Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মেদিনীপুরের ভীম পূজা || Manisha Palmal

মেদিনীপুরের ভীম পূজা || Manisha Palmal

লোককাব্যে ভীম চাষী রূপে চিহ্নি ত।মেদিনীপুর জেলাতেই এই ভীমপূজার আধিক্য দেখা যায়।মাঘ মাসের শুক্লা একাদশী ভীমএকাদশী নামে পরিচিত। এই দিন ই ভীমপূজাহয় ।রামেশ্বর ভট্টাচার্যের ”শিবায়নে ” ও ভীম কে চাষীরূপে বর্ণনা করা হয়েছে…..”চন্দ্রচূড় চলে বৃষ এ চন্ডী রণ চায়া।
পিছু ভীম চলিল চাষের সজ্জা লয়া॥”

বাগদী,চাষী সম্প্রদায়ের মানুষ রা সাধারণত এই পূজা করতেন । এখন সর্ব সম্প্রদায়ের মানুষ রা ও এই পূজায় অংশ নেন । বছরে একবার মাত্রই এ পুজো হয়।কোন ক্ষেত্রেই নিত্য পূজার ব্যবস্হা নেই।বর্তমানে .ব্রাম্হণ দিয়ে পুজো করানো হয়।
কিংবদন্তি এই যে কুন্তি মাঘ মাসের শুক্লা একাদশী পালন .করবেন । প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারনে তিনি পুকুরে স্নান করতে পারছিলেন না । ভীম পাশের খেতে লাঙল দিয়ে জমি চাষ করছিলেন । অবস্হা দেখে তিনি লাঙলের ফাল গরম করে পুকুরের জলে ডুবিয়ে দিলেন । জল গরম হয়ে গেল ।কুন্তি স্নান করে একাদশী পালন করলেন । সেই থেকে এটি ভীম একাদশী নামে পরিচিত। শিবায়নে উল্লেখ আছে শিবের সহকারী হিসেবে তিনি লাঙল ধরে জমি কর্ষণ করেন । মাঘ মাসের শুক্লা একাদশী র দিন ভীম প্রথম চাষাবাদ শুরু ক‌রে ছিলেন তাই এটি ভীম একাদশী॥

লোক গবেষক দের মতে মেদিনীপূরে ভীমের পূজার প্রচলনে র কারণ গড়বেতার গনগনি র ডাঙায় বক রাক্ষসের সাথে ভীমের যুদ্ধ হয়েছিলো বলে কথিত।খড়্গ পুরের কাছে হিড়িম্বাডাঙায় অনার্য কন্যা হিড়িম্বার সাথে ভীমের বিয়ে হয়েছিলো বলে কিংবদন্তি । মেদিনী পুরের গোপগড় বিরাটরাজার গোধনে র স্মৃতি .বহন করে।মেদিনীপুর..খড়্গ পুরঅঞ্চলে অজ্ঞাত বাসের সময় পাণ্ডব রা বাস করতো বলে লোকবিশ্বাস প্রচলিত আছে।

মহাভারতের দ্বিতীয় পাণ্ডবের আদলে ভীমদেবতার মূর্তি গড়া হয়। পেশীবহুল ১০/১২ফুট উঁচু মূর্তি…মাথায় ঝাকড়া চুল ,সযত্নলালিত গোঁফ, চওড়া কালো ঝুলপি।গাঢ় সবুজ ফতুয়া,চওড়া পাড় সাদা কাপড় পরনে , পায়ে নাগরা জুতো। ডান হাতে বিশালাকৃতি গদা।বড় বড় চোখ,কানে বালাকৃতি দুল।দুহাতে মোটা বালা। গায়ের রঙ লালচে হলুদ।প্রতি বছর মূর্তির আদল বদলানো হয়। পূজো শেষে ওই মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয় না ।
ঐ ভাবেই সারা বছর দাঁড়িয়ে থাকে এবং রোদ বৃষ্টি তে ক্ষয়ে ক্ষয়ে নষ্ট হয়। যেহেতু ভীম দাঁড়িয়ে ক্ষেত পাহারা দেন তাই ইনি .ক্ষেত্ররক্ষক….কৃষিসহায়ক বলে লোকবিশ্বাস
গোটা টাটকা রাঙাআলু বা গুড়ম আলু এব্ং ছোলা
ভীমঠাকুরের প্রিয় নৈবেদ্য।কিছু রাঙাআলু সেদ্ধ করেও দিতে হয়।এছাড়া চিড়ে , বাতাসা,ফল ,মিষ্টি ও ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়।
তমলুক এবং নন্দকুমারের ব্যবত্তারহাটের তাডাগ্যাডায় 300 বছরের প্রাচীন ভীম পূজাও মেলা হয়ে থাকে। প্রায় 22 ফুট উঁচু ভীমদেবের মূর্তি তৈরি করা হয়। 10 দিন ধরে মেলা চলে। পশ্চিম মেদিনীপুর হাওড়া 24 পরগনা সহ দূর-দূরান্তের অসংখ্য মানুষ আসেন এখানে। থালার মতো বড়-বড় বাতাসার মালা এবং আশা পুরনের জন্য টাকার মালাও ভীম দেবের গলায় পরানো হয়। এছাড়াও সোনা রুপা পিতলের গদা সহ অন্যান্যদ্রব্যও দেবের চরণে অর্পণ করা হয়।
। শক্তির কামনা , সুফসল ও মেয়েদের ব্রত উদযাপনের সুযোগ দানে র জন্য ই এই পুজো করা হয়ে থাকে।
ভীম প্রকৃত অর্থে শক্তির প্রতীক যা কৃষিতে উন্নতি করতে,ক্ষেত কে রক্ষা করতেপারেন । তাই এই পুজোর প্রচলন ॥

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *