(১)
সাতটি বার ফেল মেরে
ছেলে করল রিটায়ার
পার্টিতে নাম লাগিয়েছে
করবে এবার দেশোদ্ধার ।
দেশের কাজে ব্যস্ত সে যে
ঘরের কাজের সময় নাই
রেশনের কিউতে গিয়ে
দাঁড়াতে হচ্ছে বাবকে তাই ।
(২)
বুড়োরা সব ছোট্টদের মত
কাণ্ড করে কত শত ।
গরীবদের গরীবই রাখে
সেবা নাহলে করবে কাকে?
সুহৃদ ওদের যত ব্যবসায়ী
মুখ ফেরালেই ধরাশায়ী ।
ঠিকাদারদের চুষেই চলে
বিল্ডিং ধপাস তার ফলে ।
গরীবের পেটে মেরে পাড়া
চর্ব চুষ্যের মালিক তারা ।
শেষ হবে না ওদের পাঁচালী
নিঃশেষ করলেও কাগজ কালি ।
(৩)
ট্রামেতে আর নেই ঠাঁই
বাসের অবস্থাও তাই
কী করে আপিস যাই
ভেবে না কিনারা পাই ।
ফুটপাতে পা চলে না
হকারদের আস্থানা
নন্দলাল হয়ে যাই না
কিসের এত ভাবনা ।
বেরোতে গেলে জট যান
বেঘোরে যে বস্ ধমকান
ঘরে বসেই বাঁচাবো জান।
(৪)
বাবা শুধায় ছেলেরে তার
‘তুই চলেছিস কোথায় আবার?’
ছেলে বলে – ‘স্কুলে যাচ্ছি,
মিড ডে মিল্ সেথায় পাচ্ছি ।
ঘরে তো তুমি কচু খাওয়াও
পিছু ডেকো না, – তুমি যাও ।’
বাবা রেগে টং – ‘স্কুলে গেলে তুমি
কে চষবে মাঠের জমি?’
ছেলে বলে – ‘চটছো কেন ড্যাডি
ঘরে মাম্মি রয়েছে তো রেডি
আজ দুজনেই নেমে যাও মাঠে
আমায় দিতে হবে মন পাঠে ।
যেতে আমার হবেই সেথা
পড়ে-লেখে হবো নেতা ।
(৫)
পরীক্ষা আসছে তো কী
থোড়াই করি কেয়ার
সেটারকে ফি দিয়েছি
আমায় ঠেকায় কে আর ।
ফিয়ের কথা ভাবতে হবে না
চিন্তার কিছু নেই এবার
মা দুর্গার বাজেট থেকে
করে দিয়েছি ফি সবার ।
গার্ড যতই হক না কড়া
ভয় করি না আর বাবা
ফিয়ের জোরেই বেরিয়ে যাব
সবাইকে বানিয়ে হাবা ।
(৬)
আজব আমাদের দেশ যে ভাই
আজব মোদের এই দেশ
সকাল বিকাল দাম বাড়ে যে
নেই যেন আর এর শেষ ।
আইন যতই করনা কেন
হোক না তা যতই কড়া
কাগজেই তা বন্দি রবে
মিছেই এত ভয় করা ।
বিশ্বে শান্তি ফেরাতে ভাই
মন্ত্রীরা সব সফরে যান
দেশের কথা ভাববে কখন
পার্টি বাঁচাতেই যায় প্রাণ।
(৭)
বেবী আছে ফুড নাই
ফ্যান্ আছে বিজলী নাই
কনে আছে বর নাই
আজব বটে দেশটাই ।
ট্রামে বসে ঠাঁই নাই
নোট আছে খচুরো নাই
যত্রতত্র বোমা পাই
আছি এ কোন স্বর্গে ভাই ।
(৮)
আপিস নয় এ বেডরুম
যেন এখন রাত নিঝুম
টেবিলে সব পা উঠিয়ে
বাবুরা ঘুমোয় আশ মিটিয়ে ।
চটপট কাজ করাতে চাও
সামনে কিছু চাঁদি ফেলাও
তা’না হলেই রেগে সাব
মুখ খিঁচোবে ‘ডোন্ট্ ডিস্টার্ব’ ।
৯)
যতই বলো চিচিং ফাঁক
মাথা ঠোকে করো না টাক
ফিরবে না তোমার লাক
বৃথা হবে চেষ্টা বেবাক ।
ইন্টারভিউ হোক না যা তা
খুলছে কে আর খাতার পাতা
চাকরি হবে চাঁদির ফলে
মেরিটের যুগ গেছে চলে ।