অতীতের ছায়া ছায়া ছবি
ভেসে ওঠে হৃদয়ের পটে!
এ বিশ্ব এক নাট্যশালা!
কে কখন রাজা থেকে ভিলেন
বনে যায় বুঝিনে কেমনে!,
কে কখন রঙ বদলায়,
সংলাপে ও মিষ্টি ভাষণে
অভিনয়ে ভুলিয়ে দেয় সবার মন।
মসনদের মোহে আর ক্ষমতার লোভে
যুগে যুগে বয়ে চলেছে এক ঘৃণ্য রণ!
বিক্রমাদিত্যের বত্রিশ সিংহাসন,
হস্তিনাপুরের রাজ-সিংহাসন,
কিংবা, শাহজাহানের ময়ূর সিংহাসন,
ভাতৃঘাতী যুদ্ধ ডেকে আনে।
বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব
সিরাজের সিংহাসন ঘিরে
সেই একই ইতিহাস !
উর্দ্ধাকাশে ছায়াপথের দিকে
চেয়ে মনে পড়ে বিশ্বাসঘাতকদের
পুরানো সেই ইতিহাস!
সে অদৃশ্য ছায়াপথ ধরে একে একে রবার্টক্লাইভ,মীরজাফর, মীরণ,মীরকাশিম,
ঘষেটিবেগম, মীরমদন, জগৎশেঠ,
রায়দুর্লভ, উমিচাঁদের মত কতনা
মীরজাফরদের আগমন এ বাঙলায়!
কী করুণ তাদের পতনের ইতিহাস!
“পাপ ছাড়ে না বাপকে,–
একথাটাই সত্য হয়ে দেখা দেয়।
বিজয়ী রবার্ট ক্লাইভের আত্মহত্যা,
মীরজাফর কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত হয়ে
পুঁজ রক্ত ক্ষরণে গাত্রচর্ম খসে খসে
কী যন্ত্রণায় তার মৃত্যু ঘটে!
মীর কাসিম সিংহাসনচ্যুত হয়ে ,
পথের ভিখারি ,ঘষেটি বেগম,
যে মসনদের মোহে আদান প্রদান
করত সিরাজের গোপন খবর,
মীরজাফর পুত্র মীরণের চক্রান্তে
মেরেফেলা হয় নৌকাডুবিতে।
মীরণকেও গদিচ্যুত করা হয়।
এমনি সব স্বার্থ,ক্ষমতার লোভে
মোহান্ধদের পতনের কাহিনী ভরা
সে ইতিহাস!
নির্মম পরিণতি নন্দকুমারের ফাঁসি
আজও ভুলিনি বঙ্গবাসী।
সেই ট্রাডিশন বয়ে চলেছে সমানে।
জনতার প্রেক্ষাগৃহে ঈশ্বরের নামে
শপথ নিয়ে নন্দলালদের
একই অভিনয় আজও বিদ্যমান।
মীরজাফরের মৃত্যু নেই,
শুধু মীরজাফর বলিবা কেন,
তারই সঙ্গে ইংরেজরাও ফিরে
এসেছে নবরূপে!
তারাও জন্ম নিয়েছে নবভাবে
এ বাংলা তথা স্বাধীন ভারতের মাটিতে।