মিউনিসিপ্যালিটির ভাঙা-ট্রাকে শহরের সবকিছু,
আমাদের যাবতীয় শোভন খাদ্যের পরিণতি,
ড্রামের আবর্জনা, ড্রেনের হলুদ বমি, রোগীদের কাশ,
পচা-মুরগির রান, পাখা, কলার বাকল
প্রতিদিন খুব ভোরে তুলে দেবে কতিপয় নির্দিষ্ট মেথর।
আর নগরের সুখে-থাকা বনেদিবাসীরা বিছানায় শুয়ে শুয়ে
যখন আঙ্গুল দিয়ে চোখ থেকে টেনে আনে সোনালি কেতুর,
তখন অনেক দূরে, শহরের শেষ-ঢালু বেয়ে নেমে যায়
মেথরের গান, ভাঙ্গা মোটরের হর্ন।
একজন সূর্য ওঠায়, প্রিয়তম সূর্য প্রতিদিন,
অন্যজন প্রতি ভোরে গেঞ্জিহীন ননীর শরীরে
সযত্নে মালিশ করে শীতের রোদ্দুর;
এবং সন্ধ্যা এলেই আবর্জনা নিষ্কাশনে সারাদিন
ব্যবহৃত ট্রাক বৃদ্ধ গরুর মতো ঝিমোয় একাকী,
পথিপার্শ্বে, মানুষের চলাচল ছেড়ে দূরে, অসহায়।
হয়তো সে ভাবছে আবার কখন আগামীকাল
সূর্য ওঠার আগেই সেইসব নির্দিষ্ট মেথর এসে
নিয়ে যাবে তাকে, তার শূন্য পিঠে তুলে দেবে
ট্রেনে কাটা-পড়া কুকুরের ভুঁড়ি, ছাগলের শিঙ,
রক্তমাখানো তেনা, অন্ধকারের অবৈধ-মৃত-ভ্রুন,
পচা-বাসী ভাত, ফেন, চৌকোর কাঠ,
কিছু মাটি, কিছু জল…।
সে-সব জঞ্জাল বয়ে সেই ট্রাক যাবে দ্রুত
পুনর্বার শহর শেষের ঢালু গর্ত-ভূমিতে
যেখানে নির্মিত হবে একটি প্রাসাদ।
আবর্জনা পচে গিয়ে মূল্যবান ভিত্তিভূমি হলে
আবাসিক একটি এলাকা সেখানেও মাথা তুলে
কালো ড্রামে ছড়াবে থুতুকে।
মিউনিসিপ্যালিটির ভাঙা-ট্রাক তবুও বাজাবে হর্ন
তারস্বরে বিভিন্ন সকালে।