Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ম্যানহাটানে ম্যানহান্ট || Sujan Dasgupta » Page 6

ম্যানহাটানে ম্যানহান্ট || Sujan Dasgupta

সন্ধ্যেবেলায় বেন্টুমাসির ফোন। দারুণ উত্তেজিত। এইমাত্র উনি সাহানিদের কাছ থেকে খবর পেয়েছেন যে, ট্যাপান জি ব্রিজের কাছে পুলিশ নাকি গোভিন্দ জসনানির ডেড বডি আবিষ্কার করেছে! একেনবাবু বাড়ি নেই শুনে খুব নিরাশ হলেন। তারপর যখন শুনলেন যে, একেনবাবু একটা সেমিনার অ্যাটেন্ড করতে গেছেন তখন বললেন, “আচ্ছা লোক তো একেন! কোথায় খুনি ধরবে, না ঘোড়ার ডিম বক্তৃতা শুনে বেড়াচ্ছে! যত্তসব! যাই হোক, একেন এলেই আমাকে ফোন করতে বলিস।”

“তা তো বলব। কিন্তু আমাকে একটু বল না কী ব্যাপার?”

“ব্যাপার আর কী, ধর্মের কল বাতাসে নড়ছে! পাপ করেছিস, তার ফল ভোগ করতে হবে না!”

“কার পাপের কথা বলছ?”

“কোন রাজ্যে থাকিস তুই। অ্যাঁ? মনিবকে খুন করে কোটিকোটি টাকা নিয়ে একটা লোক পালাল, আর তুই বলছিস, কার পাপের কথা হচ্ছে!”

বেন্টুমাসির ওয়ান ট্র্যাক মাইন্ড। মাথায় যখন একবার ঢুকেছে যে, গোভিন্দ জসনানি একটা খুনি, শিবেরও সাধ্য নেই সেটার নড়চড় করানোর! সুতরাং শ্যাম মিরচন্দানির ডেথ যে ন্যাচারাল, আবার সে প্রসঙ্গ তুলে সময় নষ্ট করলাম না।

“বুঝেছি বুঝেছি,” আমি বললাম। “কিন্তু গোভিন্দ জসনানিকে মারল কে?”

“আরে বাপু, সেই জন্যেই তো একেনের সাহায্য দরকার। আমি বুঝতে পারছি, কে। মেরেছে। কিন্তু প্রমাণটমানগুলো একেনকে একটু খুঁজে পেতে বের করতে হবে।”

“দাঁড়াও, দাঁড়াও,” আমি বললাম, “হু ইজ দ্য মার্ডারার, সাহানিদের কেউ?”

“তোর ঘটে কী আছে রে? এদিকে তো শুনি পিএইচ.ডি. না কী ছাই করেছিস! নিশ্চয় টুকে পাশ করেছিস, নইলে বলিহারি এদেশের পিএইচ.ডি.!”

“আঃ, ওসব কথা থাক! বলো না তোমার সাসপেক্ট কে?”

“কে আবার? যে লোকটা জানত, ব্যাগে ওই টাকাগুলো আছে!”

“সেটা তো অরুণ!” আমি বললাম।

“কেন, অরুণ ছাড়া আর কেউ জানত না? যে-লোকটা শ্যাম মিরচন্দানিকে টাকাটা দিয়েছিল সে কোথায় গেল, সে জানত না?”

“দ্যাটস ট্রু।”

“আমি তো বলি যে, ওই লোকটার সঙ্গেই বুড়ো গোভিন্দের ষড় হয়েছিল। গোভিন্দ টাকাটা সরিয়ে প্রথমে ওর বাড়িতে গিয়ে গা ঢাকা দেবে। ভাগ-বাঁটোয়ারা সব সেখানেই হবে। তারপর সবকিছু ঠান্ডা হলে খুনি গোভিন্দ ভালোমানুষ সেজে আবার উদয় হবেন!”

“দেন হোয়াই ওয়াজ হি মার্ডারড, গোভিন্দ খুন হলেন কেন?”

“উত্তরটা তুই একটু ঘটের বুদ্ধি খরচা করে দে!”

“আমার মাথায় কিছু খেলছে না, তুমিই বলো।”

“আঃ, এত একেবারে ব্যোমকেশের গল্পের মত! গোভিন্দ যখন টাকা নিয়ে ওই লোকটার কাছে গিয়ে হাজির হল, তখন লোকটা ভাবল, বাঃ, এই তো সুযোগ! গোভিন্দকে যদি এখন আমি মারি, তাহলে তো আর ভাগ দেবার প্রশ্নই ওঠে না, পুরো টাকাটাই আমার হয়ে যায়!”

আমায় স্বীকার করতেই হবে যে, বেন্টুমাসি মে হ্যাভ এ পয়েন্ট। বেন্টুমাসির থিওরি যদি সত্যি হয়, তাহলে তার আরও একটা ইমপ্লিকেশন আছে। সেটা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে আর কারও জানার কথা নয় যে, গোভিন্দ জসনানি ওই লোকটার বাড়িতে গিয়ে উঠেছে। সুতরাং, মিস্টার জসনানিকে মার্ডার করে, বডিটা দূরে কোথাও ফেলে দিয়ে এলে, খুনের সঙ্গে ওই লোকটাকে জড়ানো বেশ কঠিনই ব্যাপার হবে!

একেনবাবু ফিরলেন বেন্টুমাসির ফোনের আধ ঘন্টা পরে। আমরা ভেবেছিলাম, জসনানির মার্ডারের খবরটা দিয়ে ওঁকে বেশ একটু অবাক করে দেব। কিন্তু ও হরি, উনি ইতিমধ্যেই সব জেনে বসে আছেন! আসলে উনি যে সেমিনারে গিয়েছিলেন, ইন্সপেক্টর লান্ডিও সেখানে ছিলেন। তার কাছ থেকেই খবরগুলো উদ্ধার করেছেন বুঝলাম। একেনবাবুর ভার্সান থেকে পরিষ্কার হল যে, বেন্টুমাসি একটা তথ্য জানতেন না। হুইচ ইজ ভেরি কুশিয়াল। সেটা হচ্ছে গোভিন্দ জসনানির মৃত্যুর কারণ। শ্যাম মিরচন্দানির মতো গোভিন্দ জসনানির মৃত্যুটাও সম্ভবত স্বাভাবিক হার্ট অ্যাটাক। অবশ্য অটপসির রিপোর্ট এখনও পুরো পাওয়া যায়নি।

একেনবাবু বললেন, “আমাকে একটু হোয়াইট প্লেইন্স পুলিশ স্টেশনে যেতে হবে। একটা রাইড দেবেন স্যার?”

কেন, কী, ইত্যাদি নানা প্রশ্ন মাথায় এল। কিন্তু সেগুলো জিজ্ঞেস না করে বললাম “শিওর।”

প্রমথ বলল, “চল, আমিও যাব।”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *