রুধির দাগ
ঝাঁঝাঁ মধ্য দুপুর গাছের ছায়ায় ঘামেভেজা শরীর জুড়িয়ে নিতে বসে আছি। যত দূর চোখ যায় আঁকাবাঁকা রাস্তা,রোদ্দুরে দু’একটা গাড়ি দ্রুত বেগে চলে যাচ্ছে। চাকার ঘর্ষনে রাস্তায় লেপ্টে যাওয়া কাজলের মত ধেবড়ানো দাগ । গুমোট বাতাস থমকে আছে, মাঝে মাঝে ঘুঘু ডাকছে অলস দুপুরের নিস্তব্ধতা ভেঙে।
বৃষ্টি আসবে না আজ নীল ঝকঝকে মেঘ শূন্য আকাশ। একটা শিকারি চিল চক্কর কাটছে আনমনে ডানায় তার রোদ চোয়ানো ঝিলিক। শান্ত ধ্যানমগ্ন উদাস দুপুর…
হঠাৎ বাতাসে শিস্ কাটার শব্দ কিছু ছেঁড়া পাতা আর ডানা ঝাপটানোর হতচকিত শব্দ –ঝুপ করে ঝরে পড়লো একটা ঘুঘু! ছোট্ট বুকে ফুটো, রক্ত চুইয়ে পড়ছে…
হাতের পাতায় তুলে নিলাম ছোট্ট শরীর তখনো কাঁপছে। চোখে তার নীরব জিজ্ঞাসা,কেন?
কেন তার জীবন,পৃথিবীর আলো কেড়ে নিলো — কী দোষ ছিলো?
সাথী পাখিটা দূর থেকে আতংকিত দৃষ্টিতে শুধু দেখছিলো নির্বাক অসহায়..
তপ্ত রক্তধারায় হাত ভিজে যাচ্ছিলো। অব্যক্ত যন্ত্রণার ঢেউ কেঁপে কেঁপে স্থির প্রাণহীন দেহ —
পাখির পাথর চোখে দৃষ্টি আটকে বসে রইলাম বাকহীন স্থবির….
কেউ এসে দাঁড়ালো আলোর বিপরীতে—
অশুভ দীর্ঘ তাঁর ছায়া রুধিরে রঞ্জিত হাতের থাবা।
তার পদশব্দে সারা প্রকৃতি বোবা আঁধারে ডুবে যাওয়ার পূর্বাভাসে কেঁপে উঠলো..