওখানেই লুকিয়ে রেখেছে। এখন আমরা ওদের এগেইনস্টে স্টেপ তো নিতেই পারি। কমিশনার বিপ্লবকে থামিয়ে দিয়ে বললো: না সরাসরি কোনো স্টেপ আমরা পারবো না নিতে। আমরা এখন তাড়াহুড়ো করে স্টেপ নিতে গেলে ওরা আরো এলারট হয়ে যাবে। আর অন্যন্যাকে সাথে সাথে সেখান থেকে সরিয়ে ফেলবে। আমাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব হয়ে যাবে তখন ওকে খুঁজে বের করা। আমাদের খুব বুদ্ধি করে আর ধৈর্য ধরে কাজটা করতে হবে। তোমার তোলা এই ছবিটা দিয়ে কিছুই প্রমাণ হবে না বিপ্লব। কারণ ওনারা হসপিটালের মালিক ওনারা ওনাদের হসপিটালে যে কোনো সময় যে কোনো প্রয়োজনে আসতেই পারে। আর অয়ন যেখানে নিজেই একজন ডক্টর সেখানে যে কোনো ইমারজেন্সিতে ওকে হসপিটালে আসতে হতেই পারে। আর যে দুজন অফিসারদের তুমি দেখেছো তারাও চিকিৎসার খাতিরে হোক বা কোনো ব্যাক্তিগত দরকার হতেই পারে ডক্টর চৌধুরীর কাছে এসেছেন। এটা তো সবাই জানে যে শহরের সব থেকে নাম করা ডক্টর হিসেবে ওনার শহরের অনেক তাবর তাবড় লোকের সাথে ওঠা বসা আছে সুতরাং সেটা দিয়ে বিশেষ কিছু প্রমাণ হবে না।

বিপ্লব হতাশ হতে জানতে চায়: তাহলে সবকিছু জেনেও আমরা কোনো স্টেপ নিয়ে পারবো না ? পারবো তো বিপ্লব, কিন্তু সরাসরি না। আমরা নাক ধরবো কিন্তু একটু ঘুরিয়ে ধরবো। বিপ্লব উত্তর দেয়: বুজলাম না স্যার। কমিশনার হেঁসে বলে: শোনো আমি তোমাকে বুঝিয়ে বলছি। যে ডক্টরকে তুমি ওদের খাস লোক বলে সাসপেক্ট করছো তার প্রতিটা গতিবিধির নজর রাখো। কখন হসপিটালে আসছে কখন যাচ্ছে। বাড়ি কোথায় ইত্যাদি প্রভিতি সব। এবং সুযোগ বুঝে গুম করে দাও। তারপর ওকে বাগে এনেই আমরা আমাদের কাজ হাসিল করবো। আর ওনার ফ্যামিলি ডিটেইলস সব থেকে আগে জোগাড় করো। বাড়িতে কে কে আছে? বাচ্চা আছে কিনা? থাকলে ছেলে না মেয়ে? সব খবর আমার চাই। যাও আর নিজের কাজ শুরু করে দাও। কমিশনারের অনুমতি নিয়ে বিপ্লব সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।
( ডক্টর ভাস্কর চৌধুরী একটি বিশেষ কনফারেন্সে কিছু দিনের জন্য বাইরে গেছেন। এবং ওনার প্ল্যান হলো ফিরে এসেই)

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress