শপিংমলে একদিন
আমাদের খড়্গপুরের প্রথম শপিংমল…নিম পুরার পূজামল । কথায় বলে না …বনে গাছ না থাকলে ভেরেন্ডাই বৃক্ষ…আমাদের এখানকার বাসিন্দা দের সেই অবস্হা!কিছু ছুতো পেলেই মলে এসে ভীড় করে। আমার দু মেয়েই বাইরে থাকে…কর্তার ব্যস্ততা স্কুল নিয়ে। ভাবলাম একা একা মলে ঘোরার অভিজ্ঞতা করলে কেমন হয়… সেইদিন দুপুরে খাওয়ার পর অটো ধরে খড়গপূরের বাসস্ট্যান্ড এ এলাম ॥এবার নিমপুরা অটো ধরে পূজা মল ।
নিমপুরা জগন্নাথ মন্দিরের পাশেই ॥ অফার চলছে বলে বেশ ভীড় । এক তলা…দোতলা…তিন তলা ঘুরে ঘুরে কেনা কাটা করে তিন তলার ফুডকোর্টে এলাম ॥ভীড় ভালোই…একটা চেয়ার ম্যানেজ করে বসলাম॥সবাই দলবল নি য়ে এসেছে…আমার মত একা কেউ ন য় ।খুব ভালো লাগে এই মিলনমেলা দেখতে। কিছুক্ষণ পরে টেবিল খালি হতে এক anglo ইন্ডিয়ান বৃদ্ধা এসে ইংরেজী মেশানো হিন্দীতে বসার পারমিশন চাইলো। বসেই হাতের বিগশপার টা টেবিলে রাখলো।ভীষণ স্টাইলিশ…কাঁচাপাকা বয়েজ কাট চুল… পরনে স্কারট॥আমি তো আলাপ জমাতে ওস্তাদ…শুরু করল৷ম আলাপচারিতা। নাম ক্যাথি ডিসুজা ..ওঁর স্বামী ড্যানিয়েল ডিসুজা রেলের ওয়েল ফেয়ার অফিসার ছিলেন । একমাত্র মেয়ে বিয়ে করে অস্ট্রেলিয়া তে।গতবছর স্বামী মারা গেছেন । ঝাপেটাপূরে ডায় মন্ড টাওয়ারে ওঁর ফ্ল্যাট।আজ ওনা র স্বামীর প্রয়ান দিবস।মলের কাছেই সমাধি ক্ষেত্র॥উনি ওখানেই যাবেন…কেয়ারটেকার পাঁচটা তে সমাধিক্ষেত্রের গেট খুলবে…তাই মলে এসে অপেক্ষা করছেন । কথায় কথায় বললেন ওঁর মেয়ে মেদিনীপুর কলেজে ইংরেজী নিয়ে পড় তো।আমার মনে পড় লো রিয়ার কথা….ও আমাদের সাথে পড় তো…ইংরেজ়ী তেই… ঝাপেটাপুর থেকেই যেত…মর্নিং সেকসনে ॥ বললামআপনা র মেয়ের না ম কি রিয়া?84এর ব্যাচ?একমুখ হাসি নি য়ে মাথা না ড় লেন । আমি বললামআনটি..আমি রিয়ার ব্যাচমেট… খুব খুশী হলেন…বললেন_ভালোই হল ,তুমিও আমার সাথে চল ড্যানি য়েলের কবরে আলো জ্বালিয়ে তোমার সাথে ফিরবো॥
বৃদ্ধার হাত ধরে সমাধি ক্ষেত্রের দিকে এগোলাম!মলে এসেছিলাম বলেই তো ডিসুজা আনটির সাথে আলাপ হলো…এক নিঃসঙ্গ বৃদ্ধার মেয়ের জায়গাটা কিছুক্ষনে র জন্য নিতে তো পারলাম।সত্যি আজ পূজা মলে এসে ছিলাম বলেই কারুর ব্যথারপূজা তে সঙ্গ তো দিতে পারলাম॥