মা, ব্রহ্মাণ্ডজুড়ে যেন ওঁ! ধ্বনি…
দ্রুতস্পন্দ্য মীড়ে করুণাধারায়
শিশির ধোঁয়া জলে সৃষ্টির ছবি আঁকে-
এয়োতীর পদ্ম রাগে শাঁখা পলায় আঁচলের খুঁট,
মন্দাকিনীর দুধ সাদা স্রোতে পরিপুষ্ট ধরনী,
আকাশগঙ্গায় আলতা রাঙ্গা পথের সারথী,
চাঁদের ঘরে চরকা কাটা আশ্চর্য এই নারী-ই।
কালের রথচক্রে পুজোর গন্ধমাখা বাঁচার যন্ত্রী ‘মা’!
ঘূর্ণিময় তোড়ে নির্বিকার মাঝি ঠিকানা খুঁজে নেয়,
“উঠোন ভর্তি দুঃখ ও দুর্দিনের” জেগে ওঠা চড়,
মন্দ্রিত সুর….
চাঁদের কপালে চাঁদ টিপ দিয়ে যায়,
ঘুম চোখে কাজল আঁকে…..।।
তাঁর স্মৃতিজলে আমি ভাসি,
অস্থি মজ্জায় আমি বাঁচি।
আমার গোপন আকাশে কাঁকন পড়া দুটো হাত
পাথরেও তাজা ফুল ফোটায়,
ঘুমন্ত মুখে চুম্বনে এঁকে দেয়
একরাশ অনির্বচনীয় সুখে,
হঠাৎ ভূমিকম্পে দুলে ওঠে একটা গোটা পৃথিবী,
সাজানো ঘরের ভিতটায়
আছড়ে পড়ে আর্তনাদের ঢেউ…।
“নিরালায় কী সবুজ ঘুমায়
এবং শোনো শ্মশানে সানাই”,
যা কিছু ছিল উষ্ণতার তাপ, প্রিয় রোদ,
কথাবার্তা, হাঁটাচলা আরো কত টুকরো
বাকি রয়ে গেল….
সুখের খড় বিচ্ছেদের নীল পাখির ডানায়,
উড়ে গেছে তামাটে দিগন্তের সীমানা ছাড়িয়ে
কোন এক নির্জন অজানা সমুদ্র তটে-
গাঢ় সবুজ আঁধারের পাতায় ঢাকা দুটো চোখ,
যাবজ্জীবনের কান্নার ক্ষুধা লেখা আছে ওতে।
মৃত অন্ধকারে বিচ্ছেদের নীল স্বপ্নের পাখিটাকে-
আঁধারের প্রতিটি সুরঙ্গে খুঁজে মরি রাতদিন
আর কত পথ বাকি….
ক্লান্ত সময়ের বিরুদ্ধতা ঠেলে পৌঁছোতে চাই,
ছুঁয়ে যাই সূর্যের ম্লান আলো ভেদ করে —
তোমার জরায়ুর প্রতিটি রক্তকণিকার বন্ধন ।