Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » মন্দ কপাল || Samarpita Raha

মন্দ কপাল || Samarpita Raha

অনুর ছোটবোনের বিয়ে আজ।অনু এক প্রাইভেট কোম্পানির স্টেনোগ্রাফার—সকাল আটটায় অফিস যায় ফেরে রাত এগারোটা—অফিসের পরে পাড়ায় দুটো টিউশনি করে বাড়ি ফেরে।
বাবা নেই ভাই ও বোন ছোট–যখন অনুপমা ওরফে অনু কলেজের বি এ ফাইনাল ইয়ার বাবা হঠাৎ অফিসে স্ট্রোক হয়ে মারা যান।
ভাই উচ্চমাধ্যমিক দিয়ে কলেজে সবে ভর্তি হয়েছে—বাবার চাকরিটা ভাইকে দেওয়া হয়।
অনু ভেবেছিল অনু করবে—মা বললেন
তুইতো শ্বশুরবাড়ি যাবি—তখন টাকা না পাঠাস।
অনু বলে ভায়ের পড়াশোনা নষ্ট হবে—মা বলেছিল চাকরির জন্য পড়াশোনা —তাহলে পেয়ে যাচ্ছে যখন তোর অনু পড়াশুনা নিয়ে মাথা ঘামাতে হবেনা।
আরে মা প্রোমোশনের জন্য শিক্ষার দরকার—ভাই বলে দিদি চিন্তা করিস না প্রাইভেটে পরীক্ষা দেব—এই আঠারো বছর বয়সে সংসারের বোঝা বইবি।
প্রথম মাসের মাহিনা থেকে হাজার টাকা দেয়—বাদবাকি টাকা পড়াশোনা,জামা প‍্যান্ট লাগবে—দিদিতো টিউশনি করে ,দিদিকে দিতে বলো।
মা ছেলে অন্ত প্রাণ—পরের মাসে তাই
টাকা দেই ছেলে। সারাদিন বসে বসে অফিস করে মোটা হয়ে যাচ্ছে—তাই বাবু জিমে ভর্তি হবে। তার প্রচুর খরচ।
বাবা মারা যাবার পর অফিস থেকে তিন লাখ টাকা পায়—ওই তুলে তুলে খাওয়া হচ্ছিল—-মা কোনোদিন জিজ্ঞেস করেনি বাবু টাকাগলো নষ্ট করিস না ।
দিদিদের বিয়ে দিতে হবে—কে কার কথা শোনে —নিজেই বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি ঘর জামাই হয়।
অনু অনেক কষ্টে এই স্টেনোর চাকরি ও টিউশনি করে সংসার চালাই–অনুর বয়ফ্রেন্ড সাগর.. ভালো প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরি করে।
অনু বলে তুমি বোনকে কমার্সের বিষয়টি দেখিয়ে দেবে—মাস্টার দেবার ক্ষমতা নেই।সাগর যখন পারত বোনকে দেখিয়ে দিত।বোন ভালো রেজাল্ট করে এম কমে ভর্তি হয়।
সাগর তখনো বোন নিরুপমা ওরফে নিরুকে পড়াশোনার জন্য সাহায্য করত।—অনেক বই ও কিনে দিত—নিরুকে বলত বলোনা দিদিকে—আমি যে বই কিনে দিই–।
সাগর ও অনুর একসাথে বেড়াতে আর যাওয়া হয়না–অনুকে সাগর বলে সামনের কোনও দিন দেখে বিয়ে করে নিই।
অনু বলে বোনটা চাকরি
পেলেই– বিয়ের কথা ভাবব— সাগর বলে এরপর বলবে বোনের বিয়ে হোক,তারপর বলবে মাকে কে দেখবে??

ঐ ঋত্বিক ঘটকের সিনেমা মেঘে ঢাকা তারার মতো বলবে তুমি যখন বিয়ে করছ না ,নিরুকে বিয়ে করি।
অনুর মুখে খুশি ভাব উড়ে গিয়ে বিবর্ণ ফ‍্যাকাশে হয়ে গেছিল- -এক ঝাঁক প্রজাপতি অনুর গায়ে না বসে সব কটা উড়ে গেল।সাগর বলে অনু কিছু মনে করলে ,তোমাকে এমন দুখী দেখতে একদম ভালো লাগেনা।সাগর বলে এমনি মজা করেছি—
এরপর বোন চাকরি পেলে বিয়ে ঠিক হয়।আজ গোধূলি লগ্নে বিয়ে নিরুপমার—
অনুপমা সুন্দর করে সেজেছে—এরপর দিন ক্ষণ দেখে সাগরের সাথে অনুর বিয়ে হবে—
সাগর বলে শোনো এবার আবার বলে
বসোনা মার বিয়ে দিয়ে বিয়ে করব।
মা এই রসিকতা শুনতে পেয়ে বলে -হ‍্যাঁরে সাগর তোর চেনাশুনা কেউ আছে?
কি চেনাশুনা মাসীমা??
এই আমার বিয়ের পাত্র।
সাগর লজ্জায় লাল হয়ে যায়।
মাসীমা বলেন আমার ঘাটে যাওয়ার সময় হয়েছে।আর ওখানে মেসোমশাই অপেক্ষা করছ।

খবর এল বরের গাড়ি দুর্ঘটনা হয়েছে লরির
সাথে।
বর তৎক্ষণাৎ শেষ।—বোন লগ্নভ্রষ্টা হবে ,মা অনুকে বলে তুই বিয়ে করলে আমাকে কে দেখবে??হাতের কাছে সাগর আছে,ওর সাথেই নিরুকে বিয়ে দে।ওদের দুজনকে ভালো মানায়।
সুখের প্রজাপতি এক নিমেষে উড়ে গেল—-ঐ শুনতে পাচ্ছেন সানাই এর করুণ সুর “সাগর /নিরুপমা “।”সাগর আমার হয়ে ও আর হলোনা”
সাগর লগ্নভ্রষ্টার হাত থেকে নিরুকে রক্ষা করে।
অনুপমা বোনের বাসরঘরে শুনতে পাচ্ছে হাসি তামাশা।মনে আশংকা ছিল —সাগর মানাতে পারবে কিনা??
হঠাৎ কানে এল বোনের কথা—সাগরদা তুমি কিন্তু দিদির সাথে লাইন মেরোনা।
না না এত সুন্দরী বৌ পেয়ে বড় শালীর সাথে প্রেম করব।তাছাড়া অতীত নিয়ে আমি ঘাটাঘাটি করিনা।দরজার বাইরে চোখ মোছে অনুপমা।মা দেখতে পেয়ে বলে বোনের সংসারে নজর দিসনা।
ছিঃ বড়দিদি হয়ে আড়ি পাতছিস!!!
সৎ বোনতো তাই নজর দিচ্ছিস।নেহাত তোর বাবাকে কথা দিয়েছিলাম তুই আমার সতীনের মেয়ে তাই কোনদিন জানাই নি তোকে।
আঘাতের পর আঘাত,অনুপমা নিতে পারছিল না।
পরদিন ভোরে জামাকাপড় নিয়ে অফিসে যায়।বসকে বলে শিলিগুড়ির অফিসে কাজ নেয়।
অনুপমা আজ সব দায়ভার থেকে মুক্ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress