১৯৬১ সালের ২১শে মে,
ভাষা আন্দোলনে শহীদ হলো কিশোরী কমলা ভট্টাচার্য।
মাত্র ষোলো বছর বয়সে তার আত্ম বলিদান।
মাতৃভাষা বাংলাকে আসামে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে ।
আসামের বরাক উপত্যকার কাছাড় জেলার বঙ্গাঁইগাঁও, করিমগঞ্জ, শিলচরে প্রচুর বাঙালির বাস,
আসামের স্থানীয়দের বাঙালিদের প্রতি বিদ্বেষ ভাব, “বাঙালি খেদা” স্লোগানে বাঙালিরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করত।
এরই মধ্যে তৎকালীন আসাম সরকার বিমলা প্রসাদ চালিহা অসমিয়া ভাষাকে সরকারি ভাষা ঘোষনা করে জবরদস্তি বাঙালিদের উপর চাপিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নেয়।
প্রবর্তন করে “আসাম ল্যাঙ্গুয়েজ এ্যক্ট,১৯৬০ “।
প্রতিবাদে বরাকে বাঙালিরা সোচ্চার হয়।তারা শিলচর স্টেশনে জমায়েত হয়ে রেল অবরোধ করে।
স্লোগান দেয় “জান দেব তবু জবান দেব না”, মাতৃভাষা জিন্দাবাদ, বাংলাভাষা জিন্দাবাদ।
শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ চলছিল। হঠাৎ দুপুরের পর পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তে শুরু করলে জনতা ছত্রভঙ্গ হয়ে যে যেদিকে পারে ছুটতে থাকে।
কমলা পালাতে গিয়ে দেখে বোন মঙ্গলা আহত।
দৌড়ে যায় সাহায্য করতে। ইতিমধ্যে পুলিশ গুলি চালালে গুলি কমলার একটা চোখ ভেদ করে চলে যায়।
লুটিয়ে পড়ে কমলা। মুহূর্তে শিলচর স্টেশনে রক্তের বন্যা বয়ে যায়।
আরো দশজন যুবকও শহীদ হয়। আহতদের সঙ্গে কমলাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
সেদিনের বাংলাভাষা আন্দোলন সফলতা পায় কমলা ভট্টাচার্য সহ এগারো জন শহীদের আত্ম বলিদানে।
আসাম সরকার বাধ্য হয় বাংলাভাষাকে সরকারি ভাষার অন্তর্ভুক্ত করতে।
কমলা ভট্টাচার্য পৃথিবীর ইতিহাসে মাতৃভাষার অধিকারের সংগ্ৰামে প্রথম নারী শহীদ হিসেবে অমরত্ব লাভ করে।