গরম ভাতের সুপক্ক ঘ্রাণের মতো তোমার মৌতাতে নিজেকে ঋদ্ধ করেছি মনে আছে।
যে চন্দন পত্রলেখা বাম পয়োধরে নির্দ্বিধায় ধরে
মুখে ভরে দিয়েছিলে কত কাল ধরে
সেই তুমি পৃথিবীর প্রতিবেশী মেয়ে,
খালি হাতে চাঁদ ধরে দিলে , স্বপ্নহীন রুক্ষতার রাতে।
একমুঠো ভাত তুমি শেফালীর নম্র শুভ্রতায় আশ্বিনে কাশের বনে গভীর কটাক্ষ সনে
নি:শব্দে ছড়িয়ে ছিলে রাত ভোর বৃষ্টির আশায়!
বারে বারে অঙ্গীকারে, আত্মহারা করে ছিলে কুহক মায়ায়।
ছায়াঘন সুবাহুর নিবিড় ভাষায়, মায়াময় মোহময় ত্রিকাল সন্ধ্যায়।
তোমার সে ভ্রুধনুর ব্যাপ্ত নীলিমায়, উদভ্রান্ত হয়েছি কত গভীর নিশায়।
কখনো বা শ্রমক্লান্ত দিবসের শেষে তোমার আসঙ্গ লিপ্সা করি অবশেষে,
অমৃতের সপ্তসিন্ধু পারে, সুধার আশায়।
দিবস হারিয়ে গেলে নীলনবঘনে, তৃষিত অন্তরে,
আকন্ঠ করেছি পান প্রেম, পূর্ণ করে অঞ্জলি ভরে,
তোমার সে সুধাসিন্ধু অমৃতের বৃন্ত পয়োধরে,জীবনের অসীম মায়ায়।
সেই তুমি পৃথিবীর প্রতিবেশী মেয়ে, কী যাদুতে দেবী হয়ে যেতে।
হাটে মাঠে বাটে কভু নিবিড় সন্ধ্যায়, আমার পূজার ফুল স্নিগ্ধ নম্রতায়
আসন বিছিয়ে নিত তোমার পায়েতে, পরম শ্রদ্ধায়।
তবুও তোমার প্রেম স্তব্ধ হয়ে যায় কোনো এক অনিবার্য মায়ার খেলায়!
চন্দনের পত্রলেখা স্মৃতি হয়ে রয়ে যায় অমৃতের শিহরিত বৃন্ত পয়োধরে।
বিসর্জনের বাদ্যি বাজে তৃষিত অন্তরে।
বুভুক্ষু হৃদয় তাই আজও থাকে প্রতীক্ষায় যুগে যুগান্তরে।
বুক ভরা আশা আর ভালোবাসা নিয়ে মনে মনে বলে,
ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ, ঠাকুর যাবে বিসর্জন,
আমাদের সকলের বিসর্জন হয়, কোনো এক গভীর নিদ্রায়
জীবনের সন্ধিক্ষণে,
মহাকাল ডেকে বলে আয় কাছে আয়।।