Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » সখি! ভালবাসা কারে ক’য় || Sibani Gupta

সখি! ভালবাসা কারে ক’য় || Sibani Gupta

সোঁদেল মাটির গন্ধমাখা মুখে অপার সারল‍্যের ছাপ ছিল
দেবব্রতের মুখে ।
কলেজ যাওয়া-আসার পথে মুগ্ধ চোখদু’টো ছায়াবৃতাকে দেখার জন‍্যে উন্মুখ থাকতো,প্রথমটা খুব অস্বস্তিহলেও
কখন যেন অলক্ষ‍্যে ছায়াবৃতার মনে ঠাঁই করে নিয়েছিলো,আলাপ থেকে অনুরাগ ক্রমশঃ একসময় নিবিড় ভালোবাসাতে পৌঁছুতে দেরী হলোনা।
কলেজে ভালো ছাত্রী বলে যথেষ্ট সুনাম,শুধু লেখাপড়াতেও নয়,আবৃত্তিতে,ডিবেটে,নাটকে,গানে,
নাচে রাশ রাশ মেডেল জেতা মেয়েটাকে শেষ অব্দি নেহাৎ সাদামাটা একটা ছেলের প্রেমে পড়ে যেতে দেখে বান্ধবীরা তো আকাশ থেকে পড়লো,–“হ‍্যারে ,ছায়া,কি এমন তুই দেখলিরে ওই হাঁদারামটার মাঝে শুনি?
ছায়াবৃতার খুশি ডগমগ মুখে মুচকি হাঁসি ঝুলে,-‘ ও তোরা বুঝবিনে ,ও হলোগে’ খাঁটি হীরে ,বুঝলি ‘?
বাড়িতে ঝড় উঠলো–ব‍্যাপারটা জানাজানি হতেই –জাতপাতের ঝড়! বাঁধা নিষেধের ঝড়,ছায়াবৃতা নিজের সিদ্ধান্তে অনড়,সব হল পর, শুধু সেই অন্তরতম।
পালিয়ে গেল একদিন দেবব্রতের হাত ধরে ভালবাসার সুবাস ভরা মনে গভীর প্রত‍্যয়ের সাথে।

আচমকাই একদিন বাসস্টপে মুখোমুখি–দুই বান্ধবী,মিলি তো চমকে ওঠে শ্রীময়ী ছায়াবৃতাকে অমন
রোগাটে,কালশিটে চেহেরায় দেখে,-‘ একি!ছায়া না?সেইযে বাপু দেবব্রতকে নিয়ে উধাও হলি,আরতো -পাত্তাই নেই,কি ব‍্যাপার বলতো?তা, তুই একা যে,তোর হীরের টুকরো বরটি কোথায়?
মিলিকে দেখামাত্র মুখের রঙ ফ‍্যাকাশে ,বিবর্ণ ছায়াবৃতার বুকটা ধ্বক্ করে উঠে, ঠোঁটদুটো অকথ‍্য
যন্ত্রণায় কাঁপে,শব্দ বেড়োয় না,নিশ্চুপ মাথা নীচু করে।
মিলির তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ছায়ার আপাদমস্তকে পড়তে
নারীর সহজাত অনুভবে পলকে বুঝে ফেলে না বলা অনেককিছুই,তবু জানতে চায়,-কিরে,চুপ করে আছিস যে,বলবিনে আমাকে?
ছায়ার মুখে আষাঢ়ে মেঘের ছায়া,তবুও নিরুত্তর,কি বলবে সে মিলিকে,বলার মুখ কি আর আছে?
প্রচন্ড কষ্ট হচ্ছে মিলির প্রিয় সখির জন্য,তবু সক্ষোভে ফেটে পড়ে ওকে নির্বাক দেখে,-‘বেশ , তুই যখন বলবিনে,তখন ,তোর ব্লটিং পেপারে শুষে নেয়া মুখ দেখে সবটা নাহয় আমিই বলছি,তোর সোঁদেল মাটিরগন্ধমাখা
ভালবাসার নকশিকাঁথাটা বিশ্বাসহীনতার ঘুণপোকাতে
কাটলো তো,দু’দিনেই তুই অপাংক্তেয় ,তার চাই নিত‍্যনুন,সত‍্যি কিনা আমায় ছুঁয়ে বলতো’?
টপ্ টপ্ টপ্ অবিরল অশ্রু ঝরছে,ফ‍্যাল ফ‍্যাল্ সর্বহারার দৃষ্টি ছায়াবৃতার।
বুক ফেটে কান্না আসছে মিলির,দেবব্রত যে ভালোমানষীর মুখোশের আড়ালে একটি জঘন‍্য মনের ছদ্মবেশী শয়তান সেটা জেনে মাথায় আগুন জ্বলে,এখনো তুই সহ‍্য করে যাচ্ছিস ওই ভন্ডটাকে,কেন রুখে উঠতে পারিসনি? তুই না দ্বাবি়ংশ শতাব্দীর মেয়ে?তুই অন‍্যায়কে স’য়ে যাবি কেন,কেন তুই বহ্নিশিখা হতে পারলিনে?
থরথর্ করে কাঁপতে থাকা অবরুদ্ধ ব‍্যথার দহনে ক্লিষ্ট ছায়াবৃতা এবারে আর পারলো না,মিলিকে দু’হাতে জড়িয়ে ধরে আকুল কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে–‘ওকে যে বড্ড ভালবাসতাম রে—

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *