Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ভাগ্যের পরিহাস || Suchandra Basu

ভাগ্যের পরিহাস || Suchandra Basu

ভাগ্যের পরিহাস

দীপক চাষ করেই সাধ্যমত তার সংসার গড়েছিলেন। তাদের টানাপোড়েনের সংসারে অভাব নিয়মিত হলেও ঠিকঠাক চলেই যাচ্ছিল। সে সাধ্যমত দুই সন্তানকে মানুষ করার চেষ্টা করেন। এখন তার, দুই ছেলে প্রতিষ্ঠিত। দীপক ও দীপা দম্পতির দুই সন্তানের মধ্যে গোবিন পুলিশে কর্মরত। রবিন ইজি বাইক চালিয়ে জীবন ধারণ করে। কিন্তু জীবনের নির্মম পরিহাসে অনেক সময় এই ‘মানুষ’ হওয়া সন্তানের আচরণও অমানবিক হয়ে উঠে। আজ সংসারে মা যেন তাদের বোঝা। একজন মায়ের শ্রেষ্ঠ অর্জন তার সন্তান। সারাজীবনের সমস্ত প্রাপ্তি আর শ্রম দিয়ে মা তার সন্তানদের মানুষ করেন। দীপক হঠাৎ পথ দুর্ঘটনায় মারা গেলে দীপার শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। ছেলেরা জমি জায়গা সব বেচে নিজেরা টাকা ভাগ করে নিয়ে নেয়। বৃদ্ধার বয়স হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে হাঁটতে পর্যন্ত পারেন না। ছেলেরা নিজের সংসারে মাকে রাখতে চায় না তাই ভিক্ষার ঝুলি হাতে পথে পথে ঘুরে বেড়ায়। একদিন ভিক্ষা করতে গিয়ে পড়ে কোমরের হাড় ভেঙ্গে যায়। ছেলেরা খবর পেলেও কেউ দায়িত্ব নিতে আসে না। সেই থেকে শহরে একটি খুপরি ঘরে বিনা চিকিৎসায় অর্ধাহারে বেঁচে আছেন। নিঃস্ব, অসহায়, মূক।

একদিন দীপার ইজি বাইক চালক ছেলে রবিন মাকে দেখতে এসে তার সাধ্য মত মাকে চিকিৎসা দেবার চেষ্টার করে কিন্তু খরচ তার আয়ের সীমার মধ্যে আবদ্ধ না হওয়ায় দায়িত্ব কিছু এড়িয়ে যায়। তাদের সহায় সম্বলহীন বৃদ্ধা মা আজ বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু পথযাত্রী। তার একার পক্ষে মায়ের চিকিৎসার খরচ চালানো খুবই কষ্টসাধ্য। দাদা পুলিশ অফিসার, স্ত্রী সন্তান নিয়ে বিলাসিতায় থাকে। মায়ের কোন খোঁজ খবর নেয় না।’তবে কি ছেলের প্রতি মায়ের টান এতটাই কম। মাকে একবারও তার মনে পড়ে না।মায়ের প্রেরণাতেই তো আজ তারা প্রতিষ্ঠিত।ভাগ্য করে দুই পুত্র সন্তান পেয়েও তাদের মান হুঁশ সমাজের কলঙ্ক।

পরিহাসের বিষয়, সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করেও এই মাকে আজ জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে ভিক্ষা করে। বড়ছেলে পুলিশ কর্মকর্তা,অথচ সেই মাকেই কিনা জীবন বাঁচাতে ঘুরতে হয় মানুষের দ্বারে দ্বারে। দিনে এক বেলাও ঠিকমতো ভাত ভাগ্যে জোটে না!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress