Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ভুলি কেমনে || Manisha Palmal

ভুলি কেমনে || Manisha Palmal

ভুলি কেমনে

অবাক বিস্ময়ে পাল্টে যাওয়া কলেজ টাকে দেখছিল মৌমিতা। আজ 30 বছর পরও এসেছে পুরনো কলেজে মেয়েকে ভর্তি করতে। স্বামীর সেনাবাহিনীর চাকরি সূত্রে ওকে সারা ভারতে ঘুরতে হচ্ছে। এবার মেয়ের কলেজের দোহাই দিয়ে নিজেদের বাড়িতে থাকবে ঠিক করেছে। কলেজের তিনটে বছর অন্তত এখানেই থাকবে স্বামীর যখন কলাইকুন্ডা তে পোস্টিং। অবাক হয়ে কলেজটার পরিবর্তিত রূপ দেখছে আর নিজেদের সময় কার ন্যাড়া গাছপালা হীন কলেজ টার কথা মনে পড়ছে। মেন গেটের পাশের সে কুরচি গাছ টাই কেবল এক আছে। গেটটা বন্ধ । পাশে বিরাট তোরণ হয়েছে। রাজাবাজার মোড টাতে যেখানে বাস যাত্রী প্রতীক্ষালয় ছিল সেখানে একটা পার্ক করে বিরাট কবিগুরুর মূর্তি বসানো হয়েছে। জায়গাটার আমূল পরিবর্তন হয়ে গেছে।

আস্তে আস্তে লাইব্রেরী বিল্ডিং এ এসে দাঁড়ায় মৌ। তিন তালা বিল্ডিং টার আরো উইং বাড়ানো হয়েছে। সামনে বিরাট পাঁচতলা বিল্ডিং হয়েছে। ভিতরে চত্বরটা গাছে গাছে সবুজ। বাঁধানো বেদীতে ছাত্র-ছাত্রীদের ভীড। বিবেকানন্দ হলের পাশে তিন তলা বিল্ডিং উঠেছে। মাঠের মাঝে একপাশে সুন্দর বাগান হয়েছে।তারের বেড়ার পাশে বাহারি টবের সারি। ধীর পায়ে লাইব্রেরী উইঙ্গের করিডোরে এসে দাঁড়ায় মৌ। এখনো করিডোরটা আগের মতোই নির্জন। এই করিডোরটা ছিল কলেজের প্রণয়ী যুগলদের দেখা করার জায়গা। পুরো উইঙ্গটা জুড়েই কপোত-কপোতিদের গুটুর গুটুর চলতেই থাকতো। মৌ এর মন ভেসে চলে সেই আশির দশকে- ক্লাস কেটে এখানে এসেই তো অপেক্ষা করতো রানার জন্য- ফিজিকস ডিপার্টমেন্টের সবচেয়ে উজ্জ্বল ছেলেটার জন্য! রানার বাড়ী এখানেই- বিধান নগরে! মেদিনীপুরের নামী উকিল পরিবার ওদের। দাদু জেঠু বাবা সবাই ওকালতি র সঙ্গে যুক্ত। রানা খুব ভাল ছাত্র উচ্চমাধ্যমিকে জেলায় প্রথম। ইচ্ছে সাহা ইনস্টিটিউট এ পড়বে। ইদানিং কেমন যেন ছন্নছাড়া হয়ে পড়ছে। এক বিশেষ রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হয়েছে- এটাই মৌ কে খুব বিরক্ত করছে। তাই কিছু কথা বলতেই আসা। দূর থেকে রানাকে আসতে দেখে করিডরের শেষ প্রান্তে গিয়ে দাঁড়ায়ও। রানা ওকে জিজ্ঞেস করে- জরুরী তলব কেন মহারানীর? মৌ সোজাসোজি প্রশ্ন করে- হঠাৎ রাজনীতি নিয়ে মাতামাতি কেন? বেশতো ছিলি গানের জগতে! হঠাৎ এ পাগলামি ? এক কথা দুই কথা হতে হতে বিরাট তর্ক বিতর্ক। শেষে- “যা আজ থেকে আমাদের পথ আলাদা। তুই তোর মত ,আমি আমার মত- !”
হতভম্ব মৌ ভাবতেও পারে না এটা হতে পারে- কিন্তু তাই হলো- নির্জন করিডোর সাক্ষী থাকলো একটা অসমাপ্ত স্বপ্নের- ঝাপসা হয়ে উঠল মৌয়ের দুচোখ- মেয়ের ডাকে বাস্তবে ফেরে মৌ- সজল চোখে লাইব্রেরীর করিডোর ছেড়ে আস্তে আস্তে নেমে আসে- পিছন ফিরে আরো একবার দেখে তাদের অতীতের স্বপ্ন বাগিচা কে- লাইব্রেরীর নির্জন করিডোর কে- তারপর দ্রুত পায়ে ফিরে চলে বর্তমানের যাপন বৃত্তে- কালচক্র ঘুরে চলে আপন খেয়ালে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *