আকাশকে আকাশ বলেই চেনা যায়। পাহাড়কে
পাহাড় না বলে অন্য কিছু
বলবার কোনো মানে আমি খুঁজে পাই না, যদিও
নদীকে উপমা দিয়ে সাজানো তেমন
কঠিন ব্যাপার নয় কস্মিনকালেও তবু নদী
অবিকল নদী থেকে যায়।
কখনো-সখনো কোনো কোনো
মানুষকে ডুমুরের ফুল বলা হয়,
কিন্তু তাতে ডুমুর গাছের অভিধার
হেরফের হয় না কিছুই।
সিম্পাঞ্জিকে শিম্পাঞ্জি অথবা
বাঁদরকে বাঁদর হিসেবে যদি শনাক্ত করেন
কেউ তবে যথার্থই হবে। অরণ্যের ডোরাকাটা
বাঘ গর্জনা না করলেও
তাকে বাঘ বলা যাবে দ্বিধাহীন। মেনী বেড়ালকে
বনের বাঘের মাসি বলে জানি, অথচ বেড়াল
বেড়ালই সঠিক।
কিন্তু যত ফ্যাসাদ, ঝামেলা অদ্যাবধি
মানুষকে নিয়ে। সত্যি বলতে কি, মানুষ বিষয়ে
কোনো স্থির সিদ্ধান্তের ঘাটে
বিশ্রাম নেয়ার পথ জানা নেই। আজ যাকে তুমি
ভাজা মাছটাও উল্টে খেতে
জানে না এমন কেউ বলে জানো, কাল
সে ভীষণ ধড়িবাজ হয়ে দেখা দেবে অকস্মাৎ। রবিবার
যার হাত খুব সাদা প্রতিভাত হবে,
সোমবার তার হাতে মানুষের শোণিতের ছোপ
দেখে তুমি শিউরে উঠবে। আর বন্ধু যে কখন
শক্রর নিখুঁত ভূমিকায় নেমে যাবে
তার সঙ্গে তুমি অষ্টপ্রহর থেকেও ঘুণাক্ষরে
কখনো পাবে না টের। অন্যদের চায়ের আসরে
যে তোমাকে পাঠাবে হাবিয়া
দোজখে হাজারবার, সেই একই লোক তোমার টেবিলে
এসে বেদনার ভারে কেঁদে বেদানার
দানার মতোই লাল করে ফেলবে দু’চোখ তার। এরকম
জন্ম-অভিনেতা
খুঁজে মেলা ভার। কোনো কোনো
লোককে মানুষ নাকি হায়েনা বলবে, এ বিষয়ে
তোমাকে বেজায় ধন্দে থেকে যেতে হবে চিরকাল।