শেষ সাহারা
নিরুবাবু আর তার গিন্নী মিলে কষ্ট করে দুই সন্তানকে আদর্শ মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার যুদ্ধে অনেক ত্যাগ করেছেন l ছেলেরা বড়ো হয়ে চাকরি সূত্রে বাইরে গেলে নিরুবাবু ও গিন্নী একাই কাটাতেন দিন l হঠাৎ বয়সের ভারে আচমকা গত হলেন নিরুবাবু l নিরু গিন্নী এখন একা, ঐ দোতলার বাড়িতে নিরু বাবুর স্মৃতি আগলে বেঁচে রয়েছেন l এ এক অন্য লকডাউন.. গৃহ বন্দি নিরু গিন্নী ছেলেদের কাছে মুঠোফোনের আবদার করলেন l বড়ো ছেলে রাজি হয়ে উন্নত প্রযুক্তির স্মার্ট ফোন মা কে পাঠিয়ে দিলেন l
জ্ঞানের অবদান কিছুটা থাকায় নিরুগিন্নী বেশ ভালো সামলে নিলেন ফোনের সকল কায়দা- কানুন l
সময় কাটানোর সঙ্গী হিসাবে রান্নার post, পুরনো বন্ধু আত্মীয়জনের সাথে কথা বলা, ভিডিও কল এসব ব্যস্ত এখন নিরু গিন্নী l রান্নার post দেখে এক হোটেলের মালিক সহদেব বাবু যোগাযোগ করলেন নিরু গিন্নীর সাথে l নিরু গিন্নী ও আগ্রহী হয়ে কথা বললেন l কবে যে এই বন্ধুত্ব গভীর হয়ে গেলো, বুঝতে পেরে সহদেব বাবু ও নিরুগিন্নী সিদ্ধান্ত নিলেন বাকি জীবন একসাথে থাকার l
কিন্তু, মনে ভয় সমাজ, সন্তান,প্রতিবেশীদের হাজারো প্রশ্ন কি উত্তর দেবে তাঁরা l একদা দুজনে বিদেশ থেকে সন্তানদের ডেকে সবটা জানালেন l
কিছুটা অবাক হয়ে গেলেও উন্নত চিন্তা ধারা সম্পর্কে মেনে নিতে সাহায্য করেছিল বটে l আইনি মতে উভয়ে বিয়ে করলেন ও বাকি জীবন একত্রে থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেন l
ভাবতে ও শুনতে অনেকটা অসামঞ্জস্য পূর্ণ হলেও, সমাজের কাছে এ এক বিশাল উদাহরণ l এরকম শেষ সাহারা খুঁজে পেলে জীবনটা সত্যি বদলে যাবে ll