মা ও খোকা
বললো খোকা মায়ের কাছে এসে
তোমায় নিয়ে যাবো অনেকককক দূরে
ছুটবে ঘোড়া তেপান্তরের মাঠে
বসবে তুমি আমায় জাপটে ধরে
বলবো আমি ভয় পেয়োনা না মাগো
খোকা তোমার আছে তোমার সাথে
চোখের জলে ভাসছে যে আজ মা
খোকা যে তার আর তো এলো না
হটাৎ সেদিন বিকেল থেকে জ্বরে
বেহুস খোকা বকছে জ্বরের ঘোরে
বদ্যি এসে দেখলো টিপে নাড়ি
এ যে দেখি, ভীষণ বাড়াবাড়ি
পথ্য আমি দিচ্ছি বটে মাগো
এর চেয়ে বেশী বলতে না আর পারি
পারো যদি সদর খানায় গিয়ে
সাহেব ডাক্তার আনো খবর দিয়ে
বলছি তবে আর করো না দেরী
নইলে যেনো বিপদ হবে ভারি
চোখের জলে ভাসছে খোকার মা
ঘরে যে তার নেই তো কানাকড়ি
খোকার বাপ হতাশ দুটি চোখে
চেয়ে আছে শুধুই খোকার দিকে
অনেক বাদে সুধায় খোকার মা
আর কি তবে উপায় হলো না
খানিক পরে বললো খোকার বাপ
গরীব হওয়া মস্ত অভিশাপ
বলছো যখন যাচ্ছি আমি বটে
কিন্তু তাতে কাজ কী আদৌ হবে
বাইরে তখন অনেকটা বেশ রাত
খোকার বাপের নেই কোনো সংবাদ
এদিকে যে রাত্রি বাড়ে যতোই
ছোট্ট খোকা মূর্ঝে পড়ে ততোই
একলা ঘরে মা যে খোকার জেগে
অনেক আশায় একলাটি বুক বেঁধে
সদর থেকে আনবে খোকার বাপ
ডিগ্রিধারী মস্ত কবিরাজ
এদিক ওদিক ছুটছে খোকার বাপ
সদর খানার যত্ত কবিরাজ
মূল্য ছাড়া আসবে না কেউ জানিয়ে দিল সাফ
হঠাৎ আকাশ ঢাকলো কালো মেঘে
মা যে খোকার তবুও আছে জেগে
আধাঁর শেষে কাটলো যখন রাতি
ছোট্ট খোকার নিভলো জীবন বাতি
বাইরে যখন প্রথম ভোরের আলো
খোকার ঘরে অমানিশার কালো।