Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

সমকামি – তেইশতম পর্ব

ওদিকে অয়নের মা এবং বাবা অয়নকে জোরাজুরি করতে থাকে যাতে অয়ন নিজের দোষ স্বীকার করে হলে ও অন্যন্যাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। একবার অন্যন্যাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারলে আর কোনো চিন্তা নেই। অন্যন্যার জব ওরা ছাড়িয়ে দেবে তাতে করে অন্যন্যার আর প্রতিদিন বাড়ির বাইরে যাওয়ার দরকার পড়বে না ওদের। চোখে চোখে থাকবে সারাক্ষণ। তারপর অয়ন নিজের মতো চলুক তাতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বিয়ের ছয় মাস ও কাটেনি বাড়ির বউ চলে গেছে এটা আত্মীয় স্বজন এখনো ও কেউ জানে না কিন্তু জানতে কতোদিন? একদিন না একদিন তো জানবেই। তারপর যদি ডিভোর্সের নোটিশ পাঠায় তাহলে? অয়নের বাবা পাউরুটিতে মাখন লাগাতে লাগাতে বললেন: শোনো তোমার জন্য পরিবারের মানসন্মান নষ্ট হোক এটা হতে দেওয়া যায় না। আর তাছাড়া আজ নয়তো কাল এভাবে চলতে থাকলে ডিভোর্সের নোটিশ তো আসবেই। ও কি সারাজীবন তোমার নামের মালা জব করবে? সুন্দরী শিক্ষিতা ভালো ছেলে ও চাইলেই পেতে পারে সেটা আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। কিন্তু একবার ওকে এই বাড়িতে এনে ফেলতে পারলে আর কোনো চিন্তা নেই। ও যাতে আর উড়তে না পারে সেই ব্যাবস্থা আমি করবো। আর ওর বাপের বাড়ির লোক ওদের কি বা ক্ষমতা আছে? না আছে স্ট্যাটাস না আছে টাকা। সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেবো। বাঁচলে এখানে বাঁচবে মরলে এখানে মরবে। তাতে অন্তত কেউ তোমাকে নিয়ে এই পরিবার নিয়ে প্রশ্ন তুলবে না। আমার পরিবারের মানসন্মান ঐ মধ্যবিত্ত অন্যন্যা আর তাঁর বাবা মার থেকে অনেক বেশী। তুমি যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব সেখানে যাবে আর ওকে এখানে নিয়ে আসবে। আর তাছাড়া তুমি তো একটা ছেলের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছো কিন্তু এটা কি ভেবেছো ওকে দিয়ে কি আমার বংশ রক্ষা হবে? একটা ইডিয়ট প্রেম নাকি তাও আবার একটা ছেলে।

অয়ন এবার মাথা নীচু করে বলে: সরি ডেড তোমরা যদি মনে করো অন্যন্যাকে ফিরিয়ে এনে আমি তোমাদের বংশ রক্ষা করবো তোমরা ভুল ভাবছো। আমি নিখিলেশকে ভালোবাসি ওকে ছাড়া আর কারো সাথে কোনো সম্পর্কে আমি পারবো না জড়াতে। শারীরিক তো কখনোই না। আমি তো বিয়ে করতেই চাইনি কেনো দিলে আমার বিয়ে? একদম চুপ, চুপ করে থাকো তুমি। তোমার দ্বারা যে কিছু হবে না সেটা আমি জানি খুব ভালো করে। কিন্তু আমার এই বিশাল সম্পত্তির মালিক আমার চাই সেটা যে কোনো প্রকারে। গর্জে ওঠে ডাক্তার ভাস্কর চৌধুরী। অয়নের মা চায়ের পটটা টেবিলের উপর রেখে বলে: আমি বুজলাম না যদি অয়ন অন্যন্যার সাথে কোনো সম্পর্ক তৈরীই না করে বংশ রক্ষা হবে কি করে? অয়নের বাবা ডাক্তার ভাস্কর এবার তীর্যক হেঁসে বললো: অয়ন অসুস্থ আমি তো না। অয়নের মা চোখ বড় করে বললো: মানে? কি বলতে চাও তুমি? ডাক্তার ভাস্কর তার স্ত্রীয়ের দিকে তাঁকিয়ে বললো: এতে না বোঝার তো কিছু নেই। আমার ছেলে অক্ষম আমি তো না। তাছাড়া আমি তো ভালোবেসে কিছু করতে যাবো না। আমাকে আমার বংশ রক্ষা করতে হবে। আর তার জন্য যদি অন্যন্যার সাথে আমাকে সম্পর্ক করতে হয় আমি করবো পরিষ্কার।

চিৎকার করে ওঠে অয়নের মা। চুপ করো তুমি চুপ করো ছি এই কথা বলার আগে একবার ভাবলে না কি বলছো তুমি? নিজের ছেলের বউয়ের সাথে ছি আমার ভাবতে ও ঘেন্না করছে। তুমি অনেক মেয়ের সাথে সম্পর্ক করেছো দিনের পর দিন কাজ আর চেম্বারের নাম করে মেয়েদের নিয়ে ফুর্তি করে কাটিয়েছো। আমি কোনোদিন তার কোনো প্রতিবাদ করিনি। ছেলেটাকে আঁকড়ে ধরে তোমার সব লাম্পট্য আমি মেনে নিয়েছি। কিন্তু তোমাকে এই কাজ আমি কিছুতেই করতে দেবো না।

একদম বেশী কথা বলবে না তুমি ধমকে ওঠে ডাক্তার ভাস্কর। একটা অসুস্থ ছেলের জন্ম দেবার আগে এই কথাগুলো চিন্তা করা উচিত ছিল তোমার। বেশ করেছি মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করছি। তাহলে কি তোমার ছেলের মতো ছেলে নিয়ে শুয়ে থাকতাম? একদম চুপচাপ থাকবে। একদম বেশী ট্যাফু করলে প্রাণ টা হারাতে হবে। তুমি ভুলে যেও না আমি একজন ডাক্তার। চাইলে আমি অনেক কিছু করতে পারি। আমার ক্ষমতা সম্পর্কে এতো বছরে এইটুকু ধারণা তোমার নিশ্চয়ই হয়েছে আশা করা যায়। আর এই যে অয়ন আমি তোমাকে একটা সপ্তাহ সময় দিলাম হয় ওই বাড়িতে নিজে গিয়ে অন্যন্যাকে ফিরিয়ে নিয়ে এসো। না হয় আমি নিজে যাবো সেখানে। কথাগুলো বলে সেখান থেকে চলে যায় ডাক্তার ভাস্কর।

অয়নের মা উঠে এসে ছেলের হাতদুটো ধরে বলে: “আমি তোর কাছে অনুরোধ করছি একটা মেয়ের এতো বড় সর্বনাশ তুই হতে দিস না। আমি ও চাই তোর এই কথা সবার কাছে গোপন থাক কেউ যাতে কোনোদিন সত্যিটা জানতে না পারে কিন্তু তার জন্য একটা মেয়ে হয়ে আর একটা মেয়ের এই ক্ষতি আমি চাই না। তুই প্লিজ অন্যন্যাকে মেনে নে। ওকে তোর স্ত্রীয়ের মর্যাদা দে। নিখিলেশ একটা ছেলে ওর সাথে এই সম্পর্কের কোনো ভবিষ্যত্ নেই”!!!!!!! অয়ন মায়ের হাতটা নিজের হাতের থেকে সরিয়ে দিয়ে বলে: আমি অন্যন্যাকে কোনোদিন কোনো কারণে মেনে নিতে পারবো না মা, আমাকে ক্ষমা করো। তুমি ডেড চাইছো আমি অন্যন্যাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবো তার জন্য ও কটাদিন সময় দরকার আমার। তারপর ডেড যা ভালো বুঝবে করবে। আমার ঐ মেয়েটার কোনো কিছু নিয়ে কোনো ইন্টারেস্ট নেই। আমার দেরী হচ্ছে আমি বেরোলাম। অয়ন ও বেরিয়ে যায়। কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে অয়নের মা। উনি জানেন এই ঝড়কে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ওনার নেই।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *