রথযাত্রা
সে এক প্রাচীন কালের কথা……….
মালব দেশের অবন্তীনগরে এক রাজা ছিলেন ইন্দ্র দ্যুম্ন নামে।তাঁর স্ত্রী গুন্ডিচা দেবী!রাজারানী .পরম বিষ্ণু ভক্ত। রানী এক সন্ন্যাসীর মুখে শোনেন যে ভগবান বিষ্ণু ‘ ‘ নীলমাধব” নামে পুরুষোত্ত্ম .ক্ষেত্রের নীল পর্বতে শবরদের দ্বারা গোপনে পূজিত হচ্ছেন । রাজা সেই জায়গার খোঁজে তাঁর পুরোহিতের ভাই বিদ্যাপতি কে পাঠান ।
বিদ্যাপতি শবররাজ বিশ্বাবসুর কন্যা ললিতা কে বিয়ে করেন ও কৌশলে নীলমাধবের খোঁজ আবিষ্কার করে রাজা কে জানান । রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন এসে দেখেন যে ভগবান লুকিয়ে পড়ে ছেন । সবাই বলে তিনি নিম গাছে লুকিয়ে ছিলেন। রাজা হতাশ হয়ে প্রাণ ত্যাগ করবেন স্হির করলে ভগবান তাঁকে স্বপ্নে দেখা দিয়ে বলেন যেএই স্হানে ই তাঁরমন্দির তৈরি করতে হবে এবং তিনি ”দারু ব্রোম্হ ” ‘ রূপে পূজা নেবেন ॥ স্বপ্না দেশে সমুদ্রে কাঠ ভেসে আসে। সেই কাঠ এত শক্ত যে কোন কারিগর তা থেকে মূর্তি বানাতে পারলো না । তখন ভগবানে র আদেশে বিশ্বকর্মা অনন্ত মহারানা র রূপে আসেন মূর্তি তৈরি করতে। তাঁর শর্ত ছিল ২১দিন ধরে তিনি দরজা বন্ধ করে মুর্তি বানাবেন । চোদ্দ দিনে র মাথায় ঘরের ভেতরে কোন .শব্দ না পেয়ে রানী গুন্ডিচাদেবী দরজা খুলে দেখেন অর্ধসমাপ্তমূর্তি….কারিগর অদৃশ্য।রানী ও রাজার আকুল কান্না য় ভগবান স্বপ্নাদেশ দেন যে এই অর্ধ সমাপ্ত মূর্তি তেই তিনি পূজা নেবেন । রাজা এই মূর্তি প্রথমে পূজো করতে রাজি ছিলেননা ॥ রানী র আকুল কান্না য় যখন ভগবানে র স্বপ্না দেশ হল… ভগবান নয় দিন রানী র কাছে থেকে পূজা নেবেন ….এই মাসীর বাড়ি যাওয়াই রথযাত্রা!নয় দিন পর ফিরে আসাই উল্টোরথ ।ভগবানে র এই মাসীর বাড়ি যাওয়া ও ফিরে আসাই রথযাত্রা উৎসব॥ মাসীর বাড়ি গিয়ে ভগবান ”পোড় পিঠা” খান ভোগে। উল্টো রথের এক বিশেষ অনুষ্ঠান হল…অধরপণা ….জগন্নাথ দেবের অধর পর্যন্ত উচ্চতার মাটির পাত্রে এক বিশেষ শরবত ভগবান কে উৎসর্গ করা হয়। এরপর ওই পাত্র ফাটিয়ে পার্শ্ব দেবতাদের ওই শরবত উৎসর্গ করা হয়…..এর সাথেই শেষ হয় উল্টোরথ উৎসবের ॥
রথযাত্রা নিয়ে কতনা .লোককথা।ওড়িশা র প্রচলিত লোকবিশ্বাস যে ত্রেতাযুগে শ্রীরাম চন্দ্রের বিমাতা কৈকেয়ি শ্রীরামের সাথে যে দুর্ব্যবহার করেছিলেন তার অনুশোচনা য় তিনি খুব কান্না কাটি করেন ! তখন শ্রীরাম তাঁকে সান্তনা দিয়ে বলেন যে যখন তিনি জগন্নাথ রূপে পূজিত হবেন তখন তাঁর বিমাতাকে মাসীরূপে পাবেন ও তাঁর কাছে নয় দিন পুজা গ্রহন করবেন॥ এই কথা দিয়েছিলেন বলেই রথযাত্রায় তিনি বিমাতা কৈকেয়ির নবরূপ রানী গুন্ডিচার কাছে নয় দিন পূজা পান ও বিমাতার মন বাসনা পূর্ণ করেন ॥