Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ম্যানহাটানে মুনস্টোন || Sujan Dasgupta » Page 13

ম্যানহাটানে মুনস্টোন || Sujan Dasgupta

ফোনে ডিরেকশনটা নিয়ে নিয়েছিলাম। লাল-নীল টিউব লাইট দিয়ে ‘পিঙ্ক এলিফ্যাণ্ট’ নামটা নাকি বড় করে লেখা থাকবে – দূর থেকেই দেখা যাবে।
কুইন্স বুলেভার্ড দিয়ে জ্যামাইকা অ্যাভিনিউয়ে বাঁ দিকে ঘুরে অল্প একটু এগিয়ে হান্ড্রেড ফর্টিএইট্‌থ স্ট্রিটে ডানদিকে। তারপর অনেকটা পথ পার হয়ে কয়েকবার ডানদিক বাঁদিক করার পর সরু একটা রাস্তায় ঢুকতেই সাইনটা দেখতে পেলাম। এই অঞ্চলের সব বাড়িগুলোরই জরাজীর্ণ অবস্থা। ‘পিঙ্ক এলিফ্যাণ্ট’ একটা চারতলা বাড়ির নীচের তলায়। পাশেই একটা পার্কিং লট। সেখানে গাড়ি পার্ক করে রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম।
রেস্টুরেন্টের ইন্টিরিয়র ডেকোরেট যে করেছে অবভিয়াসলি সে রঙের খেলায় বিশ্বাসী। দেয়ালের রঙ শকিং পিঙ্ক। সেটা না হয় মানা গেল – নামকরণের সার্থকতা তো রাখতে হবে। কিন্তু চেয়ারের গদিগুলোও কি ওরকম উৎকট লাল নীল হলুদ ফুলকাটা না হলে চলত না! টেবিল ক্লথগুলোও ওভারব্রাইট – একটা আরেকটাকে টেক্কা দিচ্ছে। যাক সে কথা। রেস্টুরেন্টে ভীড় তেমন নেই। আজ শুক্রবার – ভীড়টা রাতের দিকেই মনে হয় বেশী হবে। ওয়েটার আমাদের একটা টেবিলে বসাতে নিয়ে যাচ্ছিল, একেনবাবু তাকে থামিয়ে ম্যানেজারের খোঁজ করলেন।
দোকানের ম্যানেজার পোর্টারিকান, ভাঙা-ভাঙা ইংরেজিতে কথা বলে। নিজের পরিচয় দিল গঞ্জালেস বলে। একেনবাবু পকেট থেকে যেটা বার করলেন, সেটা আমি দেখব ভাবি নি! মিস্টার প্যাটেলের বেডরুমে যে ফটোটা দেখেছিলাম সেটা! সেদিন কখন ওটা পকেটে পুরেছিলেন, খেয়ালও করি নি। ছবিটা দেখিয়ে একেনবাবু জিজ্ঞেস করলেন যে, ওঁকে কেউ রেস্টুরেণ্টে কোনওদিন দেখেছে কিনা।
গঞ্জালেস সতর্ক লোক। বলল, “আপনি কে?”
আমি ঠিক এই প্রশ্নটারই ভয় পাচ্ছিলাম। এমন কি একেনবাবুকে বলেওছিলাম যে, সম্ভবত আমাদের কেউ কিছু বলবে না। একেনবাবু দেখলাম মোটেও দমলেন না। বললেন, “গুড কোয়েশ্চেন স্যার। আমি হচ্ছি ইনসিওরেন্স ইনভেস্টিগেটর, স্টোলেন প্রপার্টি নিয়ে ইনভেস্টিগেট করছি।”
একেনবাবুর গুলটা শুনে আমি অবাক। গঞ্জালেসও দেখলাম কেমন জানি কথাটা মেনে নিল। এমন সময় একটা খরিদ্দার এল বিল পে করতে। পয়সা গুণে ক্যাশ রেজিস্টারে রাখতে-রাখতে গঞ্জালেস কোনদিকে না তাকিয়েই বলল, “হ্যাঁ, আমি একে দেখেছি।”
সঙ্গে-সঙ্গে একেনবাবুর দ্বিতীয় প্রশ্ন, “ওঁর সঙ্গে আর কেউ আসতেন কি?”
“থ্যাঙ্ক ইউ এণ্ড কাম এগেন,” খরিদ্দারের দিকে কথাটা ছুঁড়ে দিয়ে একেনবাবুর চোখে চোখ রাখল গঞ্জালেস, “ম্যান, ইউ অ্যাস্ক টু মেনি কোয়েশ্চনস!”
“ট্রুলি সরি স্যার,” একেনবাবু কাঁচুমাচু মুখে বললেন, “কিন্তু এই ভদ্রলোক দুদিন আগে খুন হয়েছেন। এই চুরির ব্যাপারটা আমি পুলিশ নাক গলাবার আগেই চুকিয়ে ফেলতে চাই।”
পুলিশের কথায় মনে হল একটু কাজ হল। গঞ্জালেস কয়েক মুহুর্ত কিছু একটা ভাবল। তারপর একটা লোককে হাতছানি দিয়ে ডেকে স্প্যানিশে কিছু বলে, আমাদের বলল, “ফলো মি।”
আমি লোকটার মতিগতি খুব একটা আঁচ করতে পারছিলাম না। প্রায় সাড়ে ছ’ফুট লম্বা, বিশ্বশ্রী টাইপের চেহারা। আমাকে আর একেনবাবুকে এক হাতেই লোফালুফি করার ক্ষমতা রাখে! একেনবাবু দেখলাম গুটিগুটি পেছন-পেছন চলছেন। আমি দাঁড়িয়ে আছি দেখে বললেন, “আসুন স্যার, ফলো করতে বলল তো!”
আমি মনে মনে প্রার্থনা করছি, ঈশ্বর করুন, একেনবাবু যেন একজন ক্যারাটে এক্সপার্ট হন। গঞ্জালেস ব্যাটা গলিতে নিয়ে গিয়ে অ্যাটাক করলে যেন নিমেষে কাবু করে দিতে পারেন!
দুটো বাড়ির মাঝখানের সরু প্যাসেজ দিয়ে গঞ্জালেস যেখানে আমাদের নিয়ে এল, সেটা একটা ছোট্ট অফিস ঘর। ফার্নিচার বলতে একটা টেবিল, কয়েকটা পুরনো রেক্সিন মোড়া চেয়ার, আর একটা ভাঙাচোরা ফাইল ক্যাবিনেট! দেয়ালটা অসম্ভব নোংরা, তবে তার বেশির ভাগই ফটো দিয়ে ঢাকা। নিউ ইয়র্কের বিভিন্ন বেস বল প্লেয়ারের সঙ্গে তোলা গঞ্জালেসের ছবি চতুর্দিকে ঝুলছে! লোকটা নিঃসন্দেহ বেসবল ফ্যান।
আমাদের চেয়ারে বসতে বলে গঞ্জালেস একটা চুরুট ধরাল। তারপর জিজ্ঞেস করল, “হোয়াট এক্স্যাক্টলি ইউ ওয়াণ্ট টু নো?”
“আপনি এই লোকটা বা তার সঙ্গীদের সম্পর্কে যা জানেন তাই কাজে লাগবে।”
কথাটা শুনে গঞ্জালেস চুরুটে একটা লম্বা টান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে-ছাড়তে বলল, “ইউ নো, আই ডোণ্ট লাইক ইউ।”
খেয়েছে রে! আমি মনে মনে প্রমাদ গুনলাম। একেনবাবুও দেখলাম বেশ থতমত খেয়ে গেছেন। কিন্তু আমরা কিছু বলার আগেই গঞ্জালেস নিজেই আবার বলল, “বাট আই উইল টক, আই হ্যাভ নাথিং টু হাইড।”
“থ্যাঙ্ক ইউ স্যার।”
“ছবিটা আর-একবার দেখি।”
একেনবাবু ছবিটা বের করে দিলেন।
“ইয়েস, ঠিকই বলেছি আমি। এই লোকটা প্রত্যেক ফ্রাইডে-তে আসত ওর কয়েকটা বন্ধু কে নিয়ে। সন্ধ্যা থেকে প্রায় রাত বারোটা পর্যন্ত তাস খেলত আর গল্পগুজব করত। তারপর ফিরে যেত, ব্যস। বাট আই অ্যাম টেলিং ইউ – নো মানি এক্সচেঞ্জ, নো গ্যাম্বলিং – ওসব এ রেস্টুরেন্টে চলে না।”
শেষের কথাটা না বললেও চলত। বুঝলাম লোকটা ঝামেলা এড়াতে চায়।
একেনবাবু বললেন, “আপনি আসতেন বললেন, লাস্ট ফ্রাইডে-তে এসেছিলেন?”
“না, লাস্ট ফ্রাইডে-তে আসে নি। দু’সপ্তাহ আগে ওদের টেবিলে এত অসম্ভব চ্যাঁচামেচি আরম্ভ হয় যে, অন্যান্য খদ্দেররা কমপ্লেন আরম্ভ করে। ওদের রেগুলার ওয়েটার ছিল জো। আমি জো-কে ডেকে বলি ওদের চুপ করতে বলতে। জো ওদের সেটা বলতেই একটা ইণ্ডিয়ান জো-র কলার ধরে ঝাঁকাতে শুরু করে। আমি তখন ওদের সবাইকে চলে যেতে বলি। আমার সোজা কথা, ইউ ক্যান হ্যাভ ফান, অ্যাজ লং অ্যাজ ইউ বদার নো বডি। এনিথিং এলস?”
“থ্যাঙ্ক ইউ সো মাচ স্যার। শুধু আর-একটু ট্রাবল দেব। আপনি কি জো-কে একটু পাঠিয়ে দিতে পারেন? ওনলি ফর এ ফিউ মিনিটস?”
“অলরাইট, কিন্তু বেশিক্ষণ নয়। আমি শর্ট হ্যাণ্ডেড। দুটো ওয়েটার আজ আসে নি!”

গঞ্জালেস আমাদের বসিয়ে রেখে চলে যাবার পর কয়েক মিনিটের মধ্যেই জো এল। বছর-পঁচিশেক বয়স, ব্ল্যাক আমেরিক্যান। আমেরিকানদের তুলনায় ছোটখাটো চেহারা – আমাদেরই সাইজ। ছেলেটা কথা বলতে খুব ভালবাসে। কিরিট প্যাটেলের ফটোটা দেখামাত্রই ও চিনতে পারল। জো-র কাছ থেকে মোটামুটি এটুকু জানা গেল, কিরিট প্যাটেলের সঙ্গে আরও জনা চারেক ছিল রেস্টুরেণ্টের রেগুলার খদ্দের। এছাড়া কিছু-কিছু লোক মাঝেমধ্যে ওদের সঙ্গে এসে বসত । রেগুলারদের মধ্যে একজন ছিল সিড, জো-র খুব ফেভারিট। শুধু ভাল টিপস দেওয়া নয়, জো-র সঙ্গে অনেক গল্পগুজব সে করত । শেষদিনের ঝগড়াটা শুরু হয়েছিল তাস খেলার পরে। দলের সবাই তখন চলে গেছে, কেবল তিনজন বাদে। সিড ছাড়া আর যে দু’জন ছিল, তারা রেগুলার না হলেও বেশ কয়েকবার জো তাদের দেখেছে। তাদের মধ্যে একজন আবার সেদিন খেলার হিসেব রাখছিল। ওদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি চলছে জো বুঝতে পারছিল। এমন সময় জো শুনতে পেল সিড বলছে, ‘এটা একটা ডিলই নয়, আই ডিড অল দ্য ওয়ার্ক।’ আরেকজনের গলা, ‘বাট আইডিয়া ওয়াজ মাইন।’ এর পরের কিছু কথাবার্তা জো শুনতে পায় নি। কিন্তু তারপর আবার সিডের একটা কথা কানে ভেসে আসে, ‘আই হ্যাভ অ্যানাদার ইণ্টারেস্টেড পার্টি। কার্ট হ্যাজ অলরেডি মেড মি অ্যান অফার।’ ‘আই ওয়ার্ন ইউ,’ অন্য দু’জনের একজন বলে, ‘ডোণ্ট গেট এনি থার্ড পার্টি ইনভলভ্ড।’
এমন সময় আবার ব্যাণ্ড শুরু হওয়াতে জো আর কিছু শুনতে পায় নি। এর একটু পরেই ম্যানেজার ওকে পাঠায় সবাইকে চুপ করাতে। জো গিয়ে দেখে, যে-লোকটা খেলার হিসেব রাখছিল, সে সিডকে খুব শাসাচ্ছে। জো তাকে চুপ করতে বলায় আর-একজন যে ছিল, সে জো-র কলার চেপে বলে, ‘ডোণ্ট ইউ এভার টক টু আওয়ার বস লাইক দ্যাট !’ তখন ম্যানেজার এসে পুলিশের ভয় দেখাতেই সবাই হাওয়া হয়।
কিন্তু এর পর যে-দুটো জিনিস জো-র কাছ থেকে পেলাম, সেটা খুব অপ্রত্যাশিত। প্রথমটা ছিল শেষ দিনের তাস খেলায় পয়েণ্টের হিসেব। ওটা পড়ে আছে দেখে জো তুলে রেখেছিল। ব্রিজ খেলার স্কোর আর তার নীচে চারটে নাম লেখা। সিড আর কার্টের পাশে চারটে প্লাস, কে.জি আর জি-র পেছনে কিছু নেই। কিন্তু কাগজটা তার থেকে অনেক বেশী ইন্টারেস্টিং। রিং বাইন্ডার থেকে ছেঁড়া কাগজ। ওপরে ইংরেজিতে লেখা, ফেব্রুয়ারি ৯, ১৯৮৯। দেখেই বুঝলাম এটা মিস্টার প্যাটেলের ডায়রি থেকে নেওয়া কাগজ।
দ্বিতীয় প্রাপ্তি হল, জো-র ফেভারিট কাস্টমার, সিড-এর সঙ্গে তোলা জো-র একটা ফটো। ক্রিসমাসের ক’দিন আগে পার্টির সময় আর-একজন ওয়েটার ফটোটা তুলেছিল। আজ শুক্রবার, তাই জো সঙ্গে করে এ দুটো জিনিস নিয়ে এসেছিল – ওরা যদি আসে – তাহলে দেবে বলে। সিড-এর মুখটা মনে হল চেনা-চেনা, কিন্তু মনে করতে পারলাম না।
একেনবাবু জো-কে বস আর তার সঙ্গীর চেহারাটা বর্ণনা করতে বললেন। দুজনেই নাকি বেঁটে আর মোটা। ওদের মধ্যে বসের খুব লম্বা চুল। আর দুজনেই খুব ডার্ক।
আমেরিকানরা অবশ্য আমাদের রঙের তফাত্ অনেক সময়েই বুঝতে পারে না। আমি জো-কে পরীক্ষা করার জন্য জিজ্ঞেস করলাম, “বল তো আমাদের মধ্যে কে বেশি ফর্সা?” জো-র মতে আমরা দুজনেই খুব কালো। অথচ একেনবাবু খুব ফর্সা না হলেও, আমি ওঁর থেকে অন্তত দু-পোচ কালো!

অফিসঘর থেকে বেরনোর মুখে নজরে পড়ল, একটা ক্যাকটাস গাছ। ঢোকার মুখে কেন খেয়াল হয় নি জানি না। বেশ বড় লাল রাংতা জড়ানো একটা চিনেমাটির পটে বালি আর পাথরের ওপর গাছটাকে ভারী সুন্দর লাগছে দেখতে। আরও বেশি করে ওটা নজরে পড়ল, কারণ অফিসের অন্যান্য জিনিসের সঙ্গে গাছটা একটু বেমানান । আমরা দু’জনেই গাছটার দিকে সপ্রশংস দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি দেখে জো বলল যে, গাছটা সিড সেদিন নিয়ে এসেছিল। কারোর জন্য বার্থ ডে গিফট।
কিন্তু সেটা এখানে কেন? উত্তরে জো যা বলল দ্যাট এক্সপ্লেইনস দ্য পার্কিং টিকিট। সিড সেদিন চলে যাবার একটু পরেই ফিরে আসে। বলে ওর পার্কিং টিকিটটা খুঁজে পাচ্ছে না। জো পার্কিং লট-এর অ্যাটেন্ডেন্টকে খুব ভালো করে চিনত। ম্যানেজারের পারমিশন নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটা মেটায়। গাড়ি স্টার্ট করার আগে সিড হঠাৎ গাড়ির ট্রাঙ্কটা খুলে জো-কে গাছটা রাখতে বলে। এটা নাকি একটা বার্থডে গিফট, যাকে দেবার কথা ছিল সে আসে নি। নেক্সট উইকে যখন আসবে তাকে দেবে। এ ক’দিন জো ওটা রেস্টুরেন্টে রেখে দিলে ওটাকে আবার বয়ে আনতে হবে না। সেটাকেই জো অফিসে এনে রেখেছে।
একেনবাবু বাংলায় আমাকে বললেন, ভারি চমৎকার গাছটা স্যার। চুরি করতে ইচ্ছে করছে!”
চুরি করার মতই বটে। প্রমথর খুব গর্ব ওর ক্যাকটাস নিয়ে, কিন্তু সেটা এর কাছে দাঁড়ায় না!

পার্কিং লটটা রেস্টুরেন্টের একেবারে গাড়িতে উঠে আমি বললাম, “আপনি ব্রিজ শাহকে দেখেন নি। লোকটার লম্বা লম্বা চুল, জো-র বর্ণনার সঙ্গে দিব্বি মিলে যাচ্ছে।”
“তাই নাকি!”
একেনবাবু একটু অন্যমনস্ক। দেখলাম মন দিয়ে তাস খেলার স্কোরের কাগজটা দেখছেন।
“কি দেখছেন?”
“টাকা এক্সচেঞ্জ এখানে হয়ত হত না, কিন্তু বাজি ধরেই খেলা হত।”
“ওই প্লাস সাইনগুলো দেখে বলছেন?”
“রাইট। মনে হচ্ছে ওগুলো থেকে পরে হিসেব করে টাকার লেনদেন হত। এই ‘বস’ই ছিল ব্যাঙ্কার। ”
“সেইজন্যেই কি শুক্রবারের পাতাগুলো মিসিং?”
“পসিবল স্যার। কিন্তু সে ক্ষেত্রে ডায়রিতে ফেব্রুয়ারি ১৬ তারিখের পাতাটা থাকা উচিত।”
“দেখতে হবে – যদি না জুয়োর আসরটা অন্য কোথাও বসে থাকে।”
একেনবাবু হঠাৎ চুপ করে গেলেন। এবার মনে হল উনি একটু চিন্তিত। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কি হল, কি ভাবছেন?”
“নাঃ,” একেনবাবু বললেন। “ব্যাপারটা বেশ ঘোরতর মনে হচ্ছে স্যার।”
“কেন বলুন তো?”
একেনবাবু পকেট থেকে মিস্টার প্যাটেলের মেলবাক্স থেকে পাওয়া চিঠিটা বার করলেন। তারপর হিসেবের কাগজটা পাশাপাশি রাখলেন।
“অ্যাপার্টমেণ্ট নম্বর 304-এ 4-এর শুঁড়টা লক্ষ করুন স্যার, আর এই কাগজে লেখা 4-গুলোর। খুব আন্ইউসুয়াল, আর হুবহু এক ধরনের – তাই না?”
“তার মানে তো ওই ‘বস’ই চিঠিটা লিখেছে”, আমি বললাম। “তাহলে আমাদের কাজ, জো-র ফেভারিট কাস্টমার সিডকে খুঁজে বার করা।”
“সেটাই সমস্যা স্যার। সিডের ছবিটা আমি গত সপ্তাহে ‘ইণ্ডিয়া অ্যাব্রড’-এ দেখেছি। লোকটা সহদেব ভারওয়ানি, সেই অ্যান্টিক ডিলার – যে গাড়ি চাপা পড়ে মারা গেছে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *