ফের যদি ফিরে আসি ;
ফিরে আসি যদি
কোন শুভ্র শরতের অম্লান প্রভাতে,
কিংবা কোনো নিদাঘের শুষ্ক রুক্ষ তপস্যার দ্বিপ্রহরে
কিংবা শ্রাবণের বৃষ্টি-ধরা ছিন্নমেঘ রাতে কোনো,—
নূতন ধরণী ‘পরে কারেও কি পারিব চিনিতে,
কাহারেও পড়িবে কি মনে ?
এ-জীবনে যাহাদের ভালোবাসিয়াছি
আজ ভালোবাসি যাহাদের
তাহাদের সাথে হবে দেখা ?
— পারিব চিনিতে ?
জন্ম লবো হয়তো সে
কোন্ ঊর্মি-ছন্দোময়ী ফেনশীর্ষ সাগরের তীরে
ডুবুরীর ঘরে,
কিংবা কোন্ জীর্ণ ঘরে কোন্ বৃদ্ধ নগরীর নগণ্য পল্লীতে
দীনা কোন্ পথের নটীর কোলে ;
কিংবা — কোথা, কিছু নাহি জানি |
এই আলো সেদিন নয়নে জ্বলিবে কি ?
এই তারা এই নীলাকাশ সম্ভাষিবে আর বার ?
সেদিন কি এমনি ফুটিবে ফুল,
এইমতো তৃণ
জাগিবে কি পদতলে
এইমতো পুঞ্জ-পুঞ্জ প্রাণ
সমস্ত নিখিলময় ?
পড়িবে কি মনে,
এই আলো মোর চোখে একদিন লেগেছিল ভালো ;
এই ধরণীর ‘পরে আমি খেলা করিয়াছি,
. কাঁদিয়াছি হাসিয়াছি
. ভালোবাসিয়াছি ?
যে মুকুল আশাগুলি রেখে যাবো আজ
জীবনের খেয়াঘাটে বিদায় সন্ধ্যায় অর্ধস্ফুট,
তাহাদের সাথে আর
হবে ফিরে দেখা ?
এ জীবনে যত কাজ সাঙ্গ হ’ল নাকো,
যত খেলা রয়ে গেল বাকি,
ফিরে আর পাবো তাহাদের ?
আমার চোখের জল,
মোর দীর্ঘশ্বাস,
হতাশা, বেদনা,
তাদের সাথে পুনঃ হবে পরিচয় ?
যত দুঃখ ফেলে রেখে যাবো
তাহারা শুধাবে ডেকে,
ডেকে কহিবে কি প্রিয়া,
“আমারে ভুলিয়া ছিলে কেমন করিয়া ?”
আবার প্রিয়ার সাথে সুখে দুঃখে কাটিবে কি দিন,
এমন করিয়া প্রতি জীবনের দণ্ড পল সুধাসিক্ত করি,
আনন্দ ছড়ায়ে চারিদিকে, আনন্দ বিলায়ে সর্বজনে ?
সকলেরে ভালোবেসে — ভালোবেসে সব-কিছু
দুর্দিনে নির্ভয় আর দুঃখে ক্লান্তিহীন
চলিতে পাবো কি দুইজনে
এক সাথে ?
ফের যদি ফিরে আসি,
আরো আলো চক্ষে যেন আসি নিয়ে,
বুকে আরো প্রেম যেন আনি
পৃথিবীকে আরো যেন ভালো লাগে |
এবারের মতো ভুল ভ্রান্তি
স্খলন পতন
ক্ষমায় ভুলিয়া আসি ;
আরো আনি পথের পাথেয়
আনন্দ অক্ষয় !