Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মায়াবী || Panchkari Dey » Page 13

মায়াবী || Panchkari Dey

মোহিনী রেবতীকে সঙ্গে লইয়া দ্রুত বনমধ্যে প্রবেশ করিল। কিছুদূর আসিয়া উভয়ে এক নিবিড় ছায়াচ্ছন্ন বটবৃক্ষতলে দাঁড়াইল। সেখানে রেবতীর মুখ হইতে তাহার দুরবস্থার সকল কথা একে একে মোহিনী শুনিল। শুনিয়া মোহিনী বলিল, “এখন কি করিবে? কি করিয়া বাড়ী ফিরিয়া যাইবে? বেণীমাধবপুর এখান হইতে বিশ ক্রোশ, এতদূর পথ তুমি একাকী এখন যাইতে পারিবে না; তাহাতে বিপদও আছে, আর ধরা পড়িতে পার। এ হুগলী জেলায় তোমার কেহ আত্মীয় নাই, যেখানে আপাততঃ কিছুদিনের জন্য লুকাইয়া থাকিতে পার?”

রেবতী একটি দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলিয়া বলিল, “কে আছে? কই তেমন আত্মীয় কেহ নাই; তবে চন্দননগরে গোঁসাইপাড়ায় আমাদের এক গুরু আছেন, তাঁহার সহিত দেখা করিতে পারিলে তিনি আশ্রয় দিতে পারেন। “

মোহিনী। চন্দননগর এখান হইতে দুই ক্রোশেরও বেশী। আকাশ যেরূপ ঘোর করিয়া রহিয়াছে, এখনই বৃষ্টি আসিবে, পথে তোমার কষ্ট হইবে। যদি যাইতে সাহস কর, আমি তোমাকে পথ দেখাইয়া দিতে পারি। সে পথে গেলে তোমার কোন বিপদ্ হইবে না।

রেবতী। তুমি এখানে থাক কোথায়? নয় তোমার এখানে এ রাত্রিটার মত থাকিতাম।

মো। আমার থাকার নির্দ্দিষ্ট কোন স্থান নাই, যখন যেখানে যাই, সেইখানেই একটু থাকিবার সুবিধা করিয়া লই; এইরূপে বনে বনে দিনরাত ঘুরিয়া বেড়াই।

রে। তোমার কি কেউ নাই?

মো। আছে—স্বামী।

রে। তিনি তোমার খোঁজ রাখেন না?

মো। তাঁহার অনুগ্রহ।

রে। তিনি কোথায় থাকেন?

মো। সেই যে তিনি—যিনি তোমাকে আমার সতীন করিবার জন্য খুব সাধ্য সাধনা করছিলেন! রে। [ বিস্মিত হইয়া] তিনি? এমন স্বামী!

মো। [ ছুরি দেখাইয়া] এমন স্বামী বলিয়াই ত এই ছুরিখানা লইয়া ঘুরিতেছি। এ জন্মে ত তাঁহাকে পাইলাম না; পাইলাম না—অথচ কলঙ্ক কিনিলাম। ইহলোকে পাইলাম না বলিয়া পরলোকে তাঁহার আশা ত্যাগ করি কেন? একদিন—যেদিন পরলোক যাত্রার সময় আসিবে, তখন এই ছুরি তাঁহার হৃদয়-শোণিতে আর আমার হৃদয়-শোণিতে একটা অবিচ্ছেদ্য অক্ষয় মিলন করাইয়া দিবে। চল, এখন আমি তোমাকে পথ দেখাইয়া দিই। আমাকে এখনই ফিরিতে হইবে।

রে। তোমার কি হইবে? তিনি তোমার উপর যেরূপ রাগিয়াছেন, তাহাতে তোমার কি দশা হইবে কে জানে? আমার জন্য তুমি কেন বিপদে পড়িবে?

মো। আমার এ জীবনের উপর দিয়া আগে অনেক বিপদ্ গিয়েছে। এখন অনেকদিন হইতে খালি পড়িয়া আছে, সেইজন্য কেমন ফাঁকা ফাঁকা বোধ হয়, তুমি বিপদ্ ভালবাস না। কিন্তু আমি নিত্য নিত্য বিপদের সঙ্গে থাকিয়া বিপদকে কেমন যেন একটু ভালবাসিতে শিখিয়াছি। তাই আমি বিপদ ভালবাসি। তোমার বিপদটা আমি যদি নিই, তাতে আর তোমার দুঃখ কি? এখন এস, যতক্ষণ তোমাকে এখান হইতে না সরাইতে পারিতেছি—ততক্ষণ তোমার বিপটা আমি সম্পূর্ণ দখল করিতে পারিতেছি না।

মোহিনী রেবতীর হাত ধরিয়া হিড় হিড় করিয়া টানিয়া লইয়া চলিল।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25 26 27 28 29 30 31 32 33 34 35 36 37 38 39 40 41 42 43 44 45 46 47 48 49 50 51 52 53 54 55 56 57 58 59 60 61 62 63 64 65 66 67 68 69 70 71 72 73 74 75 76 77 78 79 80 81 82 83 84 85 86

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress