আকাশে আজকে নীলচে অন্ধকার
আষাঢ় হানা দিয়েছে রথের মেলায়,
বাদলে সিক্ত বৃক্ষলতার দল বজ্রবিদ্যুৎ কে একপলক দেখার আশায় পরবাসী হাওয়ার হাত ধরে আনন্দে নেচে উঠেছে,
কিন্তু একখানি কবিতা লেখা হলো না আমার আজ,
সারাবেলা কেটে গেল তালবৃক্ষের ন্যায় এক পায়ে দাঁড়িয়ে,
বেওয়ারিশ বৃষ্টির ফোঁটায় ভিজছে আমার মন,
অবিরাম ভিজে চলেছে ডাইরির পাতাগুলো।
শহরের আলো-অন্ধকার মাঝে মাঝে দোলা দিচ্ছে মাথায়,
অন্নদা বলেছিল – রথের মেলায় ভাসে
জিলাপি আর পাঁপড় ভাজার মিষ্টি সুবাস,
অসহায় ভঙ্গিতে আটচালায় পড়ে আছে
ক্লান্ত জীবন শব্দের দীপ্তি,
দিগন্তে গোধূলির রঙ মেখে বসে আছেন সূর্যদেব
রথের ধ্বজা কে অন্তিম প্রণাম জানাতে,
তবুও, একখানি কবিতা লেখা হলো না আমার আজ,
চোখের নেশাটা একটু ভারী হয়েছিল যেন,
নিমেষেই লন্ডভন্ড করে দিলো অসময়ের মন খারাপ,
গুমড়ে উঠলো আষাঢ়ের টুকরো টুকরো মেঘগুলো,
অঝোর ধারায় একাকী ভিজে চলেছে হৃদয়ের শূন্য কুঞ্জ,
প্রচন্ড যন্ত্রণায় কাঁপছে শরীরের হাড়গুলো,
যেন রথযাত্রায় ভেসে চলেছে নীলাচল ।
বাতাসে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে
খোল-করতালের ধ্বনি,
আমার অন্তরে বাহিরে তখনও
ঝরে চলেছে অবিশ্রান্ত বারিধারা
প্রতিটি বৃষ্টিফোঁটার শব্দে জেগে উঠেছে কৃষ্ণনাম,
জয় জগন্নাথ শব্দে একটু একটু করে
এগিয়ে চলেছে রথের চাকা,
রশিতে পড়েছে ভালোবাসার টান,
আমি তখনও একপায়ে দাঁড়িয়ে তালবৃক্ষের মত,
গুনে চলেছি অবিশ্রান্ত মানুষের ঢেউ,
আর মনের মধ্যে একবুক বিরহ নিয়ে
গাইছি – কৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম।