শরতের সোনালী রোদ
বর্ষা রানী বিদায় নিয়েছে। নব কলেবরে আকাশ-বাতাস মুখরিত। পেঁজা তুলোর মতো আকাশ মাঝেমধ্যে দেখা, নীল আকাশের বুক জুড়ে বলাকার সারি ডানা মেলে কোথায় চলেছে। মাঠের ধারে সাদা কাশফুল হাত নেড়ে তার মনের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছে। এভাবে চপলা বর্ষার বিদায়ের পর ঝলমলে আকাশে শরতের আনাগোনা। অপূর্ব শিউলি, গাছে ফুটে তাদের প্রিয় প্রকৃতির রূপ লাবণ্য প্রকাশ করছে, কখনো মাটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফুলশয্যা হয়েছে। পদ্মকলি জলাশয়ে মাথা তুলে সোনালী আলোয় নিজেকে মেলে ধরেছে ।রাস্তায় ব্যানার আগমনী বার্তা। কখনো কালো মেঘ নীল আকাশের শোভাকে সরিয়ে দিয়ে রোদ-বৃষ্টির খেলায় মত্ত। কুমোর পাড়ায় ঘিঞ্জি জায়গায় মা দুর্গা নানা বর্ণে শোভিত। গাছরা সজল হয়ে সুখস্মৃতি রোমন্থন করছে। সবুজপাতা অসাধারণ ভঙ্গিতে গাছের সৌন্দর্য বিস্তারে ব্যস্ত। নতুন জামা কাপড়ে বাজার সরগরম, ছোট শিশুদের মনে কত উন্মাদনা _কত জামা কাপড়ের নাম তাদের মুখে মুখে। ভোরের আলো প্রতিটি বাড়ির উঠানে ছড়ানো। ঝলমলে আকাশ আগমনীর বার্তা দিয়ে যাচ্ছে ।নদী-নালা খাল-বিল পূর্ণ। মাঠে মাঠে নীল আকাশের মাঝে সাদা কাশের মেলা। ঢাকের বাদ্য মনের মধ্যে থাকা আনন্দকে প্রকৃতির মাঝে বিলিয়ে দিতে সাহায্য করছে। পুজোর গান নতুন ভাবে পাড়ায় পাড়ায় বোল তুলছে। শারদীয়ার সংখ্যা প্রকাশে মেতে উঠেছেন কবি সাহিত্যিক। সকলের মধ্যে ব্যস্ততা তুঙ্গে। বইপাড়ায় মানুষের ভিড়। গঙ্গার পাড় সেজেছে নতুন আলোর ঝর্ণায়। গাছের পাতারা আমোদে খিলখিলিয়ে হাসছে। সোনা ঝরা রোদ কত দুর্যোগ বন্যা কে উপেক্ষা করে পৃথিবীর বুকে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলতে এসেছে। বাংলা মা প্রকৃতিতে সুন্দরের ডালি নিয়ে ঢাকের বাদ্যে মহালয়ার আগমনীর সুরে মানুষের ঘরে ঘরে মা দুর্গার আগমন বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে। সোনালী রোদ ঝলমলিয়ে ধানের আগায় বাতাসের সঙ্গে ঢেউ খেলে যাচ্ছে।