Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মায়াবী || Panchkari Dey » Page 4

মায়াবী || Panchkari Dey

এমন সময়ে একজন পাহারাওয়ালা বাহির হইতে রুদ্ধদ্বারে করাঘাত করিল। যোগেন্দ্রনাথ দ্বার উন্মুক্ত করিয়া দিলেন। পাহারাওয়ালা একখানি পত্র লইয়া যোগেন্দ্রনাথের হাতে দিল। যোগেন্দ্রনাথ তখন সেই পত্রখানি খুলিয়া পড়িতে লাগিলেন। পত্র পড়িবার সময়টুকুর মধ্যে তাঁহার মুখের ভাব ক্ষণে ক্ষণে শতপ্রকারে পরিবর্ত্তিত হইতে লাগিল। পাঠশেষে তিনি সেই পত্রখানি অরিন্দমের হাতে দিয়া বলিলেন, “দেখুন, অরিন্দমবাবু, কাণ্ডখানা দেখুন; সে যে-ই হ’ক্, সে বড় সহজ লোক নয়।”

“নতুবা কাহার এত সাহস, খুন করিয়া থানায় লাস পাঠাইয়া রঙ্গ করে?” বলিয়া অরিন্দম পত্রখানি পড়িতে লাগিলেন। পত্রখানি এইরূপ :

“যোগেন্দ্রবাবু,

“তুমি আমাকে জান, আমিও তোমাকে জানি। ইহাতে যদি আমাকে ধরিবার জন্য তুমি কোন সুবিধাই না করিয়া উঠিতে পার, তাহা হইলে পুলিসে চাকরি করা তোমার মতন একটি নিপুণ অর্বাচীনের কর্ম নহে। সিন্দুকের মধ্যে তুমি যে একটি বালিকার লাস দেখিতে পাইবে, সে আমারই হাতে এঁরূপ অবস্থায় মরিয়াছে, জানিবে। কে সেই বালিকা, কেন খুন হইল, কে আমি, আমিই বা কেন তাহাকে খুন করিলাম, ঐ সকলের একটিরও সন্ধান বোধ হয়, তুমি চিরজীবনেও করিয়া উঠিতে পারিবে না। আমি জানি, ইহার জন্য তুমি তোমার প্রিয়মিত্র অরিন্দমের সাহায্য লইবে; কিন্তু স্থির জানিয়ো, সাতটা অরিন্দমেও কিছুই হইবে না। বর্তমান বালিকাকে হিসাবে ধরিয়া আমার খুনের সংখ্যা আঠারো। কখন—কোথায়—কিভাবে থাকিয়া, আমি এইসব খুন নির্বিঘ্নে করিতেছি, সে পরিচয় তোমাকে দিবার কোন আবশ্যকতা দেখিতেছি না।”

“এই বর্ত্তমান সপ্তাহের মধ্যে যাহাতে আমার খুনের সংখ্যা পুরোপুরি কুড়িটি হয়, তাহা করিব আগে অরিন্দমকে খুন করিব, তাহার পর তোমায় খুন করিব। তাহাকে সাবধান করিয়া দিয়ো, আর তুমি নিজে সাবধান হইয়ো। তোমাদের মত দুই-একটিকে যদি না খুন করিতে পারিলাম, তাহা হইলে করিলাম কি?”

“ইচ্ছা ছিল, তুমি যখন আমার এই পত্রখানি পড়িবে, তখন তোমার মুখের ভাব কেমন হয় কি কর, তোমার সম্মুখে দাঁড়াইয়া সে মজাটা প্রত্যক্ষ করিব। কোন কারণবশতঃ সে ইচ্ছা আমাকে ত্যাগ করিতে হইল। “

“আর দুই-একদিনের জন্য কেন এই বালিকার হত্যাকারীকে সন্ধান করিয়া বাহির করিবার জন্য মিথ্যা চেষ্টা করিবে? দু-একদিন পরে একেবারে ‘অরিন্দম হন্তার’ সন্ধান করিতে বাহির হইতে হইবে।”

তোমার পরিচিত

শত্রু।

অরিন্দম পত্রখানি পড়িয়া যোগেন্দ্রনাথের হাতে ফিরাইয়া দিলেন; কোন কথা কহিলেন না।

যোগেন্দ্রনাথ বলিলেন, “অরিন্দমবাবু, আপনি আর কখন এমন ব্যাপার দেখিয়াছেন কি?”

অরি। না। লোকটি বড় সহজ নয়;যা’ই হ’ক্ এখন যাহাতে তাহাকে সহজ করিয়া আনিতে পারি, তাহাই করিতে হইবে। পত্রখানি পড়িয়া দেখিলাম যে, লোকটি আপনাকে চেনে, আপনিও তাহাকে চেনেন। এই চেনাচেনির ভিতরেও লোকটা এত কাণ্ড করিতেছে, ইহাই আশ্চর্য্য!

যো। আমার পরিচিতের মধ্যে কে এমন লোক, আমি ত ভাবিয়া কিছু ঠিক করিতে পারিতেছি না। আবার দুই-চারিদিনের মধ্যে আপনাকে খুন করিবে বলিতেছে। আপনার সঙ্গে এমন কাহার শত্রুতা?

অরি। কাহার শত্রুতা? অনেকেরই! যিনি চোর—তাঁহার, যিনি জালিয়াৎ—তাঁহার, যিনি খুনী—তাঁহার। এই তিন রকমের শত্রু লইয়া আমাকে সর্ব্বদা ঘর করিতে হয়। সে যাহাই হ’ক্, এখন এ লোকের মতন লোকটিকে খুঁজিয়া বাহির করিতে হইবে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *