জীবনের বন্ধুর পথ চলতে গিয়ে
যদি আচমকাই অদ্ভুত কিছু অনুভূতির অনুরণন কখনো অচেনা বাঁকের মুখে থমকে দাঁড়ায়,
কিছু তামাদি হয়ে যাওয়া অতীত স্মৃতির কুয়াশাচ্ছন্ন জট,কিছু উত্তর বিহীন প্রশ্নের,
আর, নির্বাক শব্দেরা আঁকড়ে ধরে,
ফেলে আসা দিনে মনটাকে টেনে নিয়ে যায়,
যেখানে,স্বপ্নিল ইচ্ছেরা তোমাকে শুধুই তোমাকে ঘিরে স্তরে স্তরে বিন্যস্ত হচ্ছিল-
নির্মেঘ প্রীতিময় ভালোবাসার দেয়ালটা কিছু ভুল ভ্রান্তির খেসারত দিতে আঘাতে ছয়লাপ,
বিশ্বাসের পলেস্তারা খসে খসে জীর্ণ প্রায়,
বিবর্ণ ব্যথার দহনভারে তুমি নীরবে চলে গেলে,দূরে- বহুদূরে-
পাংশু মুখে চেয়ে দেখলাম ,ঠোঁট দুটো থিরথির কাঁপছিল অবরুদ্ধ অশ্রুভারে,
অতীত যেন তার ধূসর মলিন আঁচলের গিঁটটা খুলতেই পলকে মূর্ত অনুভবের দ্যোতনায়।
হঠাৎই চারপাশের বাতাস ছুঁয়ে যেতে থমকে যাই, পা’ দুটো পেরেক সাঁটার মতো,
অতি চেনা অতি প্রিয় ফিসফিস কণ্ঠস্বর কানের কাছে!
আমি আকণ্ঠ তিয়াসে হামলে পড়ে দু’ হাতে প্রাণপণে মেলে ধরতে উদগ্রীব মধুর সোঁদামাটির গন্ধ বিভোর স্মৃতির পাতাগুলো,
স্কুলের পথে পেয়ারা গাছের নীচে ঠায় দাঁড়িয়ে তুমি,
দেওনদীর সেতু পেরোতে ভীতু মেয়েটার নির্ভয়ের হাত তুমি,
আঁকা বাঁকা অক্ষরে’ ভালোবাসি ‘ লেখা চিরকুটে তুমি,
ঝড়ের দিনে আম কুড়োনোর সাথী সেই তুমি— সেই তুমি–
রাঙ্গামাটির আলপথে ঘুড়ি ওড়ানোর খেলা,
পড়শীর বাগানে ভরদুপুরে রস টসটসে কমলালেবুর গাছে চড়া সেই তুমি!
আর,মেঘকালো সেই বৃষ্টিদিনে?
আচমকাই জড়িয়ে ধরে সোহাগ করা সেই তুমি!
সমস্ত সত্তা যেন উন্মুখ হয়ে উঠতে চায়,
সব কিছু ঝেড়ে শেষবারের মতো
শুধু তোমাতেই মিশতে চাই ,
সব স্মৃতি যেন আজ একসাথে মিছিল করে সজোরে মনের কপাটখানা দড়াম করে খুলে ফেলে আমাকে নিবিড় উষ্ণতায় জাপ্টে ধরে ,
আমার এতদিনের সব অভিমান যেন আবেগে গলে পড়তে থাকে—